ভারতের একমাত্র রাষ্ট্রনায়ক নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। তাঁর মৃত্যুরহস্যের কিনারা আজও হয়নি। কেউ বলেন তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় তিনি প্রাণ হারিয়েছিলেন। আবার কেউ বলেন, লখনউতে তিনি নাকি গুমনামী বাবা’র ছদ্মবেশ ধরে স্বাধীনতার পরেও বহু বছর কাটিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুরহস্য উন্মোচনে একাধিক কমিশন গঠন করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। তবু বিতর্ক থামেনি।
আরও পড়ুন, কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধের কারণে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রতিষ্ঠা
১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট সায়গন থেকে মাঞ্চুরিয়া যাচ্ছিলেন সুভাষ। তাইহোকুতে যাত্রীরা বিমানের ইঞ্জিন থেকে একটি বিকট শব্দ শুনতে পান। রানওয়ের টারম্যাক থেকে ইঞ্জিনিয়াররা বিমান থেকে কিছু পড়ে যেতে দেখেন। পড়ন্ত বস্তু ছিল পোর্টসাইড ইঞ্জিন অথবা এর একটি অংশ এবং প্রোপেলার। বিমানটি দ্রুত ডান দিকে ঝাঁকুনি দিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তাতে আগুনও লেগে যায়। বিমানের ভিতরে পাইলট, সহকারী পাইলট এবং জাপানি কোয়ান্তুং সেনাবাহিনীর ভাইস চিফ অফ স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুনামাসা শিদেই নিহত হন। সুভাষচন্দ্র বসুর সহচর হাবিবুর রহমান কিছু সময়ের জন্য অচেতন হয়ে যান এবং বসু চেতনা না হারালেও তাঁর দেহ আগুনে ঝলসে যায়। রহমান চেতনা ফিরে পাওয়ার পর পিছনের দরজা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তারপর তাঁরা আগুনের মধ্য দিয়েই দৌড়ে সামনে দিয়ে বেরনোর সিদ্ধান্ত নেন। বিমানবন্দরের লোকজন এসে দেখেন, দুজন লোক তাঁদের দিকে ছুটে আসছেন, যাঁদের মধ্যে একজনের শরীরে আগুন জ্বলছে। তাঁদের মধ্যেই একজন ছিলেন সুভাষচন্দ্র। এমনটাই কেউ কেউ বলেন।
আরও পড়ুন, সংক্ষেপে জানুন সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী
দ্রুত সুভাষচন্দ্র এবং অন্য যাত্রীদের তাইহোকুর দক্ষিণে নানমোন সৈনিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে পৌঁছনোর পরেও সুভাষচন্দ্রের জ্ঞান ছিল। ডাক্তাররা চিকিতসা শুরু করেন। নেতাজি বিশেষজ্ঞদের একটি অংশের মতে, হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। আবার অন্য একটি অংশের মতে, বিমান দুর্ঘটনায় সুভাষের মৃত্যু হয়নি। যদিও ১৯৪৫ সালের ২৩ অগাস্ট একটি জাপানি সংবাদ সংস্থা তাঁর মৃত্যুর খবর ঘোষণা করা হয়।
আরও অন্য খবর দেখুন