Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeলাইফস্টাইলCancer & lack of awareness: ক্যানসারের সমস্য়া আরও জটিল করেছে সচেতনতার অভাব

Cancer & lack of awareness: ক্যানসারের সমস্য়া আরও জটিল করেছে সচেতনতার অভাব

Follow Us :

বিশ্বজুড়ে মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারন ক্যানসার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO)-র প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী  ২০২১-এ বিশ্বজুড়ে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছে ২ কোটি মানুষ। ক্যানসারে বলি হয়েছে ১ কোটি। ক্যানসারের চিকিৎসা থাকা সত্ত্বেও, এমনকি বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিরাময় ও প্রতিরোধের সুযোগ থাকলেও সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ভবিষ্যতে আরও বাড়তে চলেছে ক্যানসার আক্রান্তদের সংখ্যা।

এক্ষেত্রে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ক্যানসার আক্রান্তের সঠিক যত্নের। এখানে সামাজিক ও আর্থিক প্রেক্ষাপটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বলা বাহুল্য কম আয়ের দেশগুলি ও বেশি আয়ের দেশগুলির মধ্যে ক্যানসার চিকিৎসার ব্যবধান অনেকটাই বেশি। আর প্যান্ডেমিকের কারনে এই ব্যবধান আরও কয়েকগুণ বেড়েছে। এই সব বিষয় মাথায় রেখে এ বছর ওয়ার্ল্ড ক্যানসার ডে-র থিম(World Cancer Day theme)ক্লোজিং দ্য কেয়ার গ্যাপ(closing the care gap)।

তবে  ভারতে শুধুমাত্র আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটই নয় ক্যানসারের চিকিৎসায় সচেতনতার অভাব বড় বাঁধা জানাচ্ছেন বিশিষ্ট ক্যানসার সার্জেন ডা: যোগেশ্বর প্রসাদ শুক্লা। দেশে ক্যানসার চিকিৎসার অনেক সুযোগ সুবিধে থাকা সত্ত্বেও চূড়ান্ত সচেতনতার অভাব ও ভ্রান্ত ধারণার শিকার সাধারণ মানুষ। এই দুই কারনের পাশাপাশি পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে করোনাভাইরাস প্যান্ডেমিক।

ক্যানসার ধরা পড়ার পর থেকে সম্পূর্ণরূপে সেরে ওঠা, এর চারটি প্রধান স্তরে ভাগ করেছেন ডাঃ শুক্লা। প্রত্যেকটি স্তরেই কীভাবে সচেতনতার অভাব বিপদ ডেকে আনতে পারে তা নিয়ে কলকাতা টি ভি ডিজিট্যাল কে বিষদে জানালেন চিকিৎসক।

ক্যানসারের স্ক্রিনিং ও সচেতনতা (Cancer Screening and awareness)

অতিমারির পরিবেশ নিঃসন্দেহে ক্যানসারের সমস্যা আরও বাড়িয়েছে। তাই শরীরে যে কোনও ধরনের সমস্যা যদি তিন সপ্তাহের বেশি থাকে কিংবা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরও সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।

 ওরাল ক্যানসার ও লিম্ফনোডস (Tobacco & lymphnodes)

যারা তামাক বা গুটখা খান ওরাল ক্যানসারের প্রবণতা এদের মধ্যে বেশি থাকে তবে এছাড়াও অন্য অনেক কারনে ওরাল ক্যানসার  হতে পারে, তেমন গলায় ঢোক গিলতে কষ্ট বা অন্যান্য সমস্যা থাকলে তা নিয়ে সচেতন হোন এড়িয়ে যাবেন না। অনেক সময় নানা কারনে গলার সমস্যা হতে পারে তাই সমস্যা সপ্তাহখানেকের বেশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এক্ষেত্রে লিম্ফনোডসের সমস্যা হতে পারে।

ব্রেস্ট ও সার্ভাইকাল ক্যানসার (Breast cancer and cervical cancer)

মহিলাদের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যানসার ও সার্ভাইকাল ক্যানসারের সমস্যা আকছার দেখা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রথম দিকে শারীরিক অস্বস্তি তেমন গ্রাহ্য করা হয় না । আবার অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়লেও লজ্জার কারনে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা কাজ করে। এর ফলে চিকি ৎসায় দেরি হয়। পরিস্থিতি জটিল হয়।   তাই স্তনের আকার আয়তনে কোন পরিবর্তন হলে, নিপল ডিসার্জ হলে সচেতন হোন। একই ভাবে প্রত্যেক বার শারীরিক মিলনের পর রক্তক্ষরণ, ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ, ইন্টারমেনস্ট্রুয়াল ব্লিডিংয়ের ক্ষেত্রে সচেতন হোন। চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

ক্যানসারের অন্যান্য সমস্যা (other cancer symptoms)

একইভাবে কাশতে গেলে রক্ত বেরোলে, কিংবা বাওয়েলে রক্ত দেখলে, ক্রনিক কন্সটিপেশন থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তবে শুরু দিকে অন্যান্য রোগের সঙ্গে ক্যানসারে উপসর্গ আলাদা করে বোঝা সম্ভব না তাই ওপরের এই উপসর্গগুলো যে ক্যানসার হবে তা নয় তবে অন্য কোনো রোগ হলেও সব ক্ষেত্রেই উপসমের প্রয়োজন।

চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ  ও রোগ নিয়ে সচেতনতা (Consultation & awarenes)

নিঃসন্দেহে ক্যানসার খরচসাপেক্ষ তবে ক্যানসার হলেই মৃত্যু অবধারিত তা ধরে নেওয়া নেহাত বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। অনেক ক্ষেত্রে ব্যয়ের ক্ষমতা থাকলেও এই ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে চিকিৎসা করাতে চান না অনেকে। পরে অবস্থার অবনতি হলে সেই চিকিৎসার পথেই হাটেন। তাই ক্যানসার ধরা পড়ার পর অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে রোগ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা দরকার, অকারনে ভয়  না পেয়ে বরং সুস্থ থাকতে কীভাবে কি করনীয় সেই কাজ করা উচিত। এতে চিকিৎসকের পক্ষেও ক্যানসার আক্রান্তের চিকিৎসার গতি প্রকৃতি নির্ধারণের কাজ সহজ হয়।

সঠিক চিকিৎসা ও সচেতনতা (Proper treatment & awareness)

ক্যানসারের প্রকার বা ধরণ একবার ধরা পড়ে গেলে উচিত ক্যানসারের বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা। খানিকটা বেদ বাক্যের মতোই পরবর্তী সময়ে চিকিৎসা নিয়ে তাঁর কথা মেনে চলা। কারন ক্যানসারের মতো জটিল অসুখের ক্ষেত্রে  চিকিৎসায়  ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রয়োজন।  দেখা যায় রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপি মাঝ পথেই বন্ধ করে অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির দিকে ঝোঁকেন অনেকে । এর ফলে সঠিক চিকিৎসা বিঘ্নিত হয়। পরিস্থিতি হাতের বাইরে গিয়ে প্রাণনাশের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

পাশাপাশি ক্যানসারের চিকিৎসায় হোলিস্টিক অ্যাপ্রোচের(holistic approach) প্রয়োজন। তাই  কেমো (chemotherapy), রেডিয়েশন(radiation) এবং সার্জারি(surgery) সবটাই করা হয় এমন  জায়গায় চিকিৎসা করালে ভাল। এর ফলে চিকিৎসা ধাপে ধাপে এগোতে পারে।

ফলো আপ ও সচেতনতা (Follow up treatment & awareness)

ক্যানসার সেরে গেলও ফের একবার হানা দিতে পারে(relapse) এ কথা যেমন অধিকাংশ ক্ষেত্রে সত্যি তেমন অনেক ক্ষেত্রে এটা নাও হতে পারে। তাই ক্যানসার থেকে সেরে ওঠার পর ফলো আপ ট্রিটমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রিল্যাপসের প্রথম ধাপে অনেক সময় রোগী বুঝতেই পারবেন না কখন শরীরে চুপিসারে দ্বিতীয়বার হানা দিয়েছে ক্যানসার । তাই সেরে ওঠার পর নিয়মিত চেক আপ চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ, ক্লিনিকাল স্ক্রিনিংয়ের প্রয়োজন।

কোভিড ১৯ ও ক্যানসার (Covid 19 & cancer)

এই কোভিডকালে, এটা যেমন ঠিক ক্যানসার রোগীদের দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতার কারনে সংক্রমণের প্রবণতা বেশি। তেমন এটাও ঠিক কোভিড ভ্যাকসিন নেওয়ার পর সংক্রমণের সঙ্গে লড়ার ক্ষমতা বাড়বে। তাই  কোনওভাবে সংক্রমিত হলে সুস্থও হয়ে ওঠা সম্ভব। তাই কোভিড ১৯-এর ভয়ে ক্য়ানসারের চিকি ৎসায় বন্ধ করলে চলবে না।  এই সব ক্ষেত্রে চিকিৎসার ধারাবাহিকতা বজায় রাখল আখেরে উপকৃত হবে রোগী।

ক্যানসার ও খরচ (Cancer & Expenses)

অনেকেই ক্যানসারের চিকিৎসায় খরচের কথা ভেবেই দুশ্চিন্তায় ভোগেন। চিকিৎসায় গাফিলতি করেন।  তবে এক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্যের যে সব স্বাস্থ্য  প্রকল্প রয়েছে সেগুলো কাজে লাগানো যেতে পারে। এতে আর্থিক হয়রানি কিছুটা কমবে।

এছাড়া নিয়ন্ত্রিত  জীবনযাপন যেমন মদ্যপান বা ধুমপানের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখলে লাঙ্গস ক্যানসার বা লিভারের ক্যানসার ও এই সংক্রান্ত সমস্যা থেকে নিজেকে বাঁচানো সম্ভব। এ ছাড়া সার্ভাইকাল ক্যানসারের প্রতিরোধ HPV ভ্যাকসিন যদি অল্প বয়সেই নেওয়া যায় তা হলে এই ক্যানসারের হাত থেকে সহজেই বাঁচা সম্ভব।

(Dr Yogeshwar Prasad Shukla,  Consultant Cancer Surgeon, Formerly Bombay Hospital (Mumbai) AIIMS, (Bhopal) )

RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments