মুম্বাইয়ের ধারাভি বস্তির বাসিন্দা ১৪ বছরের মালীশা খারওয়া। একটা সময় বাড়িতে ছিল না জল, কারেন্ট। অভাব ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। সেই সব বাঁধাকে অতিক্রম করে লক্ষ্য অবিচল রেখে লড়াই চালিয়েছিলেন তিনি। অবশেষে সাফল্য দুয়ারে কড়া নাড়ল। বর্তমানে বিশ্বখ্যাত বিলাসবহুল বিউটি ব্র্যান্ড ‘ফরেস্ট এসেনশিয়ালস’-এর নতুন প্রচার, ‘দ্য যুবতী কালেকশন’-এর মুখ হিসেবে পরিচিত।
২০২০ সালে মুম্বইয়ে মালীশার খোঁজ পান হলিউড অভিনেতা ও চিত্র পরিচালক রবার্ট হফম্যান। পরে তিনি মালীশার জন্য একটি ‘গো ফান্ড মি’ পেজও তৈরি করে দিয়েছিলেন। বর্তমানে মালীশা একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হয়ে উঠেছে। ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ারের সংখ্যা ২ লক্ষ ২৫ হাজারেও বেশি। একাধিক বিজ্ঞাপনের মডেলিং করেছেন তিনি। দেখা গিয়েছে একটি শর্ট ফিল্মেও। এ বার সে কন্যাই প্রসাধনী পণ্যের মুখ।
তার পোস্টগুলিতে হ্যাশট্যাগ দেওয়া থাকে, ‘প্রিন্সেস ফ্রম স্লাম’, অর্থাৎ বস্তির রাজকুমারী। হফম্যানের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর থেকে একাধিক বড় সংস্থার হয়ে মডেলিং করেছে মালীশা। এর মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল আয়ুর্বেদ শিল্পের অন্যতম বড় নাম ‘ফরেস্ট এসেনশিয়ালস’।
গত এপ্রিলে মাসে 'ফরেস্ট এসেনশিয়ালস’ ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকে ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা মালেশার একটি ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়েছিল, 'এতদিনের স্বপ্ন চোখের সামনে বাস্তব হতে দেখে তার মুখ আনন্দে ভরে উঠেছে। মালীশার গল্প সবাইকে মনে করিয়ে দেয়, স্বপ্নও সত্যি হয়।'
ভিডিয়োটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে ৫ মিলিয়নের বেশি ভিউজ। লাইক এসেছে ৪ লক্ষ ৬ হাজারের বেশি। অনেকেই মালীশার এই সাফল্যের জন্য তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কেউ কেউ আবার লিখেছেন, আগে শ্যামবর্ণা মেয়েদের প্রসাধনী সংস্থার প্রচারের মুখ হিসেবে বিবেচনাই করা হত না। কিন্তু, এখন সময় বদলেছে, বদল এসেছে ভাবনাচিন্তাতেও।
এক সাক্ষাৎকারে মালীশা জানিয়েছে, মডেলিং করা তার স্বপ্ন হলেও সে সব সময় শিক্ষাকেই অগ্রাধিকার দেবে। বাকি সব কিছু তার পরে। ইতিমধ্যেই একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ‘লিভ ইউর ফেয়ারিটেল’-এ কাজ করা শুরু করেছে মালীশা।
মডেলিং ছোট থেকেই পছন্দ ছিল মালিশার। গত তিন বছর ধরে একটানা সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকা মালীশা মানুষের অনেক ভালোবাসা ও সমর্থন পেয়েছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি মডেলিংকেই পেশা করতে চান বস্তির এই রাজকন্যা।
শেয়ার করুন