কলকাতা বিভিন্ন ধরনের খাবারের জন্য বিখ্যাত গোটা বিশ্ব জুড়ে। ভোজনরসিক বাঙালি খুঁজে বার করেছে এই সব বিখ্যাত খাবারগুলি। আপনি যদি এই খাবার না খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার ষোলো আনাই বৃথা। কলকাতা সারা দুনিয়ায় বিভিন্ন ধরনের খাবার, সংস্কৃতির নিজস্ব ইতিহাস বহন করে। সুস্বাদু খাবার মেলে এমন শহরের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে কলকাতা।
ফুড ওয়েবসাইট ইটারে, বিশ্বের সেরা ১১ টি রন্ধন সম্পর্কিত গন্তব্যের তালিকা অনুসারে, ২০২৩ সালে প্রতিটি ভোজনরসিকের উচিত কলকাতা গিয়ে নানান ধরনের খাবার চেখে আসা। পাশাপাশি, বিশ্বের অন্যান্য শহরগুলি যা এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে তা হল- তামাকি ম্যাকারু (নিউজিল্যান্ড), কেমব্রিজ (ইংল্যান্ড), ডাকার (সেনেগাল), অ্যাশভিলে (উত্তর ক্যারোলিনা), আল বুকার্ক (নিউ মেক্সিকো), গুয়াতেমালা সিটি (গুয়াতেমালা), হলল্যান্ড (সুইডেন), সার্ডিনিয়া (ইতালি), মানিলা(ফিলি্পিন্স) এবং হো চি মিন সিটি (ভিয়েতনাম)।
ইটারের মতে, ২০২৩ সালে খাবারের সেরা গন্তব্য বাছাই করার সময়, শুধুমাত্র খাবারের কথা ভাবা হয়নি। খাবারের পাশাপাশি মানুষ, পরিবেশ, সংস্কৃতি এবং খাবারের ইতিহাস যা আমাদেরকে প্রলুব্ধ করতে বাধ্য করে। এখন যেহেতু আপনি জানেন যে কলকাতার বিশ্বের অন্যতম খাবারের গন্তব্য, আমরা পরামর্শ দিচ্ছি যে শহরে ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন এবং সুস্বাদু খাবার উপভোগ করুন। এই বিষয়ে আপনাকে সাহায্য করার জন্য আমরা কলকাতার বেশ কিছু জনপ্রিয় খাবারের তালিকা নিয়ে হাজির হয়েছি।
১. কাঠি রোলস
আমরা প্রতিটি শহরে একটি রোল সেন্টার খুঁজে পাই। কিন্তু জানেন, খাবারের শিখড় রয়েছে এই তিলোত্তমায়। রোলস (বিশেষ করে কাঠি রোল) ২০ শতকের গোড়ায় দিকে উদ্ভাবিত হয়েছিল। ঐতিহাসিকদের মনে, ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘নিজাম’স’ নামে পরিচিত একটি রেস্তরাঁ থেকে এই খাবারের উৎস। এই কাঠি রোল মূলত চিকেনের টুকরো দিয়ে তৈরি করা হয়।
২. তেলেভাজা
বাংলায় সন্ধ্যাবেলা তেলেভাজা ছাড়া যেন অসম্পূর্ণ মনে হয়। এটি মূলত আলু, পেঁয়াজ, বেগুন, মাছ, মুরগি এবং মটন বিভিন্ন জিনিস দিয়ে তৈরি বাঙালি স্টাইলের পকোড়া। সব থেকে ভালো দিক হল এটি কলকাতার সব কোণায় কোনায় পাওয়া যায়।
৩. দেশি চাইনিজ
কলকাতা হল ইন্দো-চীনা খাবারের জন্মস্থান। যা সারা দেশ উপভোগ করে। ভারতীয় চাইনিজ খাবারের ইতিহাস ১৭০০ সালের শেষের দিকে শহরে বসতি স্থাপনকারী হাক্কা চীনা ব্যাবসায়ীদের থেকে এসেছে।
৪. কলকাতা বিরিয়ানি
লখনউ অথবা অওধ থেকে বিতাড়িত নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ নির্বাসিত হয়ে আশ্রয় গাড়েন কলকাতার মেটিয়াবুরুজে। লখনুউ থেকে আসার সময় সঙ্গে করে এনেছিলেন সেখানকার পাচক। লখনউয়ের বিরিয়ানিতে আলু দেওয়ার চল ছিল না। কিন্তু অর্থকষ্টে ভোগা নবাবের জন্য মাংসের সঙ্গে আলু মিশিয়ে রান্না শুরু করেন ওই বাবুর্চি। যা নবাবের ভালো লাগে। সেই সময় থেকে নাম হয়, কলকাতা বিরিয়ানি।
৫. ফুচকা
কিছু স্ট্রিট ফুড না খেলে কলকাতার খাবারের বৃত্ত অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। যার নাম ফুচকা। ফুচকা দিয়ে শুরু করার চেয়ে আর কি বা ভালো হতে পারে? গোলগাপ্পা বা ফুচকা বলেই পরিচিত এটি। আলুমাখা বিভিন্ন মশলার সঙ্গে তেঁতুল জল দিয়ে খাওয়া হয় ফুচকা। এটি বেশ লোভনীয় খাবার।