কলকাতা: কথায় বলে বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। গরম হোক শীত বা বর্ষা একটু ছুটি পেলেই হল, ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিয়েই রওনা হন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। কিন্তু বাধ সাধে খরচ। পকেটের কথা ভেবেই বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান বাতিল করতে হয়। আর চিন্তা নেই, সেইসব ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এমন এক জায়গার সন্ধান দেব, যেখানে অল্প খরচে পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে দুদিনের ছুটিতে বেড়িয়ে আসা যায়।
দার্জিলিং থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে রয়েছে পাহাড় ঘেরা গ্রাম রঙ্গারুন। ছোট্ট এই জনপদ যেন পাহাড় কোলে ঘুমিয়ে আছে। দার্জিলিং থেকে যে রাস্তা জোড়বাংলোর দিকে যাচ্ছে, সেখান থেকে ডান দিকের রাস্তা ধরে ৪ কিলোমিটার গেলেই আপনি পৌঁছে যাবেন রঙ্গারুনে। এখানকার অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুহূর্তে আপনার যাবতীয় স্ট্রেস ভুলিয়ে দিতে পারে। আপনজনদের সঙ্গী করে আপনিও এখানকার অনিন্দ্যসুন্দর পরিবেশে মুগ্ধ হয়ে যাবেন।
প্রায় ৫০ হেক্টর জমি নিয়ে বিস্তৃত চা বাগান। তাই রঙ্গারুনের কোলে দাঁড়িয়ে যে দিকে চোখ যাবে, শুধুই দেখা মিলবে সবুজের। এক পশলা যদি বৃষ্টি হয়ে যায়, তখন আরও সতেজ দেখায় চা বাগান। চা বাগানের আঁকাবাঁকা পথ ধরে এখানে ঘুরে বেড়াতে মন্দ লাগবে না। আর তার সঙ্গে মিঠে রোদ বেশ আরামদায়ক। এখানে বসেই আপনার কেটে যাবে সারা দিনটা।
পাহাড় ঢালে এখানেই রয়েছে রঙ্গারুন টি এস্টেট। বলা বাহুল্য এই টি এস্টেটকে কেন্দ্র করেই রঙ্গারুন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ১৭৭৬ সালে বাংলার তৎকালীন রাজ্যপাল লর্ড অ্যাডেন অ্যাসলের হাত ধরে জনপ্রিয় হয় রঙ্গারুন। ইংল্যান্ডে যে দার্জিলিং টি জনপ্রিয় ছিল, তার মধ্যে বেশি কদর ছিল রঙ্গারুনের চায়ের।
অনেকেই পাহাড় ঢালের এই গ্রামকে মেঘের দেশ বলে ডাকেন। ভূপৃষ্ঠ থেকে এই গ্রামটির উচ্চতা প্রায় ৬ হাজার ফুট। এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে রংডং নদী। চাইলে এক আধ বার নদীর জলে পা ভেজাতেই পারেন। পাহাড় কোলের এই গ্রাম থেকেই দেখা মিলবে সুন্দরী কাঞ্চনজঙ্ঘারও। চোখ মেললেই মায়াবী কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য্য আপনাকে মোহিত করে তুলবে। এছাড়া সকালে বেড়িয়ে রঙ্গারুন থেকে ট্রেক করতে আসতে পারেন ডাউন হিল।
কীভাবে যাবেন? কলকাতার দিক থেকে গেলে ট্রেনে বা বাসে নিউ জলপাইগুড়ি বা এনজেপি স্টেশনে পৌঁছে যেতে হবে। সেখান থেকে সরাসরি গাড়ি ভাড়া করে নিন। গাড়িতেই পৌঁছে যাবেন রঙ্গারুন গ্রামে। শুধু সমস্যা হল, রঙ্গারুনে থাকার জায়গা সীমিত। হাতে গোনা ৪-৫টি হোমস্টে পেয়ে যাবেন। সেখানে থাকা-খাওয়া নিয়ে আপনার মাথাপিছু খরচ হতে পারে ১,৫০০ টাকা।
শেয়ার করুন