ভারতের মোট সম্পদের ৪০ শতাংশের বেশিই রয়েছে দেশের এক শতাংশ ধনকুবেরদের (Richest Person) হাতে। আর তালিকায় একেবারে নিচের সারিতে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের হাতে রয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ। সোমবার এই নিয়ে এক নতুন অধ্যয়ন (Study) সংক্রান্ত রিপোর্ট (Report) প্রকাশ হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের ডাভোস (Davos, Switzerland)–এ ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বার্ষিক সভা (World Economic Forum Annual Meeting)-র প্রথম দিন ছিল আজ। সেখানে ভারতের বার্ষিক বৈষম্য সংক্রান্ত প্রতিবেদন (Annual Inequality Report) তুলে ধরা হয়। অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল (Oxfam International) এই অধ্যয়ন চালিয়েছে। তাদের দাবি, তালিকায় শীর্ষে থাকা দশজন ভারতীয় ধনকুবেরের (Indian Billionaires) মোট সম্পদের উপর ৫ শতাংশ করে কর চাপালে যে পরিমাণ অর্থ আসবে, তা দিয়ে স্কুলছুট (School Dropout) সমস্ত পড়ুয়াকে স্কুলে পাঠানো সম্ভব।
ভারতীয় বিলিয়নিয়র গৌতম আদানি (Indian Billionaire Gautam Adani) ২০১৭-২০২১ পর্বে যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন, তার উপর এককালীন কর চাপালে ১.৭৯ লক্ষ কোটি টাকা আসত পারত। এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে ভারতের পঞ্চাশ লক্ষ প্রাইমারি স্কুল টিচার (Primary School Teachers) একবছর মাইনে (Salary) দেওয়া সম্ভব।
‘সার্ভাইভাল অব দ্য রিচেস্ট (‘Survival of the Richest)’ শীর্ষক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতে যতজন বিলিয়নিয়র রয়েছেন, তাঁদের সম্মিলিত মোট সম্পদের উপর যদি একাকালীন ২ শতাংশ কর চাপানো হয়, তাহলে ৪০,৪২৩ কোটি টাকা আদায় হবে। এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে আগামী তিন বছর দেশে অপুষ্টিতে ভোগা সমস্ত শিশুকে (Malnourished Children) খাবার খাওয়ানো যাবে প্রয়োজনীয় পুষ্টি (Nourishment) প্রদানের উদ্দেশ্যে।
তালিকায় শীর্ষে থাকা দশ ভারতীয় ধনকুবেরদের থেকে ৫ শতাংশ করে এককালীন কর আদায় করা হলে, দেশের হাতে ১.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা আসবে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক (Health and Family Welfare Ministry) এবং আয়ুষ মন্ত্রক (Ministry of Ayush)-এর সম্মিলিত আনুমানিক তহবিলের চেয়ে দেড় শতাংশ বেশি।
প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, রোজগারের দিক থেকে লিঙ্গ বৈষম্য (Gender Inequality) রয়েছে ভারতে। পুরুষ কর্মীরা (Male Workers) ১ টাকা আয় করলে, মহিলা কর্মীদের (Female Workers) আয় সেখানে ৬৩ পয়সা।
তফশিলি জাতি ও গ্রামীণ কর্মীদের (Schedule Cast and Rural Workers) ক্ষেত্রে, এই বৈষম্য আরও বেশি। ২০১৮ ও ২০১৯-এর মধ্যে পুরুষদের আয় যেখানে ৫৫ শতাংশ, মহিলাদের আয় সেখানে হয়েছে তার অর্ধেক।
করোনা প্যানেডিমক (Corona Pandemic) পর্ব শুরুর সময় থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ভারতীয় বিলিয়নিয়রদের সম্পদের পরিমাণ ১২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সহজ ভাষায় বললে, ৩৬০৮ কোটি টাকা প্রতিদিন আয় হয়েছে তাঁদের।
২০২১-২২ অর্থবর্ষে গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (Goods and Services Tax – GST) থেকে আদায় হওয়া ১৪.৮৩ লক্ষ টাকার ৬৪ শতাংশ এসেছে ভারতের জনসংখ্যার নিচের সারিতে থাকা ৫০ শতাংশের থেকে, মাত্র ৩ শতাংশ জিএসটি দিয়েছে দেশের জনসংখ্যার উপরের সারিতে থাকা ১০ শতাংশ।