পুরীর জগন্নাথ মন্দিরকে পৃথিবীর অদ্ভুত এবং সবচেয়ে বড় রান্নাঘর হিসেবে খ্যাত। লক্ষ্মী দেবীর কৃপায় ধন্য এই রান্নাঘর। জগন্নাথদেব নিজে যেমন খেতে ভালোবাসেন। তেমনি ভালোবাসেন ভক্তদের খাওয়াতে। তাই প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মানুষ প্রসাদ পান। সন্ধেবেলা জগন্নাথদেবকে লেবু,দই দিয়ে মাখা পান্তা দেওয়া হয়। যাকে বলা হয় সুভাস পাখাল। সঙ্গে থাকে নানা ধরনের মিষ্টি। রাত এগারোটা নাগাদ মহাপ্রভুর বড় শৃঙ্গার হয়। এই সময় তাঁকে বিভিন্ন ধরনের ভাজা ও ক্ষীর নিবেদন করা হয়। সবশেষে মধ্যরাতে ডাবের জল খেয়ে জগন্নাথ দেব শয়ন করেন। এই ভাবে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত জগন্নাথদেবের ৫৬ প্রকার ভোগ চলতে থাকে। পুরীর জনগন্নাথ মন্দিরের রহস্যময় এই রান্নাঘরের কোনায় কোনায় লুকিয়ে রয়েছে নানান কাহিনী। যা শুনলে ভিমরি খাবেন আপনিও।
জগন্নাথ দেবের রান্নাঘরকে বলে রোষা ঘর। এখানে রোজ ৩০০-রও বেশি মানুষ রান্না করেন। প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ রোষা হোম হয়।এই হোমের আগুন থেকে রোষা ঘরের সমস্ত উনুনে আগুন দেওয়া হয়।
মহাপ্রসাদ রান্নার জন্য এই রান্না ঘরে রয়েছে ৭৫২ টি উনুন। তবে সবচেয়ে বিষয়কর বিষয় হচ্ছে রান্না করার জন্য উনানে একটির উপর একটি পাত্র বসিয়ে রান্না হয়। এবং সবচেয়ে উপরে যে পাত্রটি রয়েছে তাতে রান্না সবার আগে পাক হয়।
শোনা যায়, জগন্নাথদেবের জন্য প্রস্তুত করা হয় ৫৬ ভোগ। সেই মহাপ্রসাদ কোনও দিনও শেষও হয়না বা বাড়তি পড়েও থাকে না। ৫৬ ভোগ ছাড়াও ১০০টির উপর পদ রান্না হয় রোজ।
মহাপ্রসাদ রান্নার জন্য জগন্নাথদেবের রান্নায় ব্যবহার হয় বিশেষ জল। পুরীতে (Puri) জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ তৈরি হয় এক বিশেষ কুয়োর জল থেকে। মন্দিরের রান্নাঘরের পাশে রয়েছে ২ টি কুয়ো এগুলিকে গঙ্গা যমুনা বলা হয়।
রাঁধুনিরা এই রহস্যময় রান্নাঘরে রান্না করেন তাঁদের সূপকার বলা হয়। মানুষের বিশ্বাস লক্ষীদেবী স্বয়ং এদের মাধ্যমে জগন্নাথ দেবের জন্য ৫৬ ভোগ রান্না করেন। রান্নার সময় তাঁরা সারাক্ষন মুখে গামছা বেঁধে থাকেন। জগন্নাথদেব আর লক্ষ্মী দেবীর কৃপায় ধন্য এই রান্নাঘর।
শেয়ার করুন