Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeদেশপত্রবোমা ছুড়ে ইস্তফা কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের, এর পর কে?

পত্রবোমা ছুড়ে ইস্তফা কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের, এর পর কে?

Follow Us :

কংগ্রেসের ভারত জোড়ো কর্মসূচি এবং সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের সঙ্গে সমস্ত সংস্রব ত্যাগ করে বড় ধাক্কা দিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ। ইন্দিরা গান্ধী থেকে শুরু করে রাজীব গান্ধী, পি ভি নরসীমা রাও, মনমোহন সিংয়ের মতো প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় কাজ করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ। গান্ধী পরিবারের অত্যন্ত কাছের লোক বলে পরিচিত পোড় খাওয়া এই রাজনীতিবিদ।

শুক্রবার গুলাম নবি সাড়ে চার পাতার এক দীর্ঘ চিঠি লিখেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে। কেন তিনি দল ছাড়তে বাধ্য হলেন, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। সে চিঠির ছত্রে ছত্রে রয়েছে সোনিয়া তনয় রাহুলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ এবং অভিমান। কীভাবে রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকদের একটি গোষ্ঠী তাঁর মতো প্রবীণ নেতাদের পদে পদে অপমান করেছেন, তা চিঠিতে তুলে ধরেছেন তিনি।

আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু হওয়ার কথা। তার সূচনায় অবশ্য থাকবেন না কংগ্রেস সভানেত্রী। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিনি বুধবার রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে বিদেশে চলে গিয়েছেন। তাঁর দেশে ফিরতে ফিরতে ৯ সেপ্টেম্বর হয়ে যাবে। রাহুল অবশ্য ৪ তারিখে ফিরে আসছেন। ভারত জোড়ো যাত্রার সুচনায় তিনি হাজির থাকবেন। এই সময়কালেই কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু তাও ফের পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পদত্যাগী প্রবীণ কংগ্রেস নেতার চিঠিতে সেই ভারত জোড়া যাত্রা এবং দলের সাংগঠনিক নির্বাচনকেও তীব্র কটাক্ষ করা হয়েছে। তাঁর মতে, ভারত জোড়ো যাত্রার বদলে কংগ্রেসের এখন দেশ জুড়ে কংগ্রেস জোড়ো অভিযান চালানো উচিত। গুলাম নবির অভিযোগ, কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচন আদতে একটি প্রহসন মাত্র। দেশের কোথাও ভোট হয় না। এআইসিসির পছন্দের লেফটেন্যান্টরা ২৪ আকবর রোডে বসে তালিকা তৈরি করেন। বুথ, ব্লক, মহকুমা, জেলা বা রাজ্যে কোনও ভোটার তালিকা তৈরি হয় না। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে জাতীয় কংগ্রেসের ভোটের নামে কার্যত প্রতারণা চলছে।

প্রবীণ এই নেতার অভিযোগ, মনমোহন সিংয়ের প্রধানমন্ত্রীত্বের সময় একটি অর্ডিন্যান্স ছিঁড়ে ফেলা রাহুলের অত্যন্ত গর্হিত কাজ ছিল। তা কংগ্রেস দলই তৈরি করেছিল। তাতে রাষ্ট্রপতিরও সম্মতি ছিল। রাহুল লোকসভায় তা ছিঁড়ে ফেলে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতিকেই অপমান করেছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, রাহুল যবে থেকে দলের সহ সভাপতি এবং সভাপতি হয়েছেন, তখন থেকেই কংগ্রেসের ধ্বংস শুরু হয়েছে। চিঠিতে তাঁর মন্তব্য, দলের সিনিয়র নেতারা রাহুলকে কোনও পরামর্শ দিতে গেলেই অপমানিত হয়েছেন। তাঁদের লিখিত মতামত বাজে কাগজের ঝুড়িতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। রাহুল তাঁর তাঁবেদার সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে দলের মধ্যে নিজস্ব গোষ্ঠী তৈরি করেছেন। এর জন্যই ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। দলের এই বিপর্যয়ের জন্য আজাদ রাহুলকেই দায়ী করেছেন। আজাদের বিস্ফোরক অভিযোগ, জম্মুতে রাহুলের প্রত্যক্ষ মদতে তাঁর প্রতীকী শোকযাত্রা পর্যন্ত করা হয়েছে। যাঁরা এর পিছনে ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

চিঠিতে এই ধরনের একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন প্রবীণ এই নেতা। দিন কয়েক আগেই দল ছেড়েছেন তরুণ নেতা এবং মুখপাত্র জয়বীর শেরগিল। আর এক প্রবীণ নেতা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মাও লাইনে রয়েছেন। তিনি ইতিমধ্যেই হিমাচলপ্রদেশের নির্বাচন সংক্রান্ত সমস্ত কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। মাস কয়েক আগে দল ছাড়েন প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল।

আগামিদিনে আরও কতজন দল ছাড়বেন, কো জানে। তবে গুলাম নবি যে ভাষায় চিঠি লিখে দল ছাড়লেন, তা রীতিমতো নজিরবিহীন। এর আগে দল ছেড়েছেন অনেকেই। তবে গুলামের মতো কেউ এই ধরনের পত্রবোমা ছোড়েননি।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments