1
2
3
4
5
6
7
8
9
10
11
12
K T V Clock
একটি পাথর কেটেই ১৮ বছর ধরে নির্মান করা হয়েছে কৈলাশের মন্দিরকে
Kailasanathar Temple | ভারতের এই মন্দিরে রহস্য লুকিয়ে রয়েছে সৌন্দর্যের আড়ালে
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published by:  শ্রেয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়
  • Update Time : 19-05-2023, 8:07 pm

ভারতের  বিভিন্ন প্রান্তে প্রাচীন ও ঐতিহাসিক মন্দির বা নিদর্শন রয়েছে, যা গোটা বিশ্বকেই অবাক করে। প্রাচীন ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ও শিল্প এক একটি সময়কালের ইতিহাসকে বর্ণিত করে। ভারতে এমন একটি মন্দির আছে যেটি কোটি কোটি বছর ধরে রহস্য লুকিয়ে রেখেছে তার সৌন্দর্যের আড়ালে। মন্দিরটি হল ঔরঙ্গাবাদের (Aurangabad City in Maharashtra) কৈলাশ মন্দির (Kailasanathar Temple)। স্বীকার করতেই হবে যে সেই সময়কার টেকনোলজি এখনকার থেকে অনেক বেশি উন্নত ছিল ঔরঙ্গাবাদের কৈলাশ মন্দিরও এমন এক সভ্যতার লোক বানিয়েছিল যা আজকের সভ্যতার মানুষের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত ছিল।

চিত্রকূট রাজা কৃষ্ণ প্রথম দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। জানা যায় মন্দিরের স্থাপত্য যা ভগবান শিবকে উৎসর্গ করে তা হল শীর্ষস্থানের প্রতিনিধিত্ব করে। মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গবাদ থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সহাদ্রী রেঞ্জে অবস্থিত ‘ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ (UNESCO World Heritage)’ হিসেবে স্বীকৃতি। কৈলাশ মন্দির মহারাষ্ট্র জেলার প্রসিদ্ধ ইলোরা গুহার মধ্যে অবস্থিত। এই ইলোরা গুহাই পৃথিবীর সব থেকে প্রাচীন গুহা বলে মনে করা হয়। এখানে পাথর কেটে গুহা ও হিন্দু মন্দির(শিব মন্দির) তৈরী করা হয়েছে। যার নাম কৈলাশ মন্দির। এটি একটি রহস্যময় শিব মন্দির। ইলোরাতে (Ellora Caves) পাথর কেটে মোট ৩৪টি গুহা বানানো হয়, যার মধ্যে ১৬ নম্বর গুহায় রয়েছে এই মন্দিরটি।

সেই সময় দাঁড়িয়ে মন্দির তৈরী করা আজকের উন্নত বিজ্ঞানের যুগেও অসম্ভব। এই মন্দির দেখে বিজ্ঞানীরা এতটাই হতবাক যে আজও পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি মন্দিরটি কতদিনের পুরনো আর কিভাবে মন্দিরটি তৈরী করা সম্ভব হল। কিছু বিজ্ঞানী ১৯০০ বছরের পুরনো মনে করেন। আবার কেউ কেউ ৬০০০ বছরের পুরনো ও মনে করেন। আবার এই মন্দিরটি অন্যান্য মন্দিরের মতো পাথরের টুকরো জুড়ে ও তৈরী করা হয়নি। এটি বানানো হয়েছে একটি মাত্র পাথর কেটে। সেইজন্য এই মন্দিরটি যে কবে বানানো হয়েছিল তার উত্তর দেওয়া একেবারেই অসম্ভব। কৈলাস মন্দির উপর থেকে নিচের দিকে পাথর কেটে নির্মাণ করা হয়, যা সত্যিই এক বিস্ময়কর ঘটনা। প্রথমে পাথরগুলি উপর থেকে কাটা শুরু হয়।

আরও পড়ুন: Zakia Jafri | গুলবার্গ সোসাইটির মরচে ধরা সিঁড়িতে বিবর্ণ বোগেনভেলিয়া 

এবং মাঝখানে এক বিরাট আয়তাকার পাথরের চারিদিকে ১১০ ফুট গভীর গর্ত করা হয়। এরপর মাঝখানের ওই পাথরটিকে কেটে কেটে বিভিন্ন কারুকার্য এবং ভাস্কর্যের সমাহারে বানানো হয় এই কৈলাস মন্দির। মন্দিরটি তিনটি অংশে বিভক্ত যথা- গর্ভগৃহ, নন্দীমণ্ডপ ও মুখমণ্ডপ। এই মন্দিরে বৃষ্টির জল সংগ্রহকরার জন্য ভূমিগত নালার ও ব্যবস্থা দেখা যায়। এই মন্দিরের ছাদ, সিঁড়ি ও থাম এতটাই নিখুঁত ভাবে তৈরী যা দেখে সন্দেহ হবে যে সত্যিই কি কোনো মানুষ এত নিখুঁত ভাবে কাজ করতে পারে!

আর্কিওলজিস্টরা অনুমান করেন যে প্রায় ৪ লক্ষ টন পাথর কেটে সরাতে হয়েছে। ইতিহাস বলছে যে এই মন্দির বানাতে ১৮ বছর সময় লেগেছিল। সব থেকে রোমাঞ্চকর ব্যাপার হল পাহাড় কেটে যে পাথর বের করা হয়েছিল তার অবশেষ মন্দিরের আশেপাশে এমন কি কয়েকশো মাইলের মধ্যেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এখন প্রশ্ন হল, সেই সময় যখন ক্রেনের মতো আধুনিক যন্ত্র ছিল না সেই সময় এত পরিমান পাথর কাটা ও মন্দির স্থল থেকে সরানো কিভাবে সম্ভব হয়েছিল?

এই মন্দিরে আর একটি রহস্য লুকিয়ে আছে। সেটি হল এই মন্দিরের নিচে একটি গুহা। ১৮৭৬ সালে ইংল্যান্ডের ইমান হেনরিক একটি বই লিখেছিলেন, যাতে সেই গুহাটির ব্যাপারে কিছু বর্ণনা করে গিয়েছিলেন। তিনি কৈলাশ মন্দিরের গুহাটি পরীক্ষা করেছিলেন। ১৬৮২ সালে তৎকালীন রাজা ঔরঙ্গজেব এক হাজার সৈন্যের একটি দল পাঠিয়েছিলেন এই মন্দিরটি ভেঙে নষ্ট করে দেবার জন্য। কিন্তু এক হাজার জন সৈন্য তিন বছর ধরে চেষ্টা চালিয়েও মন্দিরটি নষ্ট করতে পারে নি। তখন তিনি মন্দিরটি ভাঙার কাজ বন্ধ করে দেন। তাহলে প্রশ্ন যদি কোনও মানুষের দ্বারা মন্দিরটি নষ্ট করা সম্ভব না হয় তাহলে কি আদৌ কোন মানুষের দ্বারা মন্দিরটি নির্মিত?

Tags : Kailasa Temple Ellora Made Single Stone Eighth Century কৈলাশ মন্দির

0     0
Please login to post your views on this article.LoginRegister as a New User

শেয়ার করুন


© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.