নয়াদিল্লি: ‘অর্জুন’ মহম্মদ শামি (Mohammed Shami) কি শর্তপূরণের লক্ষ্যভেদ করতে পারবেন? টুর্নামেন্টে সেরা বোলারের শিরোপায় দেশকে বিশ্বকাপ দিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের হৃদয় জিতে নিয়েছিলেন। তারপর থেকে চোট যন্ত্রণায় কাবু হয়ে দেশের জার্সি চাপাতে পারেননি বাংলার ক্রিকেট দলের ওই পেস বোলার। যে যন্ত্রণা ক্রিকেটপ্রেমীদেরও। সামনে অস্ট্রেলিয়ায় বর্ডার-গাভসকর ট্রফির হাতছানি (Border Gavskar Trophy)। ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলার হয়ে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠলেও তারপর ফিটনেসের সমস্যায় ধারাবাহিকতার অভাব। ঠিক সেই সময় ভারতীয় ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই (BCCI) ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটে শামিকে নিজেকে ফিট প্রমাণ করবার সময় বেঁধে দিল। জানা গিয়েছে, ১০ দিনের ওই নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী বুধবার। ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাতে সফল হতে পারলে পাঁচ ম্যাচের বর্ডার-গাভাসকর টেস্ট সিরিজে অন্তত তৃতীয় টেস্টে শামির খেলার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
কী চলছে এখন শামির মনে? ক্রিকেটীয় রঙ্গমঞ্চে নিজেকে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি কি খুঁজছেন অনুপ্রেরণার কাহিনী? ইংল্যান্ডে দুর্ঘটনায় ডান চোখে দৃষ্টি হারানো মনসুর আলিখান পাটৌডিকে থামানো যায়নি। কঠোর অনুশীলন করে ভারতের জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন। তারপর টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর সাফল্য ইতিহাস। ২২৯ টেস্ট উইকেটের মালিক মহম্মদ শামি কি অগ্নিপরীক্ষা দিতে পাটৌডিদের মতো কোনও পূর্বসূরির কথা ভাবছেন? আগামী ৬ ডিসেম্বর শুরু ভারত-অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় টেস্ট। চোট সারিয়ে সবে শামি কামব্যাক করেছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে। গত ১৩ নভেম্বর বাংলার হয়ে রনজি ট্রফির ম্যাচে ফিরেছেন। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে খেলে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। রনজি ট্রফির পর এখন সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি খেলছেন শামি (Mohammed Shami) । কিন্তু, তাতে ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম করতে পারছেন না শামি। তাই প্রথম রাউন্ডের আগামী ম্যাচগুলোই এখন শামির সামনে অগ্নিপরীক্ষা। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেললেও শামির দেখভালের দায়িত্বে বিসিসিআইয়ের নিতিন প্যাটেল ও জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির নিশান্ত বোরদোলোই। তবে বোর্ড সূত্রে খবর, আগামী ম্যাচগুলোতে শামির ভারতীয় জার্সিতে প্রত্যাবর্তনে শুধুই ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স বিচার হবে না। কারণ টেস্টে টানা বল করতে হবে। সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ায় অনুশীলনে তাঁকে ফের পরখ করে নেওয়া হবে। বর্ডার-গাভাসকর টেস্ট সিরিজের পর ফেব্রুয়ারি মাসে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ফলে সেক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও জাতীয় দলে কামব্যাক হতে পারে শামির। একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপে (২০২৩) মাত্র ৭ ম্যাচে ২৪ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছিলেন শামি। সেখানেও প্রথম একাদশে প্রথম চার ম্যাচে জায়গা পাননি। তাতেও নিজেকে বিশ্বসেরা প্রমাণ করেছেন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ৩৪ বছরের শামি। ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্মরণীয় অভিষেক হয় শামির। এই বছর থেকে তাঁর নামের আগে এখন জুড়েছে ‘অর্জুন’ পুরস্কার প্রাপকের কৃতিত্ব। বিসিসিআইয়ের বেঁধে দেওয়া শর্তে মহাভারতের অর্জুনের মতো তিনি লক্ষ্যভেদ করবেন, সেই আশায় এখন মুহূর্ত গুনছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। অন্তত দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারা সিরিজের বদলা নিতে ওই একই মহাদেশের অস্ট্রেলিয়ায় (১-০ ইতিমধ্যে সিরিজে এগিয়ে ভারত) গিয়ে বদলা নেওয়া দেখতে মুখিয়ে সবাই। বিশ্বকাপের মতো প্রথম ম্যাচগুলোতে সুযোগ না পাওয়া শামি পরের ব্যাট-বলের লড়াইয়ে জ্বলে উঠবেন, এটাই প্রত্যাশা ক্রীড়া উৎসাহীদের।
আরও পড়ুন: এই সিরিজ ভালো যাবে কোহলির, বলছেন দ্রাবিড়