মিশিগান: মহাশূন্য, যাকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় ‘স্পেস’ বলা হয়, সেই বিশাল শূন্যস্থানের মধ্যে আলোর একমাত্র উৎস হল নক্ষত্রমণ্ডলী। নক্ষত্রের আলো থেকেই আলোকিত হয় গ্রহ এবং উপগ্রহরা। কিন্তু নক্ষত্র ও সেটিকে ঘিরে আবর্তনকারী গ্রহ এবং উপগ্রহরা কীভাবে তৈরি হল, সেই নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। তবে, সব মতবাদের মধ্যেই একটা বিষয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়, যেটি হল ‘ডার্ক এনার্জি’। সহজ ভাষায় বললে, অন্ধকার শক্তি থেকেই আলোর উৎসের উৎপত্তি। কিন্তু এই ‘ডার্ক এনার্জি’ আদতে কী? এই নিয়ে আবার ভিন্ন মত রয়েছে মহাকাশ গবেষকদের মধ্যে। তবে এবার এই ‘ডার্ক এনার্জি’ নিয়ে এক চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে। কারণ ‘ডার্ক এনার্জি’কে এবার ‘ব্ল্যাক হোল’ বা কৃষ্ণগহ্বরের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে একটি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকায়।
গত সোমবার জার্নাল অফ কসমোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে যে, ‘ব্ল্যাক হোল’ নিয়ে যদি আরও বিস্তারিত গবেষণা করা যায়, তাহলে ‘ডার্ক এনার্জি’র উৎসর সন্ধান পাওয়া যেতে পারে। এই গবেষণা পত্রে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক গ্রেগরি টার্লে এবং পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা ৫০০০ রোবোটিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে ‘ডার্ক এনার্জি স্পেকট্রোস্কোপিক ইন্সট্রুমেন্ট’ বা DESI থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলিকে বিশ্লেষণ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার ‘কিট পিক ন্যাশনাল অবজারভেটরি’র মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে এই চমকপ্রদ তথ্য খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তিনি এই গবেষণাপত্রে সাফ লিখেছেন যে, ‘মহাবিশ্বে কেবলমাত্র ব্ল্যাক হোলের কেন্দ্রে মহাকর্ষ বল সবথেকে শক্তিশালী হয়।‘
আরও পড়ুন: ইজরায়েলে হিজবুল্লার অতর্কিত হামলা, নিহত ৭
জানা গেছে, ‘কিট পিক ন্যাশনাল অবজারভেটরি’র মাধ্যমে কয়েক মিলিয়ন গ্যালাক্সির ডেটা ব্যবহার করে, বিজ্ঞানীরা প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন যে সময়ের সঙ্গে ‘ডার্ক পার্টিকেল’গুলির ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, সময়ের সঙ্গে ব্ল্যাক হোলের পরিমাণ এবং ভরও সমানুপাতিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। উক্ত গবেষণাপত্রের আর এক বিজ্ঞানী ডানকান ফারাহ এই বিষয়ে জানিয়েছেন, “দুটি ঘটনা একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশালাকার নক্ষত্রের মৃত্যুর ফলে যেমন নতুন ব্ল্যাক হোল তৈরি হয়, তেমনই এই ঘটনার ফলেই মহাবিশ্বে ডার্ক এনার্জির পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে।” এই কারণেই এই বিশেষ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, অদূর ভবিষ্যতে আধুনিক মহাকাশ গবেষণার এই দিকটি মহাবিশ্বের সৃষ্টির রহস্য থেকে শুরু করে ব্ল্যাক হোলের প্রকৃত গঠন সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য অন্বেষণ করার ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।
দেখুন আরও খবর: