কলকাতা: ২৭২ বছরের তেহট্টের গঙ্গোপাধ্যায়ের দূর্গাপুজো (Tehatta GangopadhyayBarir Durga Puja)। আজও তালপাতার পুঁথি দেখেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম রীতি-নীতি মেনে চলছে মহামায়ার পুজো। জানা যাচ্ছে, ছয় প্রজন্ম আগে গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারে অবিনাশ গঙ্গোপাধ্যায় স্বপ্নে দেবী দুর্গার আদেশ পান। সেখানে তিনি মায়ের যে রূপ দেখতে পেয়েছিলেন, সেই রূপেই মূর্তি গড়েন। এই পুজোর আয়োজন করা হয় হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে, কিন্তু পরে পরিবার তেহট্টে চলে এলে সেখানেই নতুন করে শুরু হয় গঙ্গোপাধ্যায় বাড়ির পুজো (Bonedi Barir Durga Puja 2024)।
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পুরনো রীতি মেনেই গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের পূজিত হন মা দূর্গা। বাড়ির প্যালেস্তারা খসে পড়েছে। পুরনো সেই জৌলুস সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একটু কমলেও। ঐতিহ্য মেনেই পুজো হয় আজও। সেই নিয়মে পড়েনি ছেদ। বর্তমান গঙ্গোপাধ্যায়ে পরিবারের বংশধর পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় ও সুস্নাত গঙ্গোপাধ্যায় পুজোর পরিচালনা করেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, মৃৎশিল্পীরা বংশপরম্পরায় প্রতিমা তৈরি করে আসছেন। পাশাপাশি ঢাকিও রয়েছে একই নিয়মে। পরিবারের পুজো এখনও বাড়িতে সংরক্ষিত তালপাতার পুঁথি মেনেই হয়।
আরও পড়ুন: বারুইপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর বিশেষত্ব কী?
আষাঢ় মাসে বাঁশ কেটে তৈরি করা হয় বাঁশ দেবীর কাঠামো। জন্মাষ্টমীর দিন চন্ডীপাঠের মাধ্যমে শুরু হয় এই মূর্তি নির্মাণের কাজ। বোধনের দিন পুজো শুরু। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় ‘আমন্ত্রন অধীবাস’ করা হয়। এদিন পরম্পরা মেনে দেবী দুর্গাকে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাজানো হয়। সপ্তমীর সন্ধ্যায় হয় অর্ধরাত্র পুজো। অষ্টমীর সকালে ১০৮ ঘড়া জল দিয়ে দেবীকে স্নান করানো হয়। অষ্টমী পুজো শুরু হয় “দুর্গা সহস্র শ্লোক” পাঠ করে। অষ্টমীতে বন্দুকের তোপ ধ্বনির মাধ্যমে সন্ধ্যা আরতি করা হয়। নবমীর দিন ৫৬ ভোগ দেওয়া হয় মাকে। এই বাড়িতে “সপ্তশতী যজ্ঞের” মাধ্যমে নবমীর পুজো শেষ হয়। দশমীর দিন নিয়ম মেনে পুজোর পর জলঙ্গিতে বিসর্জন দেওয়া হয় মাকে।