কলকাতা: রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বুধবার বিধানসভায় ভবানীপুর গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বিলের ওপর আলোচনা শেষে জবাবি ভাষণে শিক্ষামন্ত্রী অভিযোগ করেন, রাজ্যপালের অযাচিত হস্তক্ষেপে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিচালনায় বাঁধা সৃষ্টি করছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষার মানের অবনতি হচ্ছে।
৩৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশের পরেও রাজ্যপাল এই নিয়ে অযথা বিলম্ব করছেন বলেও শিক্ষামন্ত্রী অভিযোগ করেন।
বুধবার বিধানসভায় ভবানীপুর গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বিল ২০২৪ পেশ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ৷ আলোচনা শেষে ধ্বনি ভোটে এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিলটি বিধানসভায় গৃহীত হয়।
আরও পড়ুন: মহাকালেশ্বর মন্দিরে দিলজিৎ
বিলের উপর বক্তব্য রাখতে উঠে বিজেপির শঙ্কর ঘোষ-সহ বিরোধী বিধায়করা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির গুণমান কমে যাওয়ার অভিযোগ করেন করলে , শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু রাজ্যপাল ওরফে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসেবে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ৷
শিক্ষামন্ত্রী আরও অভিযোগ করেন, “রাজ্যপাল যেদিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে খেলনা বলে মনে করতে শুরু করেছেন, সেদিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির এই অবস্থা খারাপ হতে শুরু করেছে ৷ সুপ্রিম কোর্ট তার নির্দেশে বলেছে, উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের নেতৃত্বে তৈরি এক্সপার্ট কমিটি নাম দেবে ৷”
বিধানসভায় ব্রাত্য আরও বলেন, “এক্সপার্ট কমিটির পাঠানো তালিকা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মাধ্যমে উপাচার্যদের নাম তালিকা রাজভবনে পাঠাবেন ৷ এক্ষেত্রে উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যপালের কোনও ভূমিকা নেই ৷ রাজ্যপাল শুধু মাত্র ডাকবাক্স ৷ মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো নামে তিনি শুধু অনুমোদন দেবেন ৷”
তা সত্ত্বেও তিনি অযথা বিষয়টিকে অনুমোদন দিতে বিলম্ব করছেন। রাজ্যের পাঠানো নামগুলি একবার অনুমোদন না দিয়ে দফায় দফায় অনুমোদন দিচ্ছেন। অযথা এই বিলম্বের ফলে ব্যাহত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিচালনায়।
এই বিল প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আরও জানান ভবানীপুরের গুজরাটি এডুকেশন সোসাইটি নামক একটি ট্রাস্ট এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টি টালিগঞ্জের বি এল শাহ রোডে ৪.২০ একর জমিতে তৈরি করছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে পঠন পাঠন চালু করবে।
এর আগে বিলের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীরা শিক্ষাক্ষেত্রে বেসরকারি করণের অভিযোগ করেন। রাজ্যে সাম্প্রতিক একাধিক শিক্ষা দুর্নীতির সঙ্গে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাড় বাড়ন্তর কোনও সম্পর্ক আছে কিনা তা নিয়ে বিজেপির মুখ্য সচেতক শংকর ঘোষ প্রশ্ন তোলেন। যদিও শিক্ষা মন্ত্রী তাদের যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দেন।
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতি, শোধ বোধের রাজনীতির কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এই রকমই গুজরাট, উত্তরপ্রদেশে উদাহরণ আছে কিনা দেখান। এখানে সমস্ত ভাষার এক মর্যাদা।
দেখুন অন্য খবর: