লন্ডন: বিয়ে করে সুন্দর স্বপ্ন নিয়ে স্বামীর ঘর করতে লন্ডনে এসেছিলেন দিল্লির মেয়ে হর্ষিতা ব্রেল্লা (Harshita Brella)। কিন্তু আজ তাঁর পরিচয় শুধু একটি নিথর বিকৃত দেহ। সিলভার ভক্সহল কর্সা (Vauxhall Corsa) গাড়ির ডিকি থেকে দেহ উদ্ধার। গাড়ি ব্রিসবেন রোডে (Brisbane Road) পার্ক করা ছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, হর্ষিতাকে সম্ভবত শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। দেহ উদ্ধার হয়েছে গাড়ির ডিকি থেকে। ঘটনার পর থেকেই হর্ষিতার স্বামী বছর ২৩ এর যুবক পঙ্কজের কোনও খোঁজ নেই। প্রাথমিকভাবে অনুমান স্ত্রীকে খুন করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে পঙ্কজ। পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে।
দিল্লির মেয়ে ছিলেন হর্ষিতা, বিবাহ সূত্রে লন্ডনে এসেছিলেন। গত ১৪ নভেম্বরের এক সকালে পূর্ব লন্ডনের ইলফোর্ডের পুলিশ ব্রিসবেন রোডে পার্ক করা একটি সিলভার ভক্সহল কর্সারের ডিকির ভিতর একটি দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে দেহটি ২৪ বছর বয়সি ভারতীয় মেয়ে হর্ষিতা ব্রেল্লার।।
আরও পড়ুন:সাময়িক স্বস্তিতে পি চিদাম্বরম, এয়ারসেল ম্যাক্সিস মামলায় স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
জন্মসূত্রে হর্ষিতা দিল্লিতে থাকতেন। গত বছরের আগস্টে তার বিয়ে হয় পঙ্কজ লাম্বার সঙ্গে। এই বছরের এপ্রিলে সে স্বামীর ঘর করতে লন্ডনে আসেন। দেহ উদ্ধার হয় ১৪ নভেম্বর। নর্দাম্পটনশায়ারে তার বাড়ি থেকে হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে শ্বাসরোধ করে হর্ষিতাকে মারা হয়েছে। খুনের পর দেহটিকে গাড়ির বুটে লুকিয়ে বাড়ি থেকে ১৪৫ কিলোমিটার দূরে ইলফোর্ডে ফেলে রাখা হয়।
নর্থহ্যাম্পটন পুলিশ বলেছে, প্রাথমিক অনুমান হর্ষিতাকে এই মাসের প্রথমে খুন করা হয়েছে। হর্ষিতা হত্যা মামলায় ৬০টি তদন্তকারি সংস্থা কাজ করছে। বাড়ি-ঘর, সিসি ক্যামেরা, স্বয়ংক্রিয় গাড়ি সব পুলিশের স্ক্যানারে।
হর্ষিতা ১০ নভেম্বর সে তার বাড়িতে শেষবারের মতো ফোন করেছিলেন। তখন সে বাড়িতে জানিয়েছিল বাড়িতে তাঁর স্বামীর ফেরার জন্য অপেক্ষা করছে। যখন সে কথা বলছিল, হর্ষিতা জানিয়েছিলেন সে এখন দুজনের রাতের খাবার তৈরি করছেন। তার পর থেকে তাঁর ফোন সুইচ অফ। ১৩ নভেম্বর হর্ষিতার বাড়ির লোকজন নর্থহ্যাম্পটন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ১৪ নভেম্বর দেহ উদ্ধার হয়।
জানা গেছে, বিয়ের পর থেকে হর্ষিতা গার্হ্যস্থ হিংসার শিকার হয়েছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে সে থানায় স্বামীর নামে শারীরিক মানসিক নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ঘটনার আগেও দুজনের মধ্যে অশান্তি হয়েছিল।
হর্ষিতার বাবা সতবীর ব্রেল্লা জানিয়েছেন, সহজ সরল তবে দৃঢ়চেতা মেয়ে ছিল হর্ষিতা। শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন ছিল। দুই পরিবারের মতে পঙ্কজের সঙ্গে তাঁর সামাজিক বিয়ে হয়েছিল।
মেয়ের দেহ দেশে ফেরানোর আর্জি জানিয়েছেন সতবীর ব্রেল্লা। হর্ষিতার বোন সোনিয়া জানিয়েছে, অত্যাচারের কারণে একবার সেই বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বিয়ে বাঁচানোর জন্য হর্ষিতা আবার পঙ্কজের কাছে ফিরে আসে।
দেখুন অন্য খবর: