অন্ডাল: ব্যাঘ্রবাহিনী রূপে পূজিত হন মদনপুরের জমিদার বাড়ির দুর্গা (Madanpur zamindar house Durga Puja)। জমিদার বাড়ির পুজো ঘিরে এলাকায় থাকে সাজো সাজো রব। পারিবারিক পুজো হলেও গ্রামের প্রায় সকল মানুষ এই ব্যাঘ্রবাহিনী মায়ের পুজোয় অংশ নেন। অন্ডালের মদনপুরের জমিদার বাড়ির দুর্গা আজও প্রাচীন প্রথা মেনেই ব্যাঘ্রবাহিনী রূপে পূজিত হয়ে আসছেন। কথিত আছে অন্ডাল মদনপুরের জমিদার পরিবারের প্রথম জমিদার ‘মহেশ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আজ থেকে আনুমানিক ২১৭ বছর আগে এই মায়ের পুজো শুরু করেছিলেন। জমিদার চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে জানা যায়, মা দূর্গা মহেশ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে স্বপ্নাদেশ দেন তাঁর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করার এবং স্বপ্নে মূর্তি কেমন হবে সেই রূপে মা মহেশ বাবুকে দেখা দেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তার সঙ্গে দুর্গাপুরের মৃৎশিল্পী ভুবন মিস্ত্রিকে ওই একই রূপে দর্শন দেন মা এবং মূর্তি গড়ার নির্দেশ দেন।
মা বাঘের ওপরে উপবিষ্ট, তাঁর বাম পার্শ্বে গণেশ এবং ডান পার্শ্বে কার্তিক। মায়ের এই রূপ অন্যত্র খুব একটা দেখা যায় না। প্রথম থেকেই যে নিয়মে পুজোর অনুষ্ঠান চলত তা আজও মেনে হয় পুজো। এই পুজো চ্যাটার্জি পরিবারের পারিবারিক পুজো। তাই পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতায় এই পুজো চলে আসছে। ‘মহেশ বাবু খুব বড় মাপের জমিদার ছিলেন তাঁর হাতে প্রচুর মৌজার মালিকানা ছিল। বিহারের মুজফরপুরে জমিদারির প্রধান কার্যালয় ছিল। এদিকে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম সহ বর্ধমান জেলায় অনেক মৌজার মালিকানা পেয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদ থেকেই শুরু হয় পুজো
এখনো বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে অনেক চাষি যাদের জমিদারি আমলে (কোটাল) বলা হত, তারাও আজও সেই প্রাচীন প্রথামতো পুজোর শুরুতেই চলে আসেন মদনপুরের এই ব্যাঘ্রবাহিনী মায়ের মন্দিরে। পুজোর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তারা দায়িত্ব নিয়ে পালন করেন তাদের কাজ। এখনও জমিদার চট্টোপাধ্যায় পরিবারের অনেকেই যারা কর্মসূত্রে বিদেশে থাকেন তারাও এই পুজোর ক’দিন নিজেদের পিতৃভিটার পুজোয় অনুপস্থিত হতে চান না। প্রায় সকলেই এসে থাকেন এখানে। পুজোর চার দিন নিজ ঘরে রান্না হয় না, মন্দির প্রাঙ্গণে দু’বেলা মায়ের ভোগের আয়োজন করা হয়।
অন্য খবর দেখুন