হুগলি: আগামিকাল রবিবার রথযাত্রা (Rath Yatra 2024)। জ্যৈষ্ট মাসের পূর্ণিমা তিথিতে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা উৎসব পালন করা হয়। রথে চড়ে বোন সুভদ্রা ও দাদা বলরামকে সঙ্গে নিয়ে মাসির বাড়ি রওনা দেবেন জগন্নাথদেব৷ পুরী, ইসকনের পাশাপাশি, বাংলার মাহেশের সাড়ম্বরে পালিত হবে জগন্নাথের রথযাত্রা। ৬২৮ বর্ষে পরল এবার মাহেশের রথযাত্রা উৎসব।
৪৭ বছর পর মোক্ষ যোগে হচ্ছে স্নানযাত্রা হয়েছে। রীতি মেনে স্নানমঞ্চে ২৮ ঘড়া গঙ্গাজল এবং দেড় মণ দুধ দিয়ে স্নান করানো হয় জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রাকে। আগামিকাল রথে চড়ে জগন্নাথ ,বলরাম, সুভদ্রা মাসির বাড়ি যাবেন। আর এই রথযাত্রা ঘিরে গোটা শ্রীরামপুর নিরাপত্তার চাদরে মোড়া হয়েছে, চন্দনগর পুলিশ কমিশনারেট তরফে। জায়গায় জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে যাতে করে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা সহজেই শনাক্ত করা যায়। কথিত আছে পুরীর রথের রশিতে টান পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শ্রীরামপুরের মাহেশের রথ রশিতে টান দেবেন। এই রথযাত্রা ঘিরে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে। ইতিমধ্যে মাহেশ স্নান পিড়ি মাঠে রথ উপলক্ষে বসবে মেলা। দুপুর দুটোর সময় তিন বিগ্রহকে মন্দির থেকে রথে নিয়ে যাওয়া হবে এবং বিকেল চারটের সময় রথের রশিতে টান দেওয়া হবে। এই দিন মহেশ মন্দিরে জগন্নাথ দেব রাজার মতো সাজে।
আরও পড়ুন: এই দেবীকে ভোগ নিবেদন না করলে জগন্নাথদেব ভোগের স্বাদ নেন না
কথিত আছে, বিশ্বকর্মা স্বয়ং স্বর্গ থেকে এসেছিলেন জগন্নাথের মূর্তি তৈরি করতে, কিন্তু তার শর্ত না মেনে রাজা সেই ঘরের দরজা খুলে দিলেন, তখন বিশ্বকর্মা তার কাজ শেষ করার আগেই সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। সেই থেকে জগন্নাথ দেবের হাতহীন মূর্তি সর্বত্র পূজিত হয়। মহাপ্রভুর নব যৌবন উৎসবের দিন মহেশের জগন্নাথ দেবকে রূপার হাত লাগানো হয়। বলা হয়, স্নানযাত্রা উৎসবের পরে, জগন্নাথ দেব জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পরে ১৫ দিনের জন্য গর্ভগৃহে বন্ধ রাখা হয়। ১৫ দিন পর মহাপ্রভু সুস্থ হয়ে উঠলে সেই দিনটিকে নতুন যৌবন উৎসব হিসেবে পালিত হয়। ভগবানকে ৫৬ ধরনের খাবার নিবেদন করা হয়। এছাড়াও এই দিনে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা গহনা সহ নতুন রাজকীয় পোশাক পরেন। ভগবান জগন্নাথের রথের ১৬টি চাকা, বলভদ্রের রথে ১টি চাকা ও সুভদ্রার রথে ১২টি চাকার রথনির্মাণ করা হয়। জগন্নাথদেবের রথের নাম নন্দীঘোষ। রথের সারথির নাম দারুক। বলভদ্রের তালধ্বজ এবং সুভদ্রার রথ দর্পদলন৷ কথিত আছে, এই রথের নাম দেন স্বয়ং ইন্দ্র। রথযাত্রায় অংশ নিতে দেশ বিদেশ থেকে বহু মানুষ পুরী আসেন। যিনি রথ টানেন, তিনি একশত যজ্ঞ করার সমান পুণ্য লাভ করেন বলে বিশ্বাস।
অন্য খবর দেখুন
