কলকাতা: বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো (Durga Puja 2025) একসময় ছিল কেবল রাজবাড়ি ও জমিদার বাড়ির আঙ্গিনায় সীমাবদ্ধ। আজ তা রূপ নিয়েছে সর্বজনীন আনন্দোৎসবে। ইতিহাস বলছে, দুর্গাপুজো যেমন জমিদার শ্রেণির ঐশ্বর্য প্রদর্শনের ক্ষেত্র ছিল, তেমনই সমাজের মিলিত প্রচেষ্টায় তা ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে সকলের উৎসব।
ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, ১৫ শতকে মালদহ–দিনাজপুর অঞ্চলে দুর্গাপুজোর প্রচলন হয়। অন্যদিকে, কিংবদন্তি মতে, তাহেরপুরের রাজা কংসনারায়ণই প্রথম জমকালো দুর্গোৎসব শুরু করেন। মল্লভূমির বিষ্ণুপুরেও রাজাদের পুজোর দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: এবার দেবীর আগমন ও গমন কোন বাহনে?
নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রর হাত ধরে ১৮ শতকে দুর্গাপুজো রাজশক্তি ও সামাজিক প্রভাব বিস্তারের মঞ্চে পরিণত হয়। কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়ির পূজা আরও উজ্জ্বল করে তোলে এ ঐতিহ্যকে।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জমিদার শ্রেণির আর্থিক সীমাবদ্ধতা ও সামাজিক চাপ নতুন পথের সন্ধান দেয়। হুগলির গুপ্তিপাড়ায় ১৭৯০ সালে কয়েকজন যুবকের চাঁদা তুলে দুর্গাপুজো করার উদ্যোগ থেকেই জন্ম নেয় “বারোয়ারি” শব্দের। ধীরে ধীরে এই বারোয়ারি পুজোই হয়ে ওঠে সর্বজনীন দুর্গোৎসবের সূচনা।
কলকাতায় প্রথম সর্বজনীন দুর্গাপুজোর আয়োজন হয় ১৯১০ সালে ভবানীপুরে, সনাতন ধর্মোৎসাহিনী সভার উদ্যোগে। এরপর বাগবাজার ও শহরের অন্যান্য প্রান্তে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এই ধারা।
আজ দুর্গাপুজো শুধু পূজা নয়, বাঙালির সামগ্রিক সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীক। ব্যক্তিগত বাড়ি থেকে সর্বজনীন মণ্ডপ—এই যাত্রাপথই তার প্রমাণ।
দেখুন আরও খবর: