নয়াদিল্লি: চীনের (China) সঙ্গে ভারতের (India) সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে বলে মঙ্গলবার লোকসভায় দাবি করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (ExternalAffairsMinisterSJaishankar) । বিদেশমন্ত্রীর দাবি, ২০২০ সালে গালওয়ানের পর চীন ও ভারতের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।
সীমান্তে সেনা সরাতে দুই দেশই ঐক্যমত্য পোষণ করায় এই সমস্যা সমাধান করতে আরও সুবিধা হয়েছে। বহু কূটনৈতিক পর্যায়ের পর ভারত ও চীনের সম্পর্কে উন্নতি দেখা গিয়েছে। আগামীদিনেও যাতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভালো থাকে তার জন্য কূটনৈতিক আলোচনা জারি থাকবে।
২০২০ সালের ১৫ জুন লাদাখের গালওয়ানে ভারত ও চীনের মধ্যে সেনাবাহিনীর মধ্যে হিংসাত্মক সংঘর্ষ হয়। নিহত হয়েছিল ২০ জন ভারতীয়। তার পর থেকেই ভারত ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছিল। ৪৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম ভারতীয় সামরিক বাহিনীর এতগুলি সেনা নিহত হয়। সেই ঘটনা তুলে ধরেই বিদেশমন্ত্রীর দাবি, আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে ক্রমশ কূটনৈতিক সম্পর্কের পরিস্থিতি বদলাচ্ছে।
২০২০ সালে সংঘর্ষের ঘটনার সাক্ষী থাকার পর গত অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন আয়োজিত হয়েছিল। সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সীমানা থেকে সেনা সরানোর বিষয়ে নিয়ে আলোচনা হয়। জানা যায়, দুই দেশই সহমত পোষণ করেছে। তার পরেই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর লোকসভায় এই বিবৃতি দেন। জয়শঙ্কর বিবৃতি অনুযায়ী, সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য চীনের সঙ্গে কথা চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর ভারত।
আরও পড়ুন: ফুরফুরে মেজাজে ভারত, অ্যাডিলেডে পৌঁছলেন রোহিতরা
জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, ২০২০ সালের পর চীনের হামলা পালটা জবাব দিয়েছে তারা, সেইসঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে গেছে। দুই দেশের মধ্যে হওয়া অতীত চুক্তি মনে করিয়ে দিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, ১৯৯১, ১৯৯৩, ১৯৯৬, ২০০৩, ২০০৫, ২০১২ এবং তার পরে ২০১৩ সালে শেষ বার সীমান্তে প্রতিরক্ষা বিষয়ে সমঝোতা করে ভারত এবং চীনের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। এই চুক্তিগুলি বলার কারণ হিসেবে জয়শঙ্কর বলেন, চীনের সঙ্গে ভালো, স্থিতিশীল সম্পর্ক করতে যে ভারত আগ্রহী সে কথা বোঝানোর জন্য এইগুলির উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্রিকস সম্মেলনে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে সীমান্ত থেকে শুধু সেনা সরানই নয়, একগুচ্ছ আলোচনা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশই দেপসাং, ডেমচক এলাকা থেকে সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সঙ্গে ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চার বছরের যে সব অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করা হয়েছিল, তাও সরিয়ে ফেলার কথা হয়।
ঠিক হয়, দুই দেশের মধ্যে সেনা টহল দেবে গালওয়ান সীমান্তে। পরে গত নভেম্বরে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে জি২০ সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে মুখোমুখি বসেন জয়শঙ্কর এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে সেটিই ছিল প্রথম বৈঠক। সেখানে সেনা সরানো সহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কিভাবে উন্নতি করা যায়, সেই ব্যাপারে কথা হয়। ধীরে ধীরে বরফ গলতে থাকে, দু দেশের মধ্যে।
দেখুন অন্য খবর: