নয়াদিল্লি: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতবাসী ও ঢাকার সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে পাকিস্তান সক্রিয়তা বাড়াতে শুরু করেছে মুহাম্মদ ইউনুসের দেশে। গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারকে সরাতে পদ্মাপাড়ের দেশে সংঘটিত বিক্ষোভে ইন্ধনের অভিযোগ উঠেছিল পাকিস্তানের (Pakistan) গোয়েন্দা সংস্থা (গুপ্তচর বৃত্তি) আইএসআইয়ের। এবার তারই মধ্যে পাকিস্তানের পঞ্জাবে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী মাসুদ আজহার (Masood Azhar) প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্য পেশের রিপোর্ট পেল ভারত (India)। ভারতের সংসদে হামলা, পুলওয়ামা হামলা সহ আরও অনেক নাশকতার ঘটনার মূল চক্রী রাষ্ট্রসঙ্ঘ ঘোষিত এই জঙ্গি। সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের (Jaish-e-Mohammad) প্রধান এই আজহার তাদের মাটিতে নেই বলে দাবি করে আসছে পাকিস্তান। এই সংক্রান্ত রিপোর্ট পেয়ে পাকিস্তান দ্বিচারিতা করছে বলে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল ভারতের বিদেশমন্ত্রক। অভিযোগ, ওই সমাবেশে ভাষণে যথারীতি ভারত বিদ্বেষের কথা শোনা গিয়েছে আজহারের বক্তব্যে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার পর এই প্রথম তাকে প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে।
পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে একটি জনসমাবেশে আজহারের বক্তৃতা দেওয়ার রিপোর্ট পেয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে আহ্বান জানানো হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, আমরা দাবি করছি তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তাকে বিচারের আওতায় আনা উচিত। অস্বীকার করে বলা হয়েছে সে পাকিস্তানে নেই। মাসুদ আজহার ভারতে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত। আজহারকে ২০১৯ সালের মে মাসে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করে। ভারতও সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করেছে।
আজহারের বিরুদ্ধে ২০০১ সালে ভারতের সংসদে হামলা, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলা, ২০০১ সালে জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা চত্বরে হওয়া হামলার পরিকল্পনা করার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালে পাঠানকোটে হামলা, শ্রীনগরের বিএসএফ ক্যাম্পে হামলারও অভিযোগ রয়েছে। ভারত তাকে ১৯৯৪ সালে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু ১৯৯৯ সালে বিমান হাইজ্যাকিংয়ের সময় বন্দি বিনিময়ে মুক্তি দিতে হয়। মুক্তির পর জয়শ-ই-মোহাম্মদ প্রতিষ্ঠা করে সে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মতে, আজহার উসামা বিন লাদেনের আল-কায়েদার সঙ্গেও নানাভাবে যুক্ত ছিল। এমনিতেই পাকিস্তানের মাটি জঙ্গি কার্যকলাপের আঁতুড় ঘর। সে দেশে শেহবাজ শরিফের সরকারের বিরুদ্ধে জেলবন্দি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল লাগাতার বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হচ্ছে দেশজুড়েই। অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী প্রকাশ্যে মাথাচাড়া দেওয়ায় প্রতিবেশী ভারতের উদ্বেগ বাড়বে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন: ভারতের বিদেশ সচিব ঢাকা যাবেন সোমবার
দেখুন অন্য খবর: