ওয়েব ডেস্ক: সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র তথা ইসকনের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর গ্রেফতারি নিয়ে উত্তপ্ত বাংলাদেশ (Bangladesh)। এই আবহে ওপার বাংলার ইসকন সাফ জানিয়ে দিল, চিন্ময় তাঁদের কেউ নন। তাঁকে ইসকন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এবার থেকে তাঁর কোনও বক্তব্য বা কাজকর্মের দায় নেবে না বাংলাদেশ ইসকন (Bangladesh Iskon)।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে সে দেশের নেতারা জানিয়েছেন, চিন্ময়ের কোনও কাজের দায় ইসকন নেবে না। সেখানেই ইসকনের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, ‘মাসকয়েক আগে শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস, দস্য গৌরাঙ্গ দাস এবং চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার করেছে ইসকন বাংলাদেশ। তাঁর কোনও বক্তব্যের দায় ইসকনের নয়।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ইস্যুতে কেন্দ্রকে সমর্থন মুখ্যমন্ত্রীর
সাংবাদিক বৈঠকের প্রশ্নোত্তর পর্বে ইসকন বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী কমিটি ও শিশুসুরক্ষা দলের সদস্য হৃষীকেশ গৌরাঙ্গ দাস জানান, চিন্ময় কৃষ্ণদাসের বিরুদ্ধে শিশু হেনস্থার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে চিন্ময়কে কারণ দর্শাতে বলা হয়। তদন্তের স্বার্থে তিন মাসের জন্য ধামের অধ্যক্ষ পদ থেকেও তাঁকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়। কিন্তু তিনি সেই নির্দেশ মানেননি। এর পরেই গত জুলাই মাসে চিন্ময়কে বহিষ্কার করে ইসকন। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতেও তা স্পষ্ট জানিয়ে দেয় ইসকন। তাঁদের আরও দাবি, বাংলাদেশে চিন্ময়ের গ্রেফতারি এবং আইনজীবীর হত্যাকে কেন্দ্র করে ইসকনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, আইনজীবীকে খুনের ওই ঘটনায় ইসকন ও তার সমর্থকদের হাত রয়েছে। কিন্তু এ ধরনের নক্ক্যারজনক ঘটনার সঙ্গে আদপেও ইসকনের কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রসঙ্গত, ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে বুধবার দেশের হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছিল মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার। কিন্তু চাপে পড়ে বৃহস্পতিবারই ইসকনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
৫ অগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর হিন্দুদের উপর সংখ্যালঘুদের একের পর এক অত্যাচারের অভিযোগ উঠতে থাকে। বাংলাদেশে অশান্তির আবহে কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন মিলে তৈরি করে সনাতনী জাগরণ মঞ্চ। এই মঞ্চের মুখপাত্র ছিলেন চিন্ময়। তাঁর ডাকেই হাজার হাজার সংখ্যালঘু যোগ দিয়েছিলেন নানান সমাবেশে। চট্টগ্রামে সমাবেশের পর তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা দেশদ্রোহের মামলা করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার হন চিন্ময় প্রভু। তাঁর গ্রেফতারির পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু করেছে বাংলাদেশের হিন্দুরা। স্লোগান উঠেছে ‘চিন্ময় প্রভু ভয় নেই, রাজপথ ছাড়ি নাই।’ মঙ্গলবার চিন্ময়কৃষ্ণকে আদালত থেকে বার করার সময় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী এবং আইনজীবীদের সঙ্গে তাঁর অনুগামীদের সংঘর্ষ বাধে। ঘটনায় নিহত হন এক আইনজীবী।
দেখুন আরও খবর: