ডায়মন্ড হারবার: আবাসনে হামলা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বিচারক জেলা বিচারক। ডায়মন্ড হারবার মহাকুমার আদালতের বিচারকের। চিঠির পেয়েই নড়ে বসল পুলিশ। কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ আসতেই নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ।
রায় পছন্দ না হওয়ায় বিচারকদের আবাসনে দুষ্কৃতী-আতঙ্ক! শিশুদের যৌন নিগ্রহের মামলার রায় পছন্দ না হওয়ায় হামলা বলে সন্দেহ বিচারকদের। এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দুষ্কৃতীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ! ‘বিদ্যুতের লাইন কাটতে আবাসনে জোর করে ঢোকার চেষ্টা দুষ্কৃতীদের, বাধা দেওয়ায় প্রাণনাশের হুমকির’, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ডায়মন্ড হারবার পুলিশের উপর ভরসা নেই বিচারকদের! নিরাপত্তাহীনতায় খোদ বিচারকরাই! দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা জজকে চিঠি লিখে অভিযোগ ডায়মন্ড হারবার আদালতের বিচারকদের। পরিবার নিয়ে নিরাপদ বোধ করছেন না বিচারকরা। দুষ্কৃতীদের কাছে প্রাণঘাতী অস্ত্রও থাকতে পারে বলে আশঙ্কা। সেই চিঠি কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে পাঠিয়েছেন জেলা বিচারকে।
সুত্র মারফত জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতীরা ডায়মন্ড হারবার শিবালয়ে ডায়মন্ড হারবারের মহকুমার আদালতের এসিজিএম শচীনন্দু মোহন ভৌমিকের ভৌমিকের আবাসনে গিয়ে হামলা চালায়। এই ঘটনায় কার্যত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বিচারক। এই ঘটনাকে নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিচারক কে একটি চিঠি পাঠান ডায়মন্ড হারবার মহকুমার আদালতের এসিজিএম। বিচারকের আবাসনে হামলার ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা নিয়ে। আবাসনে নিরাপত্তায় নিরাপত্তা রক্ষীদের নিরাপত্তা বেষ্টনী কতটা নড়বড়ে সেই কঙ্কালসার চেহারা ফুটে উঠেছে। ইতিমধ্যেই ডায়মন্ডহারবার মহকুমার আদালতের এ সিজিএম ওনার লিখিত চিঠিতে উল্লেখ করেছে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার সাব-ইন্সপেক্টর কুমারেশ দাসের নাম। কুমারেশ দাস ডায়মন্ড হারবারের এসিজিএমের নিরাপত্তার দায়িত্ব রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কুমারেশ দাস ছাড়াও আরও এক পুলিশ কর্মীর কথা উল্লেখ করেছে ডায়মন্ড হারবার মহকুমার আদালতের এসিজিএম। ইতিমধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। বিচারকের আবাসনের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ডায়মন্ড হারবার মহকুমার ক্রিমিনাল আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক দেবাংশু পান্ডা।
আরও পড়ুন: খোলা মন নিয়ে আলোচনায় আসুন, ডাক্তারদের বার্তা চন্দ্রিমার
তিনি জানান, বিচারক রায় নিরাপদ নয় তাহলে সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তা কোথায়। এটি খুব দুঃখজনক ঘটনা আমরা চাই দোষীরা শাস্তি পাক এবং পুলিশ সঠিক তদন্ত শুরু করুক। বিচারকের আবাসনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সকল পুলিশ কর্মীদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করুক। এ বিষয়ে অপর এক আইনজীবী সুদীপ চক্রবর্তী তিনি জানান, খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা কোনোমতেই কাম্য নয়। আমরা চাই এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত রয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক পুলিশ প্রশাসন। অপরদিকে এই ঘটনার কে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চা্পান উত্তর, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গোটা ঘটনার বিবরণ দিয়ে একটি পোস্ট করে। সুকান্ত মজুমদার আরও জানান রাজ্যে বিচারক রায় নিরাপদ নয়। পুলিশ বিচারকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তা কিভাবে দেবে। যদিও বুধবার দুপুরে ডায়মন্ড হারবার মহকুমার আদালতে সমস্ত বিষয় এবং আদালতের এসিজিএমের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার রাহুল গোস্বামী এছাড়াও ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিতুন কুমার দে তিনিও ডায়মন্ড হারবার মহকুমার আদালতে এসে পৌঁছান । সেদিন রাতে কি ঘটনা ঘটেছিল সে বিষয়ে ডায়মন্ড হারবার মহকুমার আদালতে এ সি জি এম এর সঙ্গে কথোপকথন করেন।
এ বিষয়ে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার রাহুল গোস্বামী তিনি বলেন, আমরা তদন্ত শুরু করেছি, খুব দ্রুতই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে। বিচারকের আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করন করা হবে। ডায়মন্ড হারবার মহকুমার আদালতের আইনজীবীরা বিচারকের আবাসনে হামলার ঘটনায় একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। এই ঘটনা কার্যত আতঙ্কিত এলাকাবাসীরা। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে ডায়মন্ড হারবার মহকুমার আদালতের অন্যান্য বিচারকরা।
অন্য খবর দেখুন