গঙ্গাসাগর: ভয়াবহ ভাঙনের মুখে গঙ্গাসাগরের (Gangasagar) কপিলমুনির মন্দির (Kapil Muni Ashram)। পূর্ণিমার কোটাল আর নিম্নচাপের জোড়া ফলায় বিদ্ধ কপিলমুনির মন্দির (Kapil Muni Ashram Faces Erosion) চত্বর। ফের ভাঙনের জেরে নদীগর্ভে তলিয়ে গেল কপিলমুনির মন্দিরের সামনে গঙ্গাসাগরের মেলাচত্বরের অনেকাংশ। এ নিয়ে এক মাসে চতুর্থ বার ভাঙন। কয়েকদিন আগেই ধসের জেরে সমুদ্রের গর্ভে চলে যায় গঙ্গাসাগর ২ নম্বর থেকে ৫ নম্বর যাওয়ার রাস্তা। ৪ নম্বর রাস্তায় পূর্ত দফতরের কংক্রিটের প্রায় ১০ ফুট রাস্তা বিলীন হয়েছিল সমুদ্রগর্ভে। ফের ধসে পড়ল ৪ নম্বর রাস্তায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ফুট কংক্রিটের রাস্তা। কপিলমুনির মন্দির সংলগ্ন এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে পুণ্যার্থীদের সাগরে নামার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী নিম্নচাপও পূর্ণিমার গতকাল থেকে কোটালের জেরে সুন্দরবন জুড়ে দুর্যোগের ভ্রুকুটি। আজ রাত থেকে একাধিক জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তার মধ্যে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। ইতিমধ্যে থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি, তবে ঝড়ো হাওয়া সেভাবে নেই। ইতিমধ্যে প্রশাসনের তরফ থেকে বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে মৎস্যজীবীদের উদ্দেশ্যে মাইকিং। এছাড়া গঙ্গাসাগরে আগত পর্যটকদের উদ্দেশ্যে প্রশাসনের তরফ থেকে মাইকিং করে ৬নম্বর ঘাটে স্নান করার জন্য আবেদন করা হচ্ছে। এর মধ্যে গঙ্গাসাগরে দেখা দিয়েছে ভাঙন। একদিকে উত্তাল সমুদ্র অন্যদিকে মন্দির চত্বরে ভাঙন দুই ফলায় বিদ্ধ কপিলমুনির আশ্রম চত্বর। আতঙ্কে রয়েছেন পুণ্যার্থী থেকে সাধারণ দোকানদাররা।
আরও পড়ুন: আপ দুরন্ত এক্সপ্রেসে আগুন, আতঙ্কে যাত্রীরা
চতুর্থবারের ভাঙনে একের পর এক দোকান এক থেকে পাঁচ নম্বর সমস্ত রাস্তাটাই সমুদ্রগর্ভে চলে গিয়েছে। রাস্তার পাশে থাকা গাছ ইলেক্ট্রিকের পোস্টগুলি দোকান ঘর সবই ভেঙে পড়েছে। ইতিমধ্যে দোকানের মালিক ও বিদ্যুৎ দফতরের লোকেরা মালপত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কপিলমুনির মন্দিরের সামনে মেলা চত্বরের ভাঙন। ৪৩০ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান মন্দির থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচকিলোমিটার দূরে তৈরি হয়েছিল প্রথম আদি কপিল মুনির মন্দির। ওই মন্দির নদী গর্ভে তলিয়ে যাওয়ার পর ১৯৬১ সালে দ্বিতীয় মন্দির, ১৯৭৪ সালে তৃতীয় মন্দিরটি সমুদ্রগর্ভে চলে যায়। জেগে আছে চতুর্থ মন্দির টি যা এই বঙ্গবাসীর আবেগ, গর্ব। ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তমধর্মীয় মেলা। এইভাবে ভাঙতে থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে কপিল মুনির মন্দিরসহ মেলা চত্বর নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে। স্থানীয়দের আশঙ্কা আগের তিনটি মন্দিরের মতো বর্তমানের কপিলমুনির মন্দিরও ভাঙনে অচিরেই বিলীন হয়ে যেতে পারে সমুদ্রগর্ভে।
দেখুন ভিডিও