হাওয়াই: সৌরজগতের মধ্যে একমাত্র পৃথিবীর বুকেই প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে। আসলে একটি নক্ষত্রকে ঘিরে আবর্তনকারী গ্রহগুলির মধ্যে একটি বা দুটি গ্রহ এইরকম অবস্থানে থাকে, যেখানে জীবের জন্ম হওয়ার জন্য অনুকূল পরিবেশ থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের গবেষণায় এমন কিছু আশ্চর্যকর তথ্য উঠে এসেছে, যেগুলি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, পৃথিবী ছাড়াও শনির একটি উপগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে। এর স্বপক্ষে এবার একটি চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে। নতুন একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, শনির বৃহত্তম উপগ্রহ টাইটানের ৯.৭ কিলোমিটার পুরু এক বিশেষ আবরণের নীচে মিথেন গ্যাস আটকে থাকতে পারে। হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বাধীন এই গবেষণা দলটি দেখতে পেয়েছেন যে, টাইটানে অবস্থিত খাদগুলি অন্যান্য উপগ্রহে অবস্থিত খাদের তুলনায় কয়েকশো মিটার কম গভীর।
আরও পড়ুন: কানাডার হিন্দু মন্দিরে খালিস্তানীদের তাণ্ডব, ব্যাপক মারধোর দর্শনার্থীদের
এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তাঁরা কম্পিউটার মডেলিং ব্যবহার করে আরও অনুসন্ধান চালান। গবেষক শুর্মেয়ার এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “এই মডেলিং পদ্ধতি ব্যবহার করে, আমরা মিথেন ক্ল্যাথরেটের আবরণের পুরুত্ব পাঁচ থেকে দশ কিলোমিটার হতে পারে বলে ধারণা করতে পেরেছি।“ উল্লেখ্য, মিথেন ক্ল্যাথরেট বা মিথেন হাইড্রেট একটি কঠিন যৌগ যার জলীয় স্ফটিক কাঠামোর মধ্যে অনেক মিথেন গ্যাস আটকে থাকে। সেই কারণে এই যৌগ দেখতে অনেকটা বরফের মতো। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, মিথেন ক্ল্যাথরেট নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা করলে টাইটানের কার্বন চক্র এবং তার পরিবর্তনশীল জলবায়ু সম্পর্কে একটা সুস্পষ্ট ধারনা পাওয়া যাবে। এখন যদি টাইটানের বরফের খোলকের নিচে থাকা মহাসাগরে প্রাণের অস্তিত্ব থাকে, তাহলে সেই জীবনের যে কোনো চিহ্ন বরফের উপরিভাগে উঠে আসবে। ভবিষ্যতের কোনও বৈজ্ঞানিক মিশনে হয়ত এই সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, পৃথিবীর বুকে কেবলমাত্র সাইবেরিয়ার বরফে ঢাকা অঞ্চলে এবং আর্কটিক সমুদ্রের নীচে মিথেন ক্ল্যাথরেট হাইড্রেটের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: অন্ধকার মহাকাশ থেকে ভেসে এল বার্তা! চমকে উঠলেন বিজ্ঞানীরা, কি এমন ঘটল?
উল্লেখ্য, শনির উপগ্রহ টাইটানকে সৌরজগতের অন্যতম বাসযোগ্য জগৎ হিসেবে ধরা হয়। পৃথিবী ছাড়া এটি একমাত্র স্থান যেখানে বায়ুমণ্ডল রয়েছে এবং এর পৃষ্ঠে নদী, হ্রদ এবং সাগরের মতো তরল উপস্থিতি রয়েছে। এছাড়াও, টাইটানের নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডল এতটাই ঘন যে একজন মানুষ পৃষ্ঠে হেঁটে বেড়াতে বিশেষ কোনো প্রেসার স্যুট ছাড়াই থাকতে পারেন। তবে সেখানের মাইনাস ১৭৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের তীব্র ঠান্ডা থেকে বাঁচতে অক্সিজেন মাস্কের প্রয়োজন হবে।
দেখুন আরও খবর: