কলকাতা: শহরের রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আবর্জনা। কোথাও আবার ঘন্টার পর ঘন্টা জ্বলছে রাস্তার লাইট, কোথাও কল দিয়ে পড়ে যাচ্ছ জল, পুরসভা ও পঞ্চায়েতের দেখভালের অভাবেই নাগরিক পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। রাজ্যের নেতা-মন্ত্রী-পুলিশ ও পুর প্রশাকদের একাংশের কাজে ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন সরকারি জমি দখল, পানীয় জলের অব্যবস্থা, বেআইনি নির্মাণ নিয়ে একের পর এক বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। কলকাতা, হাওড়ার রাস্তার অবস্থা দেখে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, এবার কি আমাকে রাস্তা ঝাঁট দিতে বেরোতে হবে? নর্দমাও কী আমাকে পরিষ্কার করতে হবে?
মমতা বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় লাইট জ্বলেই যাচ্ছে। ভাবছে, সরকার টাকা দেবে। টাকা আসছে কোথা থেকে? এটা জনগণের টাকা। জল পড়ে যাচ্ছে। ঢাকলা খুলে বিক্রি করে দেয়। তাহলে অটোমেটিক সিস্টেমে যাব না কেন আমরা? বালতি রাখলে জল পড়বে। কোথাও রাস্তা দখল হয়ে যাচ্ছে। খালি জমি পড়ে থাকলে দখল হয়ে যাচ্ছে। কোথাও আবার বর্জ্য নিকাশী ব্যবস্থা বেহাল। দিনের পর দিন রাস্তায় পড়ে রয়েছে নোংরা আবর্জনা। শুধু উপর দেখলে হবে? নীচে দেখতে হবে না? রাস্তা দেখে না, আলো দেখে না! শুধু ট্যাক্স বাড়ানো আর লোক বসাচ্ছে! প্রশাসন কেন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন খোদ তৃণমূল নেত্রী। পুরসভাগুলোর জঘন্য পারফরম্যান্স। কেন তৈরি করা হয়েছিল, জানি না। সবাই বলে, আলাদা পুরসভা করে দিন, কী লাভ, যদি জনতা পরিষেবা না পায়। পুরসভার চেয়ারম্যান থেকে নেতা-মন্ত্রীদের কাজ দেখে মনে হয়না এরা সবাই নির্বাচিত প্রতিনিধি।
ফুটপাতের দোকান নিয়েও সরব নিয়ে বলেন, ফুটপাতের দিকে তাকালে দেখা যাবে সেখান দিয়ে হাঁটাচলার জায়গা নেই। গড়িয়াহাট-হাতিবাগানে কখনও তাকিয়ে দেখিয়েছেন? কী অবস্থা ওখানে। ওয়েবেলের সামনের রাস্তা দিয়ে আসছিলাম। দেখলাম একের পর এক দোকান বসিয়ে দিয়েছে। কয়েকটা করে ত্রিপল লাগাচ্ছে, এক জন করে বসে পড়ছে। দিকে দিকে গড়িয়ে উঠেছে গাড়ির পার্কিং। পুলিশকে ভর্ৎসনা করে মমতা বলেন, সবাই চোখে ঠুলি পরে আছে! কারও চোখে কিচ্ছু পড়ছে না।
আরও পড়ুন: শিলিগুড়িতে জমি মাফিয়া চক্র চলছে, মেয়র গৌতম দেবকে তোপ মমতার
হাওড়া পুরসভা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। ‘রথীন যখন চেয়ারম্যান ছিল, তখন হাওড়ার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। হাওড়ার অনেক রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স ঢোকার জায়গা পর্যন্ত নেই। জঞ্জাল পরিষ্কার হয় না। যিনি দায়িত্বে আছেন তাঁকে বলছি… অমৃতা রায় বর্মণ, এসডিও। জমি কী করে দখল হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ টাকা নিয়ে এই সব করছে। দিয়ে-টিয়ে খাচ্ছেন। আমি খুব দুঃখিত। কিন্তু এ সব বলতে হচ্ছে। একটা গ্রুপ তৈরি হয়েছে, বলতেই হচ্ছে। হাওড়া পুরসভার প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী সব দায়িত্ব নিজের কাছে রেখেছেন। কোনও কিছু করার আগে কারও কোনও পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন মনে করে না। জনগণ পরিষেবা না পেলে পুরসভা-পঞ্চায়েত রেখে লাভ কী? আপনাদের লজ্জা করে না। আপনারা রাম-শ্যাম-যদু-মধু যাই হোন না কেন আমি কাউকে ছেড়ে দেব না।
দেখুন ভিডিও