
কলকাতা: রাজ্যের পুর বৈঠকে পুলিশ থেকে নেতা-কাউন্সিলরদের ধমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার নবান্ন সভা গৃহে রাজ্যের নেতা-মন্ত্রী-পুলিশ ও পুর প্রশাকদের একাংশকে মমতা বলেন,কেন্দ্র বেচে দিচ্ছে বাংলাকে। আর আপনারা নয়ছয় করছেন বাংলার সম্পত্তি। বাংলার সংস্কৃতি বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। সরকারি জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। জমি দখল, পুরসভার পরিষেবা থেকে বেআইনি বাড়ি নির্মাণ নিয়ে ক্ষুব্ধ মমতা। মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানান, এই সব এবার থেকে বরদাস্ত করা হবে না। যত বড়ই নেতা মন্ত্রী হোক কারও কোনও কথাই শুনব না।
মমতা বলেন, কেউ কেউ টাকা খেয়ে, আবার টাকা খাইয়ে একটা গ্রুপ তৈরু করেছে। আমি কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি, কোথাও যখন দখলদারি চলছে, তখনও কোনও অ্য়াকশন নেওয়া হচ্ছে না। যারা টাকা খাচ্ছে কোনও অ্য়াকশন নিচ্ছে না। তারা রাজ্যের ক্ষতি করছে। মনে রাখবেন এটা মানুষের টাকা তা নয়ছয় করার অধিকার কারও নেই। আমি মানুষকে ভালোবাসি। মানুষ যদি পরিষেবা না পায় তো পুরসভা (Municipality), পঞ্চায়েত রেখে কি লাভ। পুরসভাগুলির পরিষেবা নিয়ে প্রবল ক্ষোভ মমতার। কোথায়ও আলো জ্বলতেই থাকে, কোথাও জল বন্ধ করা হয় না। রাস্তা সারানো হয় না। তিনি বলেন, একটা ঢাকনা করলেও কেউ খুলে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
মমতার অভিযোগ, টেন্ডার নিয়ে চলছে দুর্নীতি। বালির এসডিপিওকে ধমক দেন মমতা। নিজেরাই টেন্ডার দিচ্ছেন, আর নিজেরাই থাচ্ছেন। এসডিপিও কেন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশ্ন তৃণমূলনেত্রীর।
আরও পড়ুন: কিচ্ছু কাজ হচ্ছে না পুরসভায়, কোন কোন পুরসভাকে ধমক মমতার?
শহরের বেআইনি নির্মান (Illegal construction) নিয়েও সরব হন মমতা। গড়িয়াহাট -হাতিবাগানের অবস্থা সব থেকে খারাপ। দোকানের পিছনে ফের লাল-কালো ত্রিপল খাটিয়ে বসেছে হকাররা। গোটা এলাকাটাকে নোংরা করে রেখে দিয়েছে। এবার কি আমি রাস্তা ঝাঁট দিতে নামব? খালি জমি, নতুন জায়গা পড়ে থাকলে বেআইনি-ভাবে চারতলা-পাঁচতলা তোলা হচ্ছে। কেউ কোনও অ্যাকশন নিচ্ছে না। যারা যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের ধরে গ্রেফতার করুন। বেআইনি নির্মান গুলিকে ভেঙে ফেলুন। কোনও বেআইনি জিনিস আমি মানব না। রাজ্য সরকারের জমি পাচ্ছেন, বেচে দিচ্ছেন। কে খাচ্ছেন, কে খাচ্ছেন না জানি না। নিশ্চয় দিয়েই খাচ্ছেন। আমি এই কথাগুলো বলার জন্য মোটেই খুশি নেই।
হাওড়া পুরসভার (Howrah Municipality) কাজ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,বেআইনি নির্মানের জেরে হাওড়ায় অ্যাম্বুলেন্স ঢোকার জায়গা নেই। হাওড়ার ১২টা বাজিয়ে দিয়ে গিয়েছে রথীন চক্রবর্তী। হাওড়ায় প্রচুর বেআইনি নির্মান হচ্ছে। প্ল্যান পাশ করার জন্য মানুষকে অনেক হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। অনলাইনে ব্য়বস্থা করে দিয়েছি। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। টাকার জন্য বেআইনিভাবে রাস্তার উপর যেখানে সেখানে অবৈধ নির্মাণ হলে পুরসভাগুলিকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। হাওড়ায় জঞ্জালের ভ্যাট নিয়মিত পরিস্কার হয় না। রাস্তায় ময়লা চলে আসে। রাস্তার লাইট জ্বলে যাচ্ছে, জল পড়ে যাচ্ছে। ভাবছে সরকারের টাকা। না এটা জনগণের টাকা। যারা টাকা নিতে উৎসাহী, তারা মনে রাখবেন, মানুষে জীবনের চেয়ে কোনও কিছু দামী নয়। আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত।
অন্য খবর দেখুন