কলকাতা: আরজি কর মেডিক্যাল (RG Kar Medical College Hospital) কলেজে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে একজনকে গ্রফতার (Man Arrested R G Kar Hospital Incident) করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম সঞ্জয় রায়। চিকিৎসকের কললিস্টে এই সঞ্জয়ের নাম ছিল। সেই সূত্র ধরেই সঞ্জয়কে ধরে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় বয়ানে অসঙ্গতি থাকায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। ঘটনার রাতে সঞ্জয়ের সঙ্গে আর কেউ সেমিনার হলে ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, ধৃত ওই যুবক হাসপাতালের কর্তব্যরত হোমগার্ড। তদন্তে নেমে পুলিশ চিকিৎসকের কললিস্টে ঘেঁটে নিরাপত্তারক্ষী সঞ্জয়ের নাম পায়। জানা গিয়েছে, গ্রাউন্ড ফ্লোরের সিসি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে, সঞ্জয় লিফ্টে করে রাত ২ টোর দিকে উপরে উঠতে। সেই সূত্র ধরেই সঞ্জয়কে আটক করে পুলিশ। তার জবাবে অসঙ্গতি মেলায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, মেডিক্যাল কলেজের এর্মাজেন্সি বিল্ডিংয়ের চার তলার যে সেমিনার হল থেকে তরুণীর দেহ উদ্ধার করা হয়, সেই হলঘরে কোনও সিসি ক্যামেরা ছিল না। মাঝে মাঝে ওই ঘরটিকে চিকিৎসকেরা বিশ্রাম নিতেন। অনেক সময় মহিলা চিকিৎসকেরা পোশাকও পরিবর্তন করতেন। তাই সেখানে ক্যামেরা ছিল না। তবে বাইরের বাকি অংশের ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেমিনার হলে তল্লাশি চালানোর সময় একটি ছেঁড়া হেডফোনের অংশ পাওয়া গিয়েছে। ওই সেমিনার রুমে কী ভাবে তা এল হেডফোন। না ওই হেডফোন ওই তরুণীর কি না, ঘটনার সঙ্গে হেডফোনের কোনও যোগ আছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গতকাল টালা থানায় নির্যাতিতার বাবার করা অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে শুক্রবার রাতেই যুবককে আটক করেছিল পুলিশ। তবে এই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত থাকতে পারে বলে পুলিশের অনুমান। উল্লেখ্য, এই সঞ্জয় নাকি বেসরকারি সংস্থার দ্বারা নিযুক্ত নিরাপত্তাকর্মী। এমনিতেই হাসপাতালে বহিরাগতদের অবাধ যাতাযাতের অভিযোগ উঠেছে। নিরাপত্তার দাবিতে পথে নেমেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: শ্বাসরোধ করেই খুন, ট্রেনি চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চাঞ্চল্য
শুক্রবার সকালে সেমিনার হলে নীল রঙের ম্যাট্রেসের উপর মৃত অবস্থায় উদ্ধার হন মহিলা চিকিৎসক। তাঁর মাথার কাছে ছিল ল্যাপটপ ও মোবাইল। তরুণী চিকিৎসকের পোশাক ছিল অবিন্যস্ত। দেহের নিচের অংশে পোশাক ছিল না। এই ঘটনায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন। ডিন অফ স্টুডেন্টস সহ ১১ জনের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, রাত ৩টে থেকে বোর ৬টার মধ্যে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ওই ট্রেনি চিকিৎসককে। মহিলা চিকিৎসকের ঠোঁটে, গালে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এমনকি এক্সট্রানাল ইনজুরির চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিক তদন্তের পর দিলেন বিস্ফোরক তথ্য। ফরেনসিক টিমের কথায়, মহিলা চিকিৎসকের গলায়, ঠোঁটে, গালে ‘মার্ক’ অর্থাৎ আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
দেখুন ভিডিও