কলকাতা: পৃথিবী ছাড়া সৌরজগতের আর কোনও গ্রহে কি প্রাণের সঞ্চার ঘটতে পারে? এখনও পর্যন্ত মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাছে এই প্রশ্নের সঠিক কোনও উত্তর নেই। তবে পৃথিবীর প্রতিবেশী মঙ্গল গ্রহে জীবনের অস্তিত্ব খোঁজার কাজ এখনও চলছে। কারণ, এই লাল গ্রহে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যেগুলি সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার দিকে ইঙ্গিত দেয়। আর এবার বিজ্ঞানীদের হাতে কিছু চমকপ্রদ তথ্য উঠে এল, যা এই দাবির সপক্ষে অকাট্য প্রমাণ হতে পারে। সম্প্রতি, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পালিওম্যাগনেটিক্স ল্যাবের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে যে, মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠ বর্তমানে শীতল, শুষ্ক এবং পাথুরে হলেও, সেখানের পরিস্থিতি দিন দিন বদলাচ্ছে। আসলে, মঙ্গল গ্রহ থেকে প্রাপ্ত কিছু প্রমাণ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, সেখানের চৌম্বক ক্ষেত্রটির প্রভাব ৪.১ বিলিয়ন (৪১০ কোটি) বছরে অনেকটাই কমে গিয়েছে।
সম্প্রতি, এই গবেষণাপত্রটি ‘নেচার কমিউনিকেশনস’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। জানা গিয়েছে, হার্ভার্ডের গবেষকরা সিমুলেশন এবং কম্পিউটার মডেলিং ব্যবহার করে মঙ্গল গ্রহের ‘ডায়নামো’-র বয়স নির্ধারণ করেছেন। আসলে ডায়নামো বলতে বোঝায়, গ্রহের কেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ স্থান থেকে উৎপন্ন চৌম্বক ক্ষেত্র। এই গবেষণায় মঙ্গলের বিভিন্ন খাদ নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সেই থেকে একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়েছে যে, এই খাদগুলি তখন সৃষ্টি হয়েছিল যখন মঙ্গলের ডায়নামো পোলারিটি রিভার্সাল-এর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল, যা পৃথিবীতে কয়েক লক্ষ বছরে একবার ঘটে। বিজ্ঞানীদের দাবি, ২০০ মিলিয়ন বছর আগে এই গ্রহের পৃষ্ঠে জলের উপস্থিতি ছিল। কিন্তু শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রের অভাবে মঙ্গল সৌর বায়ুকে প্রতিহত করার ক্ষমতা হারিয়েছিল। ফলে বায়ুমণ্ডল ও জলের ভাণ্ডার, সবই নষ্ট হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: আর বেশিদিন নেই, কবে ধ্বংস হবে পৃথিবী? দেখুন ভয়ঙ্কর ভবিষ্যদ্বাণী
প্রসঙ্গত, বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই মঙ্গল গ্রহে জীবনের অস্তিত্ব খুঁজছেন। গত মাসে নাসার এক গবেষণায় বলা হয়েছে যে, মঙ্গলের তুষার আবৃত অঞ্চলের নীচে জলের বরফের স্তরে মাইক্রোব্যাকটিরিয়া বেঁচে থাকতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, বরফের স্তরের নীচে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে, যা সালোকসংশ্লেষের কাজে লাগতে পারে। মঙ্গলে দুই ধরনের বরফ পাওয়া যায় – জলীয় বরফ এবং শুষ্ক বরফ। এই গবেষণার দলটি জমাট জলকে সম্ভাব্য জীবনের উৎস হিসেবে পরীক্ষা করেছে, যা গ্রহটিতে জীবনের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
দেখুন আরও খবর: