মথুরাপুর: ৪ জুনের পর আগামী ছয় মাস দেশে রাজনৈতিক ভূমিকম্প হবে বলে হুমকি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। বুধবার কাকদ্বীপ এবং মথুরাপুরে নির্বাচনী সভায় (Modi Election rally in Mathurapur) এ ব্যাপারে অবশ্য আর বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাননি তিনি। মোদি ওই সভায় তৃণমূল (Trinamool ) এবং ইন্ডিয়া জোটকে (India Alliance) ফের একহাত নেন। তাঁর দাবি, ৪ জুনের পর বাংলা-সহ গোটা দেশে নতুন করে বিকাশের কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি তাঁর দাবি, দেশ জুড়ে যে পরিবারতন্ত্র চলছে, তারও অবসান হবে ৪ জুনের পর।
বাংলায় প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির প্রশ্নে লাগাতার তৃণমূলকে আক্রমণ করে গিয়েছেন। ছাড় দেননি কংগ্রেস এবং তৃণমূলকে। তিনি প্রায় প্রতিটি সভায় নিয়ম করে বলে গিয়েছেন, কোনও দুর্নীতিবাজকে ছাড়া হবে না। সবাইকে জেলে ঢোকানে হবে। জনতাকে দিয়ে তিনি বলিয়ে নিয়েছেন, দুর্নীতিবাজদের শাস্তি চাই। দুর্নীতি প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, এখানে মন্ত্রীর বান্ধবীর ঘরে কোটি কোটি টাকা পাওয়া যায়। ইডি সারা দেশে ১৭ হাজার কোটি টাকা উদ্ধার করেছে। সেই টাকা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যি বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল ১২ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে।
রাজনৈতিক ভূমিকম্প বলতে প্রধানমন্ত্রী কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি ভোটের পর ক্ষমতায় এলে বিজেপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অল আউট নামবে? এমনিতেই বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, কিছু হলেই কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই, আয়কর-সহ যত কেন্দ্রীয় এজেন্সি আছে, তাদের কাজে লাগাচ্ছে। যদিও রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তাবড় বিরোধী নেতারা বরাবর দাবি করছেন, এবার আর বিজেপির ক্ষমতায় আসা হচ্ছে না। যে ছয় দফার ভোট হয়েছে, তাতেই বিজেপি ধরাশায়ী হয়ে গিয়েছে। এদিন বারুইপুরের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মোদিজি, আপনি আর সাতদিন মাত্র প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। আগামী মাসে আপনি আর প্রধানমন্ত্রী থাকবেন না।
আরও পড়ুন: তৃণমূল সবেতেই বলে, এটা হতে দেব না, কটাক্ষ মোদির
বুধবার দুই জনসভায় মোদি বলেন, তৃণমূল তুষ্টিকরণের জন্য দেশের সংবিধানেও হামলা করছে। আমাদের সংবিধানে দলিত, পিছিয়ে থাকাদের জন্য সংরক্ষণ দিয়েছে। কিন্তু তৃণমূল সেই সংরক্ষণও লুঠ করে মুসলমানদের ওবিসি সার্টিফিকেট দিচ্ছে। তৃণমূল বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নষ্ট করতে চায়। তিনি বলেন, তাই তারা মঠ এবং সন্তদের অপমান করে। তৃণমূলের একটাই এজেন্ডা, ওরা সবেতে কাটমানি খেতে চায়। বাংলার উন্নতির জন্য জন্য কেন্দ্র যা করতে চায়, তাতেই বাধা দিয়ে তৃণমূল বলে, এটা হতে দেব না। এটাই তৃণমূলের লব্জ হয়ে গিয়েছে।
মোদি বলেন, তোলাবাজি এবং কাটমানি নিয়েই ভাবনা তৃণমূলের। আবাস, রেশন থেকে মিড ডে মিলেও তৃণমূল কাটমানি নেয়। বাংলার পরিচয়কে ধ্বংস করছে তৃণমূল। আমরা গত ১০ বছরে ৪ কোটি গরিব মানুষকে পাকা বাড়ি তৈরি করে দিয়েছি। ১২ কোটি বাড়িতে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দিয়েছি। বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে ভারত। বিকশিত ভারতের জন্য বিকশিত বাংলাকে প্রয়োজন। তৃণমূল বাংলাকে বিকাশ থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে।
অন্য খবর দেখুন