কলকাতা: হরপ্পা, মজেঞ্জোদার-র মত প্রাচীন সভ্যতাগুলি নদীর তীরেই গড়ে উঠেছিল। এককথায়, নদী ছাড়া নগরায়ণ সম্ভব নয়। তাই সুস্থভাবে বাঁচতে হলে নদীকে বাঁচিয়ে রাখা জরুরি। আর অঙ্গীকারকে সামনে রেখেই কলকাতা পৌর সংস্থার পক্ষ থেকে প্রত্যেকবারের মত এই বছরও পালিত হল গঙ্গা উৎসব-২০২৪। এদিন লঞ্চে উঠে গঙ্গা ধারের ঘাটগুলি পরিদর্শন করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম সহ মেয়র পরিষদ সদস্য দেবাশীষ কুমার, তারক সিংহ, সন্দীপন সাহা ও অসীম বসু। সোমবার কলকাতা পৌর সংস্থার দ্বারা আয়োজিত গঙ্গা উৎসবের মূল উদ্দেশে ছিল গঙ্গা দূষণ রোধ করার অঙ্গীকার।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানান, কিছু অসাধু মানুষ গঙ্গাকে কিছু লোক ভ্যাট ভাবেন। এছাড়াও, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একরাশ বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, গঙ্গা কে রক্ষা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে এগিয়ে আসা উচিত। কিন্তু, কেন্দ্র কোনো রকম সাহায্য করছে না বলে অভিযোগ জানান মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “কিছু কিছু সংগঠন গঙ্গা দূষণ নিয়ে কাজ করছে। আমাদের কলকাতাবাসীদের গঙ্গা থেকেই জল দিতে হয়। তবে এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা গঙ্গা দূষণ নিয়ে সচেতন নই”। তাঁর দাবি, “আমাদের এসটিপি তৈরি করে গঙ্গাকে পরিষ্কার করতে হবে। তবে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে সামনে আসতে হবে”।
আরও খবর: দুর্গাপুজোয় রাজ্যে হিংসার অভিযোগ, পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
এই বিষয়ে মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন যে, গঙ্গা থেকে সব জায়গায় জল দেওয়া হয়। অথচ দিল্লিতে ওয়াটার মাফিয়া আছে। কিন্তু বাংলায় আমরা ধন্য যে আমাদের কাছে গঙ্গা আছে। তবে সেই গঙ্গাকেই আমরা দূষিত করে ফেলছে। তিনি বলেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী চান গঙ্গাকে নিয়ে মানুষ সচেতন হোক”। এদিন চিন্তা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, নিমতলা থেকে ঘাটে ভাঙন ধরছে। সেটা পোর্ট ট্রাস্ট এবং কেন্দ্রীয় সরকার কে দেখতে হবে বলে জোর দিয়ে বলেন তিনি। মেয়র বলেন, “এটা নিয়ে অনেক কাজ করার দরকার আছে। আমরা প্রত্যেক বছর গঙ্গা উৎসব করে থাকি। গঙ্গাকে বাঁচানোর জন্য মানুষকে সচেতন করতে হবে। গঙ্গায় ড্রেজিংয়ের করার খুব দরকার আছে। সেটা করতেই হবে”।
তবে, কালীপুজো এবং দীপাবলীর জন্য শব্দদূষণের সঙ্গে গঙ্গা দূষণের তুলনা করতে নারাজ। তিনি বলেন, “ শব্দ মাত্র একদিনের জন্য হয়। শব্দদূষণের মাত্রা দিল্লির থেকে কলকাতায় অনেকটা কম। শব্দদূষণ নিয়ে পুলিশ সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। অনেক জনকে আটকও করেছে। একদিন সব ঠিক করা সম্ভব নয়। তবে গঙ্গাকে বাঁচানো অনেক বেশি দরকার। গঙ্গা না থাকলে কলকাতার মানুষ বাঁচবে না”।
অন্য খবর দেখুন: