কত কি যে ঘটে এই দুনিয়ায়। নিরুপদ্রব জীবনে করোনা আসে, গোটা পৃথিবী আটকে যায় চার দেওয়ালের মধ্যে, সুনামি আসে ভেসে যায় ঘরবাড়ি, আমফান আসে, ডেঙ্গু আসে, দুর্ঘটনা ঘটে আবার চমকে দেবার মত ভালো খবর আসে। ভালো ভালো মানুষের কত শত গল্প ভেসে আসে, মৃত্যুর খবর আসে। খবরের কাগজের প্রথম পাতায় বড়বড় করে ছাপা হয় সে সব খবর। আপনার আমার জীবনে সেই খবর হাসি কান্না আনন্দ দুঃখ আনে। কিন্তু গতকাল একটা খবর পেয়ে আমি স্তম্ভিত, বাক্রুদ্ধ। বুঝুম্ভুল অবস্থা বোঝেন? ভাল বাংলায় যাকে বলে কিংকর্তব্যবিমুঢ়। আমার হাসা উচিত, নাকি গলা ছেড়ে কাঁদবো বুঝে উঠতে পারছি না। খবর টা হলো আমাদের দেশের প্রধান সেবক, আপাতত চা ওলা, চৌকিদারের পর ওটাই ওনার নাম, তো তিনি দেশবাসী কে বলেছেন এক দেশ এক নির্বাচন নিয়ে মানুষকে মতামত দিতে। ভাবা যায় নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) আপনার অ্যাডভাইস চাইছেন। আজ লটারির টিকিট কাটলে ফার্স্ট প্রাইজ আটকায় কে? যিনি প্রধানমন্ত্রীর পদে বসা ইস্তক শুধু আমাদের কী করিতে হইবে, কী কী করিতে হইবে ছাড়া একটা কথাও বলেন নি, সেই তিনি জানতে চাইছেন কী করা উচিত। এ কী কথা শুনি আজ মন্থরার মুখে? কখনও কোনও বিষয়ে তিনি এমনটা করেছেন বলে জানা নেই হঠাৎ আজ এই আবেদন? আপনারা আমাকে অ্যাডভাইস দিন। দেবো কি স্যর? দেবার আগেই তো শরীর ঝিমঝিম করচে, মাথার মধ্যে চাক্কি পিসিং অ্যান্ড পিসিংঅ্যান্ড পিসিং।
আসুন দেখা যাক ওনার এ তাবত বড় বড় সিদ্ধান্ত এবং সেই সিদ্ধান্ত নেবার সময়ে মানুষের ভূমিকা। কেউ একথা বলতেই পারেন যে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার সিদ্ধান্ত নেবে, সে সব সিদ্ধান্ত নেবার আগে মানুষের সঙ্গে কথা বলার কী দরকার? সত্যিই তো রোজকার কাজকর্মে সরকার প্রতিটা ক্ষেত্রে মানুষের মতামত নেবে কেন? যখন সেই মানুষের দেওয়া ভোটেই সরকার তৈরি হয়েছে। মজার কথা হলো পৃথিবীর এই বৃহত্তম গণতন্ত্রে সেই ৫২ সাল থেকে মোট ভোটারের ৫০% এর বেশি ভোট পেয়ে কোনও সরকারই তৈরি হয় নি। মোট ভোটার ১০০ জন, ভোট দেয়নি ২০ জন, ৮০ জন ভোটারের ৩০ জন একজনকে ভোট দিয়েছেন, বাকি হাজারগন্ডা দল মিলে ঐ ৬০ জনের ভোট পেলেও, কেউ পেয়েছেন ১৫, কেউ ১০, কেউ ৫ কেউ ৩। ফলে ৫২ সাল থেকে বেশির ভাগ সময়েই এমনকি যে ভোট পড়েছে তারও ৫০% না পেয়ে সরকার তৈরি হয়েছে বেশিরভাগ সময়ে, কয়েকবার যত ভোট পড়েছে তার ৫০% বা তার বেশি পেয়ে সরকার তৈরি হলেও মোট ভোটারের ৫০% পেয়ে এখনও কোনও সরকার তৈরি হয় নি। কিন্তু সে তো সংসদীয় গণতন্ত্রের ফ্যালাসি, গণতন্ত্রে আজব পাটিগণিত। ও কথা বাদ দিন। তারপরেও তো আমরা বলি যে গরিষ্ঠাংশের ভোট পেয়ে সরকার তৈরি হয়েছে, সে সরকার সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। পারে। দৈনন্দিন ব্যাপারে নিশ্চই পারে। কিন্তু যে সিদ্ধান্ত গোটা দেশের বা তার একপ্রান্তের বা এক বিশেষ ধর্মীয় বা জাতি গোষ্ঠির বিষয় হয় তাহলে তা নিয়ে সরকারের মত চাওয়াটা স্বাভাবিক। এর আগে বহুবার এমন হয়েছে। এমনও হয়েছে যে এক নির্বাচিত সরকার সিদ্ধান্ত নেবার আগে আলাদা করে ভোট করিয়েছে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে কি নেবে না তা নির্ধারিত হয়েছে সেই ভোটের রেজাল্ট এ। ধরুন বাংলা বিহার সংযুক্তিকরণ। দেশে কংগ্রেস সরকার, নেহেরু প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যে বিধান রায় মুখ্যমন্ত্রী। করে দিতেই পারতেন, হোক সংযুক্তিকরণ। আমরা নির্বাচিত কেন্দ্র আর রাজ্য সরকার মিলে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, সক্কাল সক্কাল বা রাত ৯ টায় রেডিও তে জানিয়ে দিলেই হতো যে বাংলা বিহার মিশে গ্যালো। কথাটা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাংলায় আন্দোলন শুরু হলো। কলকাতা উত্তর পশ্চিমে উপনির্বাচন, সিপিআই মোহিত মৈত্রকে দাঁড় করায়, কংগ্রেস আইনজীবি অশোক সেন কে। সি পি আই জিতে যায়, সংযুক্তিকরণের প্রস্তাব বাতিল হয়। কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার বা রাজ্যে কংগ্রেস সরকার মানুষের রায় মেনে নেন। কারণ গণতন্ত্র মানে মানুষ, সংখ্যা নয়। অতএব মানুষ যদি না চায় তাহলে তা জোর করে মানুষের ওপরে চাপানো যায় না। চাপানো উচিত নয়। মানুষের ভালোর জন্য হলেও নয়। দেশ বিপন্ন, বাইরের শত্রুরা দেশ কে শেষ করার পরিকল্পনা করছে, অতএব দেশ ও দেশের মানুষ কে বাঁচাতে জরুরি অবস্থা। মানুষ জানলো না তার মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়ে যাওয়া হলো। ফল? যেদিন মানুষ সুযোগ পেলো, সেদিনই নিরন্ধ নির্মম পতন। আবার যুবকদের চাকরি হবে, বাণিজ্য হবে রাজ্যের অর্থনীতির বিরাট উন্নতি হবে বলে সিঙ্গুরের ৩ ফসলা, ৪ ফসলা জমি অধিগ্রহণ করা হলো, হয়তো সত্যিই উন্নতি হতো, হয়তো হতোনা, জানা গ্যালো না। কিন্তু প্রায় জগদ্দল পাথরের মত শক্ত পোক্ত সরকার যার ছিল ২৩৫ সে ৩৫ হয়ে গ্যালো। অথচ ঐ একই সরকার একরের পর একর জমি নিয়েছে রাজারহাট টাউন তৈরি করার জন্য, মানুষ ছিল সেই প্রকল্পের সঙ্গে, প্রকল্প হয়েছে। কিন্তু জোর করে অধিগ্রহণ মানুষ মেনে নেয় নি।
সংসদীয় গণতন্ত্রে বারবার প্রমাণিত হয়েছে যে ভোটে জেতার পরেও শাসকদল বড় সিদ্ধান্তের আগে যদি মানুষের সংগে, কি বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলেন, তাহলে সেই সরকার মানুষের সমর্থন পায়।
নরেন্দ্র মোদির ইতিহাস কিন্তু এক্কেবারে আলাদা। উনি আলোচনা করতে চান না, আলোচনা করাই ওনার ধাতে নেই। ভাবখানা হল আমি নরেন্দ্র মোদী বলছি, ব্যস। সেই হেন নরেন্দ্র মোদী এতদিন পরে অ্যাডভাইস চাইছেন, মানুষের কাছ থেকে।
উনি ক্ষমতায় আসার পরে উনি বলেছিলেন কালাধন ওয়াপস লাউঙ্গা, তো কালাধন তো পিসির কুলুঙ্গিতে রাখা আমসত্ব নয় যে লাউঙ্গা বললেই আসবে। উনি কি কাউকে জিজ্ঞেস করেছিলেন? আম আদমি ছেড়েই দিলাম, কোনও পন্ডিত অর্থনীতিবিদ কে? কারোর অ্যাডভাইস চেয়েছিলেন? প্রশ্নই ওঠে না। এখনও পর্যন্ত যিনি নিজের পছন্দের বাইরে একজন সাংবাদিকের মুখোমিখি হন নি, যিনি আজ পর্যন্ত একটা সাংবাদিক সম্মেলন করেন নি, তিনি কেন কাউকে জিজ্ঞেস করবেন? কালাধন আটকাতে ঘোষণা দিলেন, না খাউঙ্গা না খানে দুঙ্গা। এবং একদিন রাত্রে হঠাৎ তাঁর ঘোষণা পাঁচশ, হাজার এর নোট বাতিল। এত বড় সিদ্ধান্ত, সারা দেশের প্রতিটা মানুষ এই সিদ্ধান্তের আওতায়, তিনি চাইলেন অ্যাডভাইস? না। প্রশ্নই নেই। চমকে দিতে ভালো বাসেন মোদী জী। করে দিলেন। সারা দেশ জুড়ে মানুষ লাইনে, সারা দেশ জুড়ে বিশৃঙ্খলা। সমস্ত অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মারাত্মক সিদ্ধান্ত, ফল খুব খারাপ হবে। অ্যাডভাইস শোনার কোনও অভ্যেসই ওনার নেই।
আরও পড়ুন: Fourth Pillar | আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন শেষ? নাকি চলবে?
কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়া হবে। তার কমাস আগে বিজেপি পিডিপি সরকার চালিয়েছে। পিডিপির সঙ্গে মতপার্থক্যে সরকার ভেঙে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছে। বিধানসভার ভোট সামনে। লোকসভার অধিবেশন চলছে। কাশ্মীরের সমস্ত রাজনৈতিক নেতাদের বন্দী করে ঘোষণা করে দেওয়া হয়ে গ্যালো ৩৭০ ধারার অবসান। ব্যস, কেবল ঘোষণা। সেই রাজ্যের মানুষের মতামত? সে সবের তোয়াক্কা মোদীজী করেন না। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী্দের, দেশের দুজন সাংসদ, বিধায়কদের জেল এ পাঠিয়ে দেওয়া হল। আবার নির্বাচন হচ্ছে সেটাও ওনার ইচ্ছেতে, রাখবেন উনি, উনিই মারবেন। মোদীজী র গণতন্ত্র।
তিন তালাক তুলে দেওয়া হবে। আমি তো নিশ্চই এমনকি মুসলমান সমাজেরও অনেকে মনে করেন এই প্রথা তুলে দেওয়া উচিত। কিন্তু এক বিরাট সংখ্যক মুসলমান এটাও মনে করেন যে এটা তাঁদের ধর্মীয় রীতিনীতি, তো তাদের সঙ্গে কথা হোক, তাদের বোঝানো হোক, তাদের মধ্যে সেই প্রচার চালানো হোক। তা নয়, হিন্দু জমায়েতে গলা তুলে বলা যে আমরা মুসলমানদের তিন তালাক তুলে দিলাম, এটা ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি, হিন্দু মেজরিটি ভোট পোলারাইজেশনের রাজনীতি। সেই সত্যি টা লুকিয়ে তিনি ‘সমাজ সুধারক’ হচ্ছেন, কতজন মুসলিম ধর্মগুরুর সঙ্গে তিনি কথা বললেন? বলতে চাইলেন? তুলে তো দেওয়াই উচিত, কিন্তু তা তো তাদেরকে সঙ্গে নিয়েই করতে হবে। দক্ষিণে এখনও দেবদাসী প্রথা আছে, দেশে এখনও নমঃশুদ্রদের পুকুরের জল নিতে দেয় না ব্রাম্ভণরা, শবরি মালাই তে ঢুকতে দেওয়া হয়না মহিলাদের, আদালত বললেও না। মোটাভাই এর নিজের রাজ্যে রাস্তায় প্রকাশ্যে উলঙ্গ হয়ে সাধুদের মিছিল, এখনও মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ। এদিকে উনি সমাজ সুধারক। উনি মুসলমান সমাজের উন্নতির জন্য নয়, নিজের দলের ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানোর জন্য করলেন এই কাজ। এবং অ্যাডভাইস? আগেই বলেছি, ওসব মোদিজীর পোষায় না।
নাগরিকত্ব আইন সংশোধন। আনলেন, পাশ করালেন। অ্যাডভাইস? ওহ কোন চিড়িয়া কা নাম হ্যায়? কেবল মনে করুন ২০০৮। আমাদের দেশের বন্ধু, নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভূটান, মায়নামারের সঙ্গে সবে সম্পর্ক ভালো হচ্ছে, আর পাকিস্থানের সঙ্গে তো বরাবরের খারাপ সম্পর্ক। আফগানিস্থানের সঙ্গেও আমাদের ভালো সম্পর্ক, হামিদ কারঝাই এসেছিলেন আমাদের স্বাধীনতা দিবসে অতিথি হয়ে। হঠাৎ সংসদে দাঁড়িয়ে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন যে হিন্দুরা অত্যাচারিত। যদি হিন্দুরা পাকিস্তান, বাংলাদেশ আফগানিস্তান সব দেশ থেকে শরণার্থী হয়ে আসে তাহলে আমরা তাদের নাগরিকত্ব দেব। হিন্দু ছাড়াও শিখ, পারসি, জৈন বা বৌদ্ধদের কথাও বলা হয়েছে। বাদ পড়েছেন মুসলমান রা। স্বাধীনতা ছেড়ে দিন, সেই কবে কোন প্রাচীন কালে আমরা বলেছিলাম বসুধৈব কুটুম্বকম। সেই আমরা যাদের সংবিধানে লেখা আছে যে আমরা সেকুলার, আমরা অসাম্প্রদায়িক, সেই আমরা ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেবার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমাদের এতদিনের গর্ব আমাদের অসাম্প্রদায়িক সমাজ ও রাষ্ট্র গোল্লায় গ্যালো। মোদীজী কারোর অ্যাডভাইস নিয়েছিলেন? আপনি কি পাগোল? ফল কী হলো? বাংলাদেশ আর আফগানিস্তানের সঙ্গে মন কষাকষি। শ্রীলঙ্কা চীন থেকে যে পরিমাণ ধার নিয়েছে তাতে তাদের সমর্থন ভুলে যান, নেপাল চীন এর সম্পর্ক অনিবার্যভাবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে খাদের ধারে এনে দাঁড় করিয়েছে, বাংলাদেশ আর আফগানিস্তানও সেই দলে ঢুকে পড়েছে, আমাদের হাতে আছে পেনসিল। মোটাভাই বাংলাদেশীদের উইঁপোকার মত পিশে মারার কথা বলছেন, দিল্লির সর্বত্র বাঙালি নয় বাংলাদেশী রোহিঙ্গা দেখছেন। যা হবার তাই হচ্ছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এসব করার আগে কী আমাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন? যে আপনারা বলুন কী করা উচিত। না উনি তা করেন নি, করবেনও না। কিন্তু আইন পাস হয়ে গেছে।
জি এস টি। মধ্যরাতে স্বাধীনতা এসেছিল, তাই জহরলাল নেহেরু সংসদের অধিবেশনে এসেছিলেন রাতে, রাত ১২ টার সেই বিখ্যাত ভাষণ, ‘AT THE STROKE OF THE MIDNIGHT HOUR, WHEN THE WORLD SLEEPS, INDIA WILL AWAKE TO LIFE AND FREEDOM’ তো মোদিজীর ও মনে হলো মাঝরাতে কিছু একটা করা যাক। জি এস টি লাগু করার জন্য মধ্যরাতের তো কোনও দরকার ছিলনা, কিন্তু ওনার নাটক দরকার, মাঝরাতে জি এস টি লাগু। তারপর থে ৭১ বার সংশোধনী এসেছে যা প্রমাণ করে বিলটি র প্রস্তুতি ছিলনা, এমনকি এখনও কিছু পরিবর্তন হতে পারে। কার অ্যাডভাইস চেয়েছিলেন, প্রধান সেবক? কারোর না। উনি আর আমাদের জিরো বাজেট তত্ত্বের উদগাতা অসীম দাশগুপ্ত ছাড়া সব্বাই জানতেন এ বিল তাড়াহুড় করে আনা হচ্ছে। তাতে মোদীজীর কিসসু এসে যায় না।
মোদিজী এসবক্ষেত্রে প্রায় অরণ্যদেব, উনি চাইলে কথা বলবেন, উনি মনে করলে দেখা দেবেন, নইলে নয়। ট্রাম্প আসবেন দেশে। এমনিতেই কালো কুলোদের দেশে সাদা চামড়াদের বড্ড কদর, তার ওপর ম্যারিকা, তার ওপর মোদীজীকে জড়িয়ে ধরে, তারও ওপরে ট্রাম্প সাহেব ই একমাত্র বিশ্বের রাজনীতিবিদ যিনি প্রেসের সামনেই হাসতে হাসতে বলেছিলেন, মোদিজী ভালোই ইংরেজি বলেন। কি সার্টিফিকেট। উনি বাইডেনকে জড়িয়ে ধরবেন। যখন করোনা ছড়াচ্ছিল। সব্বাই বন্ধ করছিল তাদের এয়ারপোর্ট, উনি হাট করে খুলে ট্রাম্প এর রাধুঁনি সমেত সব্বাই কে নিয়ে এসেছিলেন। তারপর সম্বর্ধনা। কাউকে জিজ্ঞেস করেছিলেন? এবং তারপর অবকি বার ৪০০ পার, এক ধাক্কায় ২৪০ এ নামিয়ে দিয়েছে মানুষ। উনি মন্ত্রী সভাতে যে এক দেশ এক নির্বাচন পাস করে দিলেন, তাই নিয়েই আবার মত চাইছেন, মানুষের মতামত।
এতদিন পর হঠাৎ তাঁর জ্ঞান ফিরেছে? আজ্ঞে না, এতদিন পর সব লেবড়েছে, কী হচ্ছে, কী হতে পারে বুঝে উঠতে পারছে না। এমন এক সময়ে তিনি জানতে চাইছেন, আমাদের মতামত। মিটিং ডাকছেন সিদ্ধান্ত নিতে, কমিটি তৈরি করছেন, ওয়াকফ বিল সমেত তিন তিনখানা বিল ঠান্ডা ঘরে পাঠালেন। এবং আমাদের মতামত জানতে চাইছেন। আমাদের মতামত? বলি কি অনেক হয়েছে। এবার ক্ষ্যামা দিন। দেশ টা দাঁড় করাতে একজন বিবেচক মানুষের বড্ড দরকার। আপনার মত অবিবেচক মানুষের হাতে দেশ তুলে দেওয়া টা বড্ড ভুল হয়ে ছিল। এবার আসুন।
হ্যাঁ আমরা পার্টিসিপেটরি ডেমোক্রাসি চাই, আমরা চাই আমাদের সরকার আমাদের মতামত নিক, বিশেষজ্ঞ দের মতামত নিক। আমাদের জানানো হোক, কে কে কী কী বলছেন, তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। গ্রহ নক্ষত্র দেখে দেশ চালানোর সিদ্ধান্ত নিলে ভরাদূবি হবেই। অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে, এবার থামান। মানুষ সিদ্ধান্ত নিন আগামী ভারতবর্ষের নতুন রূপরেখা তৈরি হোক।
দেখুন ভিডিও