
কলকাতা: পুজোর আগেই বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের তিন রাজ্যকে বন্দে ভারত ‘উপহার’ দিতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুর্গাপুজো বাংলার তথা দেশের জাতীয় উৎসব। আপামর বাঙালিই শুধু নয়, গোটা ভারতে নবরাত্রি ও দশেরা হল বছরের সেরা উৎসব। তার আগেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাকে দুটি বন্দে ভারত (Vande Bharat) ‘পুজো উপহার’ দিতে চলেছে রেল। ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম রূপকার নীতীশ কুমারের পাটনা থেকে হাওড়া চলাচল করবে একটি। অন্যটি বিরোধীদের শরিক দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা, তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের রাঁচি থেকে চলাচল করবে। অর্থাৎ, পুজোর আগে বিরোধী জোটের তিন মুখ্যমন্ত্রীকে বন্দে ভারত উপহার দিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সংসদের বিশেষ অধিবেশনে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করাতে সব দলকে একছাতার তলায় এনেছেন মোদি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, বিলের এবং বিজেপির রাজনৈতিক চালের সমালোচনা করলেও বিরোধীদের অবস্থা সাপের ছুঁচো গেলার মতো। এর মধ্যেই নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে শনিবার একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামের শিলান্যাস করলেন মোদি। লোকসভা ভোটের আগে মোদির একের পর এক কৌশলকে টেক্কা দিতে পারছে না বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: হেরিটেজ তকমা শান্তিনিকেতনের, তবু বন্ধ রবিঠাকুরের ছাপাখানা
শুধু বাংলা, বিহার, ঝাড়খণ্ড নয়। আগামিকাল, ২৪ সেপ্টেম্বর মোট ৯টি বন্দে ভারতের সূচনা করবেন মোদি। সেগুলি হল, কাসারগোড়-তিরুবনন্তপুরম। সিপিএমের রাজ্যও পাচ্ছে নতুন ট্রেন। কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানের জয়পুর এবং উদয়পুরের মধ্যে চলাচল করবে একটি বন্দে ভারত। বিজয়ওয়াড়া-চেন্নাই অর্থাৎ অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুর মধ্যে চলবে আরও একটি। এই দুটি রাজ্যের কোনওটিতেই নেই বিজেপি। তামিলনাড়ুর ডিএমকে মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনও বিরোধী জোটের অন্যতম শরিক। তিরুনেভেলি-চেন্নাই (তামিলনাড়ু) পাবে আর একটি ট্রেন। বিজেপির গুজরাতের জামনগর-আমেদাবাদ পাচ্ছে একটি। ভারত রাষ্ট্র সমিতির মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের জন্যও পুজো উপহার বন্দে ভারত পাচ্ছে সেকেন্দ্রাবাদ। চলাচল করবে সদ্য বিজেপিকে বিপুল ভোটে হারিয়ে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়া কংগ্রেসের কর্নাটকের বেঙ্গালুরু পর্যন্ত। আর একটি বন্দে ভারত পাচ্ছেন বিজেপির বন্ধুদল বিজু জনতা দলের নেতা-মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক।
ফলে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে প্রায় ছেঁটে ফেলে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস সহ ইন্ডিয়া জোটের রাজ্যগুলিই পুজো উপহার পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার কৌশিক মিত্র বিষয়টিকে বাংলাকে পুজো উপহার বলে ব্যাখ্যা করেছেন। এমনিতেই হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি, পুরী-হাওড়া এবং নিউ জলপাইগুড়ি-গুয়াহাটি তিনটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলছে।
বাংলাকে মোদির পুজো উপহার বলে কেন্দ্র ব্যাখ্যা করতে চাইলেও রাজ্যের তৃণমূল নেতৃত্ব তা মানতে নারাজ। তৃণমূলের নেতারা বলছেন, ভারতীয় রেলের উন্নতি এবং বাংলার জন্য নতুন নতুন প্রকল্প চালু করেছেন মমতা। এখন ভোটের বাজার গরম করতে মোদির জুমলা সরকার মানুষকে বোকা বানাতে চাইছে। বাংলায় যা উন্নয়ন হয়েছে, তাতে রাজ্যের মানুষ মমতার পক্ষেই রয়েছেন। মোদির চাল অগ্রাহ্য করবেন সচেতন ভোটাররা।