কলকাতা: পণের টাকা না দেওয়ার সন্তানের সামনেই স্ত্রীকে জ্যান্ত পুড়িয়ে খুন করেছিল স্বামী। গ্রেটার নয়ডার (Greater Noida Murder) এই ভয়ঙ্কর ঘটনার বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে দেশজুড়ে। বধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার চার অভিযুক্তই। নিক্কি ভাটিকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরের উপরেই।ভোরে সিরসা টোল এলাকা থেকে নিহত নিকি ভাটির ভাশুর রোহিত ভাটিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ধরা পড়েছেন শ্বশুর সত্য বীর। অভিযোগ, নিকিকে হত্যার ঘটনায় জড়িত ছিলেন তাঁরাও। এর আগেই নিক্কির স্বামী বিপিন ভাটি ও তাঁর মা দয়া ভাটিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সিরসা টোল এলাকা থেকে রোহিতকে ধরা হয়েছে। ২২ অগাস্ট কাসনা থানায় ভাটি পরিবারের চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। সেই রাত থেকেই ফেরার ছিলেন সকলে। রবিবার সন্ধ্যায় জেআইএমএস হাসপাতালের কাছ থেকে মৃতার শাশুড়ি দয়াবতীকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশের গুলিতে আহত ছেলে বিপিনকে দেখতে লুকিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন মা। পথে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার ভোরে ধরা পড়েছেন বাকি দুই অভিযুক্তও। অন্য দিকে, অভিযুক্ত বিপিনকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: রেখা গুপ্তার নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে সরানো হল সিআরপিএফ-কে!
২০১৬ সালে ভাটি পরিবারের দুই ছেলে বিপিন এবং রোহিতের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল নিকি এবং তাঁর দিদি কাঞ্চনের। দুই মেয়ের বিয়েতে সাধ্যমতো যৌতুক দিয়েছিল তাদের পরিবার। স্করপিয়ো গাড়ি, এনফিল্ড বাইক, নগদ, সোনা— নানা উপহার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এত কিছুর পরেও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা খুশি ছিলেন না। আরও পণ চেয়ে প্রায়ই দুই বোনকে মারধর করা হত বলে দাবি। অন্য মহিলাদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু করে দুই ভাই। প্রতিবাদ করলে মারধর করা হত দুই বোনকে। শেষমেষ প্রাণটাও কেড়ে নেওয়া হল নিকির শরীর থেকে।
নয়ডার ঘটনার তথ্য এবং ভিডিও সামনে আসতেই শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। অভিযোগ, যৌতুকের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে চলত অত্যাচার। নিকিকে বাপের বাড়ি থেকে ৩৬ লাখ টাকা নিয়ে আসার দাবিতে শুরু হয়েছিল চরম অত্যাচার। গত বৃহস্পতিবার রাতে ছোট্ট ছেলের সামনেই মাকে ব্যাপক মারধর করে গায়ে দাহ্য তরল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, জ্বলন্ত অবস্থায় বাঁচতে বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসেন নিক্কি ভাটি। তাঁকে ওই অবস্থায় দেখে উদ্ধার করে প্রতিবেশীরাই নিয়ে যান হাসপাতালে। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর হওয়ায় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। নিক্কির মৃত্যুর পর পুলিশে অভিযোগ করেন তাঁর দিদি কাঞ্চন। তিনিও ভাটি পরিবারেরই গৃহবধূ। তাঁর ও নিক্কির শিশুপুত্রের বয়ানেই সামনে আসে আসল ঘটনা।
অন্য খবর দেখুন