মস্কো: দীর্ঘ ২৪ বছর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে থাকার পর, একপ্রকার বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছেন বাশার আল আসাদ। রবিবার সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস থেকে পালিয়ে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো পৌঁছেছেন তিনি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন, সিরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। রবিবার সকালে দামাস্কাস থেকে পালানোর সময় আসাদকে একটি বিমানে উঠতে দেখা যায়। এরপর তাঁর গন্তব্য নিয়ে নানা ধোঁয়াশা তৈরি হয়। এমনকি, তাঁর বিমানের সঙ্গে কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে কি না, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়। তবে সোমবার রাশিয়ার বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানায়, আসাদ এবং তাঁর পরিবার মস্কো পৌঁছেছেন। পরে ক্রেমলিনের তরফে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, মানবিক কারণে আসাদকে রাশিয়ায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি কোথায় থাকবেন বা কীভাবে তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়নি। পাশাপাশি, পুতিন এবং আসাদের মধ্যে সরাসরি কোনও সাক্ষাৎ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র।
আরও পড়ুন: বিদ্রোহীদের হাতে অধিকৃত দামাস্কাস! হামলা চালালো আমেরিকা!
দীর্ঘদিন ধরে গৃহযুদ্ধ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতায় জর্জরিত সিরিয়া। সেখানে ২০১১ সাল থেকে গণতন্ত্রপন্থী বিদ্রোহীরা আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে। আমেরিকার সমর্থন পাওয়া সত্ত্বেও, রাশিয়ার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এতদিন আসাদের সরকার সিরিয়ায় টিকে ছিল। যুদ্ধবিমান সরবরাহ থেকে শুরু করে রুশ সেনাঘাঁটি তৈরি— আসাদের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য পুতিন সরকারের পক্ষ থেকে মোটামুটি সবরকমভাবে সাহায্য পেয়ে এসেছে আসাদ প্রশাসন। তবে দামাস্কাস বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর সেখানের পরিস্থিতি বদলে যায়। রাশিয়া এবার স্পষ্ট জানিয়েছে, নতুন পরিস্থিতিতে সিরিয়ার জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং দুই দেশের সম্পর্ক উন্নত করার দিকে নজর দেওয়া হবে। রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে আগ্রহী পুতিন। তবে ২০০০ সাল থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকা বাশার আল আসাদের রাজনৈতিক অধ্যায় কার্যত এখানেই শেষ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দেখুন আরও খবর: