কলকাতা: ভারতীয় হকির সোনালি দিন কি আবারও ফিরে আসছে? ৪৪ বছর পর আবারও সোনা জয়ের সুযোগ ভারতের সামনে। প্যারিস স্পোর্টস এরিনায় ইতিমধ্যেই সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন হরমনপ্রীত সিং-অভিষেক-মনপ্রীত সিংরা। এদিন ৪২ মিনিট ১০ জনে খেলেও ফাইনাল স্কোরলাইন ছিল ১-১। ভারতের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন হরমনপ্রীত সিং। পেনাল্টি শ্যুট আউটে গ্রেট ব্রিটেনকে ৪-২ তে কিস্তিমাৎ করে টিম ইন্ডিয়া (Indian Hockey Team)।
এই ম্যাচে অমিত রুইদাসকে লাল কার্ড দেখানো হয়। ভিডিয়ো আম্পায়ার বেঞ্জামিন গয়েন্টজেনের পরামর্শে দ্বিতীয় কোয়ার্টারের চতুর্থ মিনিটে লাল কার্ড দেখিয়ে বার করে দেওয়া হয় ভারতীয় দলের রক্ষণের অন্যতম ভরসা রুইদাসকে। টেলিভিশন রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে বল দখলের লড়াইয়ের সময় রুইদাসের স্টিক ব্রিটেনের এক খেলোয়াড়ের মাথায় লেগে যায় অসাবধানতাবশত। বেঞ্জামিন দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ড আম্পায়ার সিন রাপাপোর্টকে বলেন ‘ইচ্ছাকৃত আঘাত’ করা হয়েছে। তিনি লাল কার্ড দেখানোর সুপারিশ করেন। বাকি সময় ১০ জনে খেলতে হল ভারতীয় দলকে। এবারের অলিম্পিক্স হকিতে এই প্রথম কোনও খেলোয়াড়কে লাল কার্ড দেখানো হল।
কিন্তু তাতেও আটকানো যায়নি ভারতীয় দলকে। ১০ জন হয়ে যাওয়ার পর রণকৌশল বদলে ফেলেন ভারতীয় দলের কোচ ক্রেগ ফুলটন। ম্যাচের ২২ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে ভারতকে এগিয়ে দেন অধিনায়ক হরমনপ্রীত। ভারতীয় দল কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম থেকেই রক্ষণাত্মক রণকৌশল নেয়। এগিয়ে যাওয়ার পর আরও বেশি রক্ষণাত্মক হয়ে যায় ভারতীয় দল। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ২৭ মিনিটে ব্রিটেন সমতায় ফেরে মর্টন লির গোলে। দ্বিতীয় কোয়ার্টারের বাকি সময় ভারতের রক্ষণের উপর প্রবল চাপ তৈরির চেষ্টা করেন ব্রিটেনের খেলোয়াড়েরা। কিন্তু ভারতের গোলরক্ষক পিআর শ্রীজেশকে পরাস্ত করতে পারেনি গ্রেট ব্রিটেনের খেলোয়াড়রা। অনবদ্য খেললেন হকিজীবনের একেবারে শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা ভারতীয় দলের গোলরক্ষক। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত আক্রমণের ঝাঁজ বজায় রেখেও দ্বিতীয় গোলের মুখ দেখতে পায়নি ব্রিটিশেরা। হকিতে এক জন কম নিয়ে খেলা কঠিন। তবু এক সেকেন্ডের জন্য মনোবল হারায়নি ভারতীয় দল। তৃতীয় কোয়ার্টারের শেষে ভারতের এক খেলোয়াড় সবুজ কার্ড দেখায় ২ মিনিট ন’জনে খেলতে হয় ভারতীয় দলকে। তাও সুবিধা করতে পারেনি ব্রিটেন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৬০ মিনিটের লড়াই শেষ হয় ১-১ গোলে। ম্যাচ গড়ায় শুট আউটে। তাতেই মানসিক ভাবে পিছিয়ে পড়ে ব্রিটেনের খেলোয়াড়েরা। যার প্রভাব পড়ে শুট আউটেও। মঙ্গলবার সেমিফাইনালেও চক দে ইন্ডিয়ার আশায় আসমুদ্রহিমাচল।