পশ্চিম মেদিনীপুর: সরকারি খাতায় তিনি মৃত, বন্ধ লক্ষ্মীর ভান্ডারের (Lakshmir Bhandar) ভাতা। নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে হন্যে হয়ে বিভিন্ন দফতরে ঘুরছেন দাঁতনের গৃহবধূ। দিব্যি হেঁটে চলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে ভোটও দিয়েছেন। কিন্তু সরকারি খাতায় তিনি মৃত। আর সেই কারণে গত এপ্রিল মাস থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভাতা। নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে গত তিন মাস ধরে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন অফিসের দরজায়। ঘটনাটি ঘটেছে দাঁতন ১ ব্লকের জ্যোতি গ্রামের শোভা বেরার সঙ্গে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) স্বপ্নের প্রকল্প লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প। এবারে নির্বাচনে জয় পরাজয়ের অনেকটাই নির্ভর করেছিল এই প্রকল্পের সাফল্যের ওপর। এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে সাধারণ ২৫ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত মহিলাদেরকে মাসিক ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা ভাতা প্রদান করা হয়। গত এপ্রিল মাস থেকে সেই ভাতার পরিমাণ দ্বিগুণ করা হয়েছে। সাধারণ মহিলারা ৫০০ টাকার বদলে এপ্রিল মাস থেকে পাচ্ছেন হাজার টাকা ও তপশিলি, জাতীয় উপজাতির মহিলারা ১ হাজার টাকার জায়গায় পাচ্ছেন ১২০০ টাকা। দাঁতন ১ ব্লকের তররুই গ্রাম পঞ্চায়েতের জ্যোতি গ্রামের বাসিন্দা শোভা বেরা। গত এপ্রিল মাস থেকে সেই বর্ধিত টাকা, তাঁর একাউন্টে আর ঢুকছে না। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তিনি নাকি মৃত। সরকারি পোর্টাল বলছে মারা গিয়েছেন শোভা বেরা। আর সেই কারণেই বন্ধ তাঁর লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভাতা।
আরও পড়ুন: রাজনীতিতে পা রেখেই ছক্কা মধুপর্ণার, কী বললেন শুনুন
নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে বিগত তিন মাস ধরে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে ব্লক অফিস বিভিন্ন দফতরে ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি। শুক্রবার একইভাবে নিজের স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে আসেন দাঁতন ব্লক অফিসে। সমস্ত প্রমাণপত্র ফের জমা দেন ব্লকের জয়েন্ট বিডিওর কাছে। শোভা বেরা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন এপ্রিল মাস থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকা ডবল হয়ে যাবে। সেই মোতাবেক এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি নাগাদ ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট চেক করতে গিয়ে দেখি কোনও টাকা ঢোকেনি। ভেবেছিলাম হয়ত দেরি হবে টাকা আসতে। কিন্তু মে মাসে যখন পাস বই চেক করি তখন দেখি কোন ভাতার টাকা ঢোকেনি। স্থানীয় অঞ্চল অফিসে গিয়ে খোঁজ করে জানতে পারি সরকারি নথিতে বলছে আমি মৃত তাই আমার ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত তিন মাস ধরে বারবার বিভিন্ন দফতরে বারবার গিয়েছি দরখাস্ত জমা দিয়েছি সমস্ত প্রমাণপত্র জমা দিয়েছি। তাও কোনওভাবেই আমার লক্ষ্মীর ভান্ডার পাচ্ছিনা। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন আমি জলজ্যান্ত লোকটি আছি, এবারে ভোটও দিয়েছি। তার পরেও কেন আমাকে মৃত বলা হচ্ছে! জয়েন্ট বিডিও অরবিন্দ পাল বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে এসেছিলেন ওই গৃহবধূ। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি কি কারণে এই বিষয়টি ঘটেছে। আশা করছি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
অন্য খবর দেখুন