কলকাতা: আগামী বুধবার পর্যন্ত বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) মোতায়েন রাখার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। ভোট পরবর্তী হিংসার মামলার শুনানিতে এমনটাই নির্দেশ বিচারপতি হরিশ ট্যাণ্ডন ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে থাকবে কিনা মামলার শুনানির পর এখনও কোনো নির্দেশ দেয়নি ডিভিশন বেঞ্চ। আপাতত রায়দান স্থগিত। আগামী বুধবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে। যতদিন পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্ট রায় না দিচ্ছে ততদিন অর্থাৎ আগামী শুনানি পর্যন্ত রাজ্য কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। এর আগে ২১ জুন অর্থাৎ শুক্রবার পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের রাখার কথা বলা হয়েছিল। সেই সময়সীমা আরও বাড়ানো হল।
এই রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে জানায়, হাইকোর্টের নির্দেশ অভিযোগ জানানোর জন্য মত রাজ্য পুলিশের ডিজির দুটি ইমেইল আইডি দেওয়া হয়েছিল। ১৮ জুন পর্যন্ত সেখানে ৮৫৯ ইমেইল মারফত অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে ২০৪ টি কেসে এফয়াইয়ার হয়েছে। অর্থাৎ সেগুলো ভোট পরবর্তী হিংসার সঙ্গে যুক্ত। ১৭৫ টির ক্ষেত্রে ধর্তব্যযোগ্য অপরাধ নয়। ১৭৬টি ক্ষেত্রে কোনও অপরাধ কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, ৪৫ টি অভিযোগ পোস্ট পোল ভায়োলেন্সের সঙ্গে যুক্ত নয়। ২১৯ মিথ্যা অভিযোগ। ২৬ টি অভিযোগ অসম্পূর্ণ। ১৪ টি এখনও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্ষতিয়ে দেখে কেন্দ্র প্রয়োজন মনে করলে বাহিনী মোতায়েন রাখতে পারে সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত। কিন্তু রাজ্যের করা মূল্যায়ন কেন্দ্র পুরোপুরি খারিজ করে দিতে পারেনা। কিছু অভিযোগ আসছে মানেই কেন্দ্র বাহিনী মোতায়েন করতে হবে তা বলা যায়না। আদালতে জানায় এডভোকেট জেনারেল। বিচারপতি হরিশ ট্যাণ্ডন বলেন, আপনাদের হিসাব মতই ২০০ টির বেশি এফয়াইয়ার দায়ের হয়েছে। এগুলো কাম্য নয়। যেখান থেকে অভিযোগ আসছে, সেখানে পুলিশকে আরও সক্রিয় থাকতে হবে। আমরা চাই,সবাই নিরাপদে বাড়ি ফিরুক। সবটা মঙ্গলবারের মধ্যে করতে হবে। অশান্তি নিয়ে অনেক গুরুত্বর অভিযোগ এসেছে। আমরা বাস্তব চিত্র জানতে চাই ।
আরও পড়ুন: রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে
কেন্দ্রের এডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী বলেন, আদালত নির্দেশ দিলে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখতে আপত্তি নেই। কেন্দ্রের বক্তব্যের বিরোধিতা করে রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল বলেন, কেন্দ্র এটা বলতে পারেনা যে তাদের আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। আইন অনুয়ায়ী তাদের ক্ষমতা থাকলে আছে না থাকলে নেই।তারা বলতে পারেনা আদালত নির্দশ দিলে তারা বাহিনী রাখতে পারে। যে পরিস্থিতি আদালতের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে বাস্তব পরিস্থিতি ততটা খারাপ নয়। আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের নাম ফোন নম্বর আদালতের কাছে তুলে দিলেন। পাশপাশি বসিরহাটের ন্যাজাট ও মিনাখা থানার বাসিন্দা ও ডায়ামণ্ড হারবারের ফলতা থানা এলাকার কর্মীদের তথ্য দেন।
বিচারপতি বলেন, রাজ্য যেখানে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগের হিসাব দিচ্ছে। তখন আপাতত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পূর্বনির্দেশ বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত। বুধবার পর্যন্ত ওই নির্দেশ বহাল রাখা হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
দেখুন ভিডিও