কলকাতা: ‘মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম, হিন্দু মুসলমান’—এই পংক্তি শুধু কবিতার পাতায় নয়, বাস্তবের মাটিতেও ছায়া ফেলল দুর্গাপুরের (Durgapur) সোনারতরী বস্তিতে। রামনবমীর দিনটিকে শুধু ধর্মীয় উৎসবে সীমাবদ্ধ না রেখে ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ব আর মানবতার রঙে রাঙিয়ে তুললেন এখানকার মানুষজন।
সেদিনের মিছিলে যেমন দেখা গেল শেখ শাহাদাতকে, সকলকে নিজের হাতে ঠান্ডা শরবত খাওয়াচ্ছেন, তেমনই শেখ মতিউরের হাতে উড়ছে রামনবমীর পতাকা। ধর্ম আলাদা, কিন্তু উৎসবের স্পর্শ এক। “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার”—এই বার্তাটিই যেন স্পষ্ট হয়ে উঠল তাঁদের কাজে, কথায় আর হাসিমুখে।
আরও পড়ুন: সল্টলেকের অফিসপাড়ায় দুর্ঘটনা
সোনারতরী বস্তি, দুর্গাপুরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত এই জনপদ বহু বছর ধরেই সম্প্রীতির নিদর্শন বহন করে চলেছে। বাম আমলে তৈরি হওয়া বহুতল আবাসনে হিন্দু-মুসলিম, সবাই মিলেমিশে বাস করেন। ঈদে যেমন হিন্দুরা মুসলিমদের সঙ্গে একত্রে প্রার্থনায় শামিল হন, তেমনই পুজোতেও দেখা মেলে মুসলমানদের সহযোগিতা।
রামনবমীর মিছিলে আবালবৃদ্ধবনিতা মুসলিম প্রতিবেশীরা হিন্দু ভাইবোনদের হাতে তুলে দিলেন ঠান্ডা শরবতের গ্লাস। শেখ আসিফ বলেন, ‘‘আমরা এখানে সবাই মিলে থাকি, তাই একে অপরের আনন্দে সামিল হওয়া আমাদের কর্তব্য নয়, ভালোবাসার পরিচয়।’’ দীপক মানের কথায়, ‘‘ধর্ম আলাদা হলেও মন একটাই। এটাই তো ভারত, এটাই আমাদের সংস্কৃতি।’’
আজকের উত্তপ্ত রাজনৈতিক আবহে সোনারতরীর এই অনন্য উদাহরণ যেন এক শীতল পরশ। এখানকার মানুষ দেখিয়ে দিলেন, ধর্ম বিভাজন করে না, বরং ভালবাসা দিয়ে মানুষকে একত্র করে। এই বন্ধনের নামই তো প্রকৃত উৎসব।
দেখুন আরও খবর: