কলকাতা: আরজি কর মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court On R G Kar Incident) সোমবার চলছে দ্বিতীয় শুনানি। এদিন শুনানিতে সন্ধ্যা ৬টার পর ময়নাতদন্ত করা নিয়ে প্রশ্ন উঠল শীর্ষ আদালত। FIR দায়েরের আগে কী করে ময়নাতদন্ত হল?সেই প্রশ্ন তুললেন প্রধান বিচারপতি। রাজ্যের কাছে আদালত প্রশ্ন করে, FIR দায়েরের আগে কী করে ময়নাতদন্ত হল? সন্ধ্যা ৬ টার পর ময়নাতদন্ত করার আইন দেশের কোথাও নেই। এখানে কেন করা হল? কারা করেছে ভিডিওগ্রাফি? কোনও প্রমাণ আছে? কখন ময়নাতদন্ত করা হয়, তা নিয়েও সংশয়। দ্রুত দেহ সৎকার করার জন্য এটা করা হয়েছে’ আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজির।
সিবিআই শীর্ষ আদালতে জানায়, যখন গত ৯ অগাস্ট নিহত তরুণীর দেহ সকাল সাড়ে ৯ টার সময় পাওয়া গিয়েছিল সেমিনার হলে। তাঁর নিম্নাঙ্গের পোশাক খোলা ছিল, তখন অর্ধনগ্ন অবস্থায় ছিল। অন্তর্বাসও খোলা অবস্থায় ছিল। সারা শরীর জুড়ে ছিল আঘাতের চিহ্ন। ময়নাতদন্তের জন্য যে চালান হস্তান্তরের কথা তা নিয়ে এরপরেই প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, চালানটা কোথায়? দেহ যখন ময়নাতদন্তের জন্য হস্তান্তর করা হয়? এই চালানটি প্রয়োজনীয়। কারণ দেহের সঙ্গে সঙ্গে আর কী কী মেটিরিয়াল পাঠানো হয়েছিল সেটা সেখানে উল্লেখ থাকবে। জবাবে সিবিআই জানায়, আমাদের কাছে যে ফাইল দেওয়া হয়েছে সেখানে চালান নেই। এরপরেই প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, তাহলে চালান ছাড়াই ময়নাতদন্ত হয়ে গেল?
আরও পড়ুন: ডাক্তারদের কাজে ফেরার ডেডলাইন বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট
এরপর প্রধান বিচারপতি জানতে চান নির্যাতিতার মৃত্যুর সময় এফআইআর কখন নথিভুক্ত করা হয়েছে। দুপুর ২:৫৫ টায় এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং দুপুর ১:৪৭ টায় মৃত্যু শংসাপত্র তৈরি করা হয়েছিল। যদিও আইনজীবী কপিল সিব্বল যদিও সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা কোর্টকে জানান, পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রিপোর্ট ফাইল করা হয়েছিল রাত্রি সাড়ে এগারোটার সময়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা-সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ময়নাতদন্ত। কেন অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হল? প্রশ্ন করেন, এতক্ষণ ধরে কী হচ্ছিল? অপরাধের জায়গা সুরক্ষিত করতেই বা এত দেরি হল কেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ে টালা থানার ভূমিকাও।
এই ঘটনায় ফরেন্সিক রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে দেশের শীর্ষ আদালতে। সওয়াল জবাব চলাকালীন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, মৃতদেহ যখন উদ্ধার হয়, তখন পা ঘোরানো ছিল ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে। পশ্চাৎদেশ ভাঙা না হলে, পা এভাবে ঘোরানো সম্ভব নয়। ফরেনসিক রিপোর্টের সঙ্গে এক্স রে রিপোর্ট দেখার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। আইনজীবীর দাবি, নির্যাতিতার ভ্যাজাইনাল সোয়াব ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা উচিত। এ ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। তাই প্রমাণ লোপাট হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা মন্তব্য করেন, রাজ্য সরকার যেভাবে এই মামলায় যা করেছে তা তিনি তাঁর দীর্ঘ ২৭ বছরের কর্মজীবনে কখনও দেখেননি। পাশাপাশি এদিন সিবিআই-এর তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগৃহীত নমুনা দিল্লিতে এমস-এ পাঠানোর। অর্থাৎ ফরেন্সিক রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয় সিবিআই৷
দেখুন ভিডিও