নয়াদিল্লি: কল্পবিজ্ঞানে বা হলিউডের সিনেমায় দেখা যায় এই ধরনের দৃশ্য। বিজ্ঞানীরা নতুন আবিষ্কার করেছেন। সেই আবিষ্কার ঘুরিয়ে বিজ্ঞানীদেরই মেরে ফেলছে। বা ভালোর জন্য করা সৃষ্টি ধ্বংস করছে মানুষকেই। কঠিন রোগ প্রতিরোধে বিশেষ জীবাণু তৈরি করতে সেরকমই অপ্রত্যাশিত সম্ভাবনা (Unprecedented risk’ to life on Earth) উঠে আসায় গবেষণা বন্ধ করতে হয়েছে নোবেলজয়ী সহ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে খ্যাতনামা বিজ্ঞানীদের দলকে। এই রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসায় বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানী মহলে এই নিয়ে হইচই পড়েছে। থেমে যায় ‘মিরর লাইফ মাইক্রোব রিসার্চ’ (‘mirror life’ microbe research)। যা দুরারোগ্য ব্যাধিতে শুশ্রুষায় নতুন দিশা দেখাতে পারত। হতে পারত যুগান্তকারী সৃষ্টি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞানীরা ‘মিরর লাইফ] জীবাণু তৈরির জন্য গবেষণা বন্ধ করার কথা জানালেন। কারণ যা জীবনের জন্য একটি অভূতপূর্ব ঝুঁকি হিসেবে দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ওই উদ্ভাবন প্রাকৃতিক জীবের প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে মানুষ, প্রাণী এবং গাছপালাকে প্রাণঘাতী ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। লগ্নিকারীদের এই গবেষণায় টাকা না ঢালতেও আহ্বান করা হয়।
পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী অধ্যাপক ভন কুপার বলেছেন, আমরা যে হুমকির কথা বলছি তা নজিরবিহীন। মিরর ব্যাকটেরিয়া সম্ভবত মানব, প্রাণী এবং উদ্ভিদ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রেই মারাত্মক সংক্রমণ ঘটাবে যা ছড়িয়ে পড়বে। এই আশঙ্কা প্রকাশ করা বিশেষজ্ঞ দলটির মধ্যে বিখ্যাত মার্কিন বিজ্ঞানী ডঃ ক্রেগ ভেন্টারও রয়েছেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক গ্রেগ উইন্টার এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জ্যাক সজোস্টাক আছেন।
গবেষণা ও উদ্ভাবনের উদ্দেশ্য ছিল, মিরর অণুগুলি দীর্ঘস্থায়ী এবং দুরারোগ্য ব্যাধির থেরাপি হিসেবে কাজ করতে পারে। যা জীবন বিজ্ঞানে শুশ্রুষার ক্ষেত্রে মাইলস্টোন হতে পারত। মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাঃ কেট অ্যাডামলা বলেছেন, আমরা সুপারিশ করেছি যে মিরর ব্যাকটেরিয়া তৈরির লক্ষ্য নিয়ে গবেষণার অনুমতি দেওয়া হবে না। অর্থদাতারাও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা এই ধরনের কাজকে সমর্থন করবে না। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক পল ফ্রিমন্ট (গবেষণায় ছিলেন না) এটিকে দায়িত্বপূর্ণ গবেষণা এবং উদ্ভাবনের একটি চমৎকার উদাহরণ বলে অভিহিত করেছেন। উল্লেখ্য, জলাতঙ্ক রোগের টিকার আবিষ্কারক লুই পাস্তুর আধুনিক মাইক্রোবায়োলজির প্রতিষ্ঠাতা। যাঁকে মিরর ইমেজ সংক্রান্ত গবেষণায় পথিকৃৎ বলা হয়।
আরও পড়ুন: শূকরের মাংস লেচোনা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার, সেরা একশোয় ভারতের বাটার চিকেন, হায়দরাবাদি বিরিয়ানি