কলকাতা: ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল জ্যোতির্বিজ্ঞানী সম্প্রতি ৪০০০ আলোকবর্ষ দূরের একটি ক্ষুদ্রাকৃতি নক্ষত্রের চারপাশে পৃথিবীর মতো একটি গ্রহ আবিষ্কার করেছেন। স্যাগিট্টারিয়াস নক্ষত্রমণ্ডলে অবস্থিত এই পাথুরে গ্রহটির আকার ও আকৃতি পৃথিবীর মতোই। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ‘ডোয়ারফ’ নক্ষত্রের চারপাশে ঘূর্ণায়মান এই গ্রহের অস্তিত্ব পৃথিবীবাসীর ভবিষ্যতের আশ্রয়স্থল হতে পারে। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন যে, এই ‘ডোয়ারফ’ নক্ষত্র কী? আসলে যখন একটি নক্ষত্রের ভেতরের আণবিক শক্তি ফুরিয়ে আসে, তখন নক্ষত্রটির বাইরের সব স্তরগুলি বিলুপ্ত হয়ে যায়। অর্থাৎ, সৌরজগতের একমাত্র নক্ষত্র সূর্যও একদিন ক্ষমতা হারিয়ে ‘ডোয়ারফ’ নক্ষত্রে পরিণত হবে। তখন পৃথিবী বসবাসযোগ্য থাকবে কিনা, সেই নিয়ে অনেক মতভেদ রয়েছে। তবে ‘ডোয়ারফ’ নক্ষত্রের চারপাশে প্রদক্ষিণরত এই নতুন গ্রহকে ঘিরে নতুন সম্ভাবনার কথা ভাবছেন বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন: কোনও অবস্থাতেই মৃত্যু হয় না এই প্রাণীর! খোঁজ মিলল অতল সমুদ্রে
নেচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শক্তিশালী টেলিস্কোপ ব্যবহার করে KMT-2020-BLG-0414 নামক একটি নক্ষত্রমণ্ডলীকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। সেখানেই ওই ‘ডোয়ারফ’ নক্ষত্র এবং তার চারপাশে ঘূর্ণায়মান একটি পৃথিবীর আকারের গ্রহকে দেখা গিয়েছে। তবে ওই গ্রহটি ‘ডোয়ারফ’ নক্ষত্র থেকে পৃথিবীর তুলনায় দ্বিগুণ দূরত্বে অবস্থান করছে। অর্থাৎ, সূর্য যখন ‘ডোয়ারফ’ নক্ষত্রে পরিণত হবে, তখন তার ভর কমে যাওয়ার ফলে সৌরজগতের গ্রহগুলি আরও দূরে সরে যাবে। সেক্ষেত্রে পৃথিবী হয়ত ধ্বংসের হাত থেকে বেঁচে যাবে। এই বিষয়ে ক্যালিফোর্নিয়া সান ডিয়েগোর এআই ইন সায়েন্স পোস্টডক্টরাল ফেলো বলেন, “যেকোনো অবস্থাতেই, পৃথিবী আর মাত্র এক বিলিয়ন বছর বাসযোগ্য থাকবে, কারণ তারপরে পৃথিবীর মহাসাগরগুলি গ্রিনহাউজ এফেক্টের কারণে বাষ্পে পরিণত হবে – যা সূর্যের ‘ডোয়ারফ’ নক্ষত্রে পরিণত হওয়ার অনেক আগেই ঘটবে।” তবে তার আগে এমন কোনও গ্রহে পৌঁছে মানুষ বসতি স্থাপন করতে পারবে কিনা তা একমাত্র সময়ই বলবে।
দেখুন অন্য খবর: