কলকাতা: বেকারি শিল্পের (Bakery Industry) প্রসার ঘটলে বাড়বে কর্মসংস্থান। যুবকদের মধ্যে ছোট ছোট শিল্প গড়ে তোলার উৎসাহ বাড়বে। বেকারি শিল্পের উন্নয়নে বিস্কুট, কেক তৈরির জন্য যে কাঁচা মাল হিসবে লাগে ময়দা, চিনি, ভোজ্যতেল। এবার এই সমস্ত কাঁচামাল সরকারি নিয়ন্ত্রিত দামে সরবরাহের দাবি তুলল ওয়েস্ট বেঙ্গল বেকার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি (State Conference of West Bengal Bakers Coordination Committee)।
সংস্থার সম্পাদক সেখ ইসমাইল হোসেন (Sheikh Ismail Hossain) বলেন, ময়দা, চিনি ভোজ্য তেল-সহ অনুসঙ্গিক দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় খুব শীঘ্রই পাউরুটি, কেক, বিস্কুটের দাম বাড়তে চলেছে।
শনিবার মিলন মেলা প্রাঙ্গণে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, খুব শীঘ্রই সাংবাদিক সম্মেলন করে এই পাউরুটি কেকের দাম বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হবে। এদিন তিনি রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, বেকারিতে দ্রব্যের গুণগত মান জানার জন্য একটি উন্নতমানের পরীক্ষাগার তৈরি করা প্রয়োজন। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের উদ্যোগে বেকারি মালিক ও শ্রমিকদের জন্য একটি আধুনিক প্রশিক্ষণাগার তৈরি করা দরকার।
আরও পড়ুন: শীর্ষস্থান দখলের লক্ষ্যে আজ যুবভারতীতে মোহনবাগান
তিনি আরও বলেন, বেকারি শিল্পের উৎপাদিত দ্রব্যের আধুনিকীকরণে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। বেকারি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা দরকার। ইসমাইল হোসেন আরও বলেন, মিড ডে মিল প্রকল্পে রাজ্যের প্রাইমারি ও মাধ্যমিক স্তরে প্রত্যেকটি স্কুলে রান্না করা খাবারের পরিবর্তে আধুনিক বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে বেকারিতে তৈরি পাউরুটি বিতরণ ব্যবস্থা চালু করা।
অনুষ্ঠানে রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা দফতরের কমিশনার তপনকান্তি রুদ্র বলেন, বেকারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা সমাজের বন্ধু। তাই তাঁরা সমাজে গুণগত মান অক্ষুন্ন রেখে খাবার সরবরাহ করে।
এদিন তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এখন আমাদের জমিতে যে সমস্ত ফসল উৎপাদন হয় সবটাই বিষ প্রয়োগ করে। প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা হারিয়ে যাচ্ছে। শস্যের মধ্যে ক্ষতিকারক রাসায়নিক প্রভাব পড়ছে। আর এর জন্য ১০ শতাংশ মানুষ শুধুমাত্র বিভিন্ন মারণ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
তিনি রাজ্য সরকারের খাদ্য সুরক্ষা প্রসঙ্গে বলেন, সারা রাজ্যে ২৮টি ইউনিট তৈরি হয়েছে। এই ইউনিটগুলি খাদ্য সুরক্ষায় কাজ করছে ২৩ টি জেলায়। অত্যাধিক রাসায়নিক ও কীটনাশক প্রয়োগ করে উৎপাদিত ফসল থেকে ফুড অ্যালার্জি হচ্ছে।
কমিশনার রুদ্র আরও বলেন,এখন গ্রামঞ্চলের তৈরি হয়ে গিয়েছে মোবাইল ল্যাবটারি। জেলার সদরে যোগাযোগ করলে বাড়ির কাছে পৌঁছে যাবে খাদ্য সুরক্ষা পরীক্ষা করার জন্য গাড়ি।
সুকল্যাণ বিশ্বাস বলেন, ওজন ও পরিমাপ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎপল রায় চৌধুরি নানা বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন সকালে উঠেই আমাদের খাদ্য তালিকায় থাকে যে সমস্ত খাবার তার মধ্যে পাউরুটি অন্যতম। কাজেই প্রত্যেক কারখানা মালিককে খাদ্য সুরক্ষার উপর জোর দিতে হবে।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ড. বিধান দাস, প্রশান্ত বিশ্বাস, সংস্থার সভাপতি দিয়ানাত আলি খান, সংগঠনের চেয়ারম্যান প্রত্যুষ জানা প্রমুখ। আগত বিশিষ্টজনেরা সেখ ইসমাইল হোসেন সম্পর্কে বলেন, চার দশক ধরে বেকারি শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তিনি। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আজও বেকারি শিল্প রাজ্যজুড়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে।
দেখুন অন্য খবর: