কলকাতা: মহাকাশ নিয়ে আগ্রহ কার নেই! কিন্তু জানেন কী মহাকাশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে এক দিনে কতবার সূর্যোদয় ঘটে? এর উত্তর শুনলে অনেকেই হয়ত অবাক হবেন। কারণ, আইএসএস-এ সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত একবার বা দু’বার হয়না; বরং সেখানে সারা দিনে ১৬ বার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়। জেনে হয়ত অবাক হচ্ছেন! অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্যি। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস সম্প্রতি এমনই অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী হচ্ছেন। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে থাকাকালীন সারা দিনে ১৬ বার করে সূর্যকে উদয় হতে ও অস্ত যেতে দেখছেন তিনি। কিন্তু কেন মহাকাশে এমন অদ্ভুত ঘটনা ঘটে? চলুন, এর নেপথ্যে কী কী বৈজ্ঞানিক যুক্তি রয়েছে, সেটা এবার জেনে নেওয়া যাক।
আরও পড়ুন: চাঁদের বাড়ি তৈরি করছেন ইলন মাস্ক! অনায়াসে কাটানো যাবে কয়েকদিন
আসলে মহাকাশে যে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন রয়েছে, সেটি ঘণ্টায় প্রায় ২৮,০০০ কিলোমিটার বেগে মাত্র ৯০ মিনিটে পৃথিবীকে একবার করে প্রদক্ষিণ করে। এই দ্রুত প্রদক্ষিণের কারণে মহাকাশচারীরা প্রতি ৪৫ মিনিটে একবার করে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে পান। পৃথিবীতে যেখানে একটি দিনে প্রায় ১২ ঘণ্টা দিনের আলো এবং ১২ ঘণ্টা অন্ধকার থাকে, সেখানে মহাকাশে আইএসএস-এর অবস্থানরত নভোচারীরা প্রতি ৪৫ মিনিটে দিনের আলো এবং ৪৫ মিনিটে অন্ধকার অনুভব করেন। এই দ্রুত দিন-রাত চক্রের ফলে একদিনে ১৬ বার সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও, প্রতিদিন মাত্র ৯০ মিনিটে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করার কারণে মহাকাশ স্টেশনের মহাকাশচারীদের জন্য প্রচলিত দিন-রাতের ধারা কার্যকর হয়না। তাই সময়ের নির্দেশনার জন্য তাঁরা পৃথিবীর সময় অনুসরণ করে থাকেন। পাশাপাশি, আইএসএস-এ তাঁদের দৈনন্দিন কাজ, খাওয়াদাওয়া এবং বিশ্রামের নির্ধারিত সময় পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে পরিচালিত হয়। এটি তাঁদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, নাসার মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস বর্তমানে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে রয়েছেন, যেখানে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত প্রতিদিন একবার নয়, বরং ১৬ বার ঘটে। ২০১৩ সালে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়জিত এক সম্মাননা অনুষ্ঠানে, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে, তিনি মহাকাশ থেকে দেখা এই বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা নিয়ে তাঁর অনুভূতি শেয়ার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমি কঠোর পরিশ্রম করে মহাকাশে যেতে পেরেছি। সেখানে আমি প্রতিদিন ১৬টি সূর্যোদয় ও ১৬টি সূর্যাস্ত দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছি।”
দেখুন আরও খবর: