কলকাতা: সন্তান নেওয়ার জন্য এবার আদালতের দ্বারস্থ হতে হল কলকাতার এক দম্পতিকে। কারণ, আইভিএফ পদ্ধতিতে তাঁদের সন্তান নেওয়ার জন্য ‘পারমিশন’ দেয়নি স্বাস্থ্য ভবন। কিন্তু কেন? চলুন দম্পতির আদালতে পৌঁছনর গল্পটা একটু জেনে নেওয়া যাক। জানা গিয়েছে, কলকাতার কাশীপুরের ওই দম্পত্তির বিয়ে হয় ১৯৯৪ সালে। ৩০ বছর ধরে তাঁরা সুখী বৈবাহিক জীবন কাটিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও তাঁদের সন্তান হয়নি। তাই আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে তাঁরা এখন সন্তান নিতে চান। তাই ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে পিএইচএস ফার্টিলিটি ক্লিনিকে নামের একটি সংস্থায় ‘অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজি’র দ্বারা সন্তান লাভের জন্য আবেদন জানায় দম্পতি। গত ২৭ জুন পিএইচএস ফার্টিলিটি ক্লিনিক, দম্পতিকে রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন থেকে বিশেষ অনুমতি নেওয়ার উপদেশ দেয়।
আরও পড়ুন: ফের নিম্নচাপ! রাজ্যজুড়ে ঘন কুয়াশা, শীতের দাপট কেমন?
নিয়ম অনুযায়ী, অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজির ক্ষেত্রে পুরুষের বয়স হতে হয় ২১ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স ৫০ বছর। এই মূহুর্তে আবেদনকারী মহিলার স্বামীর বয়স ৫৮ বছর। তাই এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ভবনের অনুমতির প্রয়োজন বলে জানানো হয় ক্লিনিকের পক্ষ থেকে। কিন্তু শেষমেশ অনুমতি মেলেনি রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনের তরফ থেকেও। তাই নিরুপায় হয়ে আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান নিতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই দম্পতি। আগে এই মামলায় ক্লিনিক ও স্বাস্থ্য ভবনের রিপোর্ট চেয়েছিলেন বিচারপতি শম্পা সরকার। মঙ্গলবার আদালতে এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় ক্লিনিক ও স্বাস্থ্য ভবনের পক্ষ থেকে। সেই সঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী জানান, পুরুষের বয়স বেশি হলেও অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজিতে কোনও সমস্যা হবে না। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি অমৃতা সিংহ প্রশ্ন করেন, “এই বয়সে এসে, দম্পতি সন্তানের পর্যাপ্ত দায়িত্ব নিতে পারবেন? একটি সন্তানকে মানুষ করার জন্য তাঁরা কতটা প্রস্তুত?” এর উত্তরে দম্পতির আইনজীবী বলেন যে, তাঁর মক্কেল আর্থিক ভাবে সচ্ছল এবং সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে যা যথেষ্ট। পাশাপাশি, মানসিক ভাবে দীর্ঘ দিন ধরে প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তাঁরা। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে মঙ্গলবার বিচারপতি আমৃতা সিনহা জানান, আগামী শুক্রবার ২২ নভেম্বর রায় ঘোষণা হবে।
দেখুন আরও খবর: