শান্তিপুর: হেমন্তের হিমেল বাতাসকে সঙ্গী করে প্রেমের উৎসবে মেতে ওঠেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও রাধিকা। বাংলায় এই উৎসব রাস উৎসব নামে পরিচিত। আর নদিয়ার শান্তিপুরে বেশ ধুমধাম করে পালিত হয় এই উৎসব। শান্তিপুরের ভাঙা রাসের প্রধান আকর্ষণ ‘রাইরাজা’, যেদিন রাধা কৃষ্ণ সেজে মেতে ওঠেন প্রেমের এই উৎসবে। চৈতন্য চরিতামৃত মোতাবেক, দ্বাপর যুগে বৃন্দাবনে শ্রী কৃষ্ণ যখন ষোল’শ গোপিনীর সঙ্গে রাসলীলায় মত্ত ছিলেন তখন স্বয়ং মহাদেব গোপিনীর ছদ্মবেশে বৃন্দাবনে প্রবেশ করেন। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ মহাদেবকে চিনে ফেলেন। মহাদেবকে দেখার পরই শ্রীকৃষ্ণ লুকিয়ে পড়েন। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণকে ছাড়া রাসলীলা অসম্ভব। সেই কারণেই সমস্ত গোপিনীরা রধিকাকেই রাজা সাজিয়ে রাসলীলা শেষ করেন। সেই থেকেই রাধিকা-রাজা বা রাই-রাজার উদ্ভব। অন্যদিকে, শ্রীকৃষ্ণ যখন রাসলীলার মঞ্চ থেকে অন্তর্হিত হন, সেই সময়টি ভাঙা রাস নামে পরিচিত হয়।
আরও পড়ুন: চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে
আর এইসব কারণেই ভাঙা রাসে রাই-রাজাকে নগর পরিক্রমা করানোর রীতি রয়েছে শান্তিপুরে। মূলত ব্রাহ্মণ পরিবারের কুমারী নাবালিকাকে সাজিয়ে নগর পরিক্রমা করার রীতি রয়েছে। শান্তিপুর শহরের বড় গোস্বামী, পাগলা গোস্বামী, বাঁশ বুনিয়া গোস্বামী, চাক ফেরা, মদন গোপাল সহ প্রতিটি বিগ্রহকে রাই-রাজা সহ পরিক্রমা করানো হয়। এছাড়াও কথিত রয়েছে যে, দ্বাপর যুগে মহাদেব রাস ভেঙে বলেছিলেন যে, এক সময় তিনিই রাস উৎসবের সূচনা করবেন। সেই কারণে, মহাদেবের অবতার হিসেবে প্রভু অদ্বৈত আচার্য্যর নেতৃত্বেই কলি যুগে রাস উৎসবের সূচনা হয়। সেই উতসবের রীতি এখনও পালিত হয় শান্তিপুরে।
দেখুন আরও খবর: