নদিয়া: ‘আমাকে সুস্থ করুন- আমি কথা বলতে শিখিনি এখনও। তাই চিৎকার করে আর্তি জানাতে পারছি না। আমি গুটিগুটি পায়েও হাঁটতে শিখিনি এখনও। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সামনে গিয়ে প্রাণ ‘বাঁচানোর’ কাতর আর্জি জানাতে পারছি না। আমার বাবা-মার পৃথিবী যেন থমকে গিয়েছে। শুধু নিঃশ্বাসটুকুই নিচ্ছেন। তাঁরা হতভম্ব। দশটি মাস আমি এই পৃথিবীর আলো দেখেছি। আমি আপনাদের মেয়ে। আমি আগামীর কন্যাশ্রী। এক বিরল রোগ (Rare Disease) আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। যার মোকাবিলায় একটি ইঞ্জেকশনের দাম ১৬ কোটি টাকা। বিদেশ থেকে আনাতে হবে। ডাক্তার বলেছেন, দ্রুত ইঞ্জেকশন না দিলে…’ নদীয়া (Nadia) জেলার রানাঘাটের ফুটফুটে অস্মিকা এখন বাবা-মায়ের কোলে শুয়ে এই কথাই যেন বলতে চাইছে। শিশুটির বাবা-শুভঙ্কর দাস, মা লক্ষীসরকার দাসের উদ্বেগে মুখ থেকে কথা বেরোচ্ছে না।
রানাঘাটে এখন লোকমুখে ঘুরছে ছোট্ট মেয়েটির বিরল রোগ মোকাবিলার করুণ ঘটনা। ওর পরিবার জানিয়েছে, ‘স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি টাইপ-১ (SMN1)‘ রোগে আক্রান্ত ছোট্ট অস্মিকা। যে রোগের জন্য নিতে হবে বিশেষ ইঞ্জেকশন। দাম ১৬ কোটি টাকা! মেয়ের চিকিৎসার জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সাহায্যের কাতর আবেদন শিশুকন্যার বাবা-মায়ের। অস্মিকার বয়স এখন ১০ মাস। বয়স যখন ৬ মাস, তখন থেকেই বিরল রোগে আক্রান্ত সে। যতদিন যাচ্ছে সমস্যা বাড়ছে। বাড়ছে চিন্তা। অস্মিকাকে ঘিরেই বাবা-মায়ের পৃথিবী। সে এখন শুভাকাঙ্খী অনেকেরই মেয়ে উঠেছে। তাঁদেরও স্বপ্ন, আকাঙ্খা। পরিজনরা সমস্যায় পড়েছেন। এই রোগের ওষুধ ভারতে নেই। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের ভিত্তিতে ওষুধটি ‘ইমপোর্ট’ করতে হবে। শিশুটির ডাক্তার অ্যাগ্নেস ম্যাথিউয়ের মতে, ওষুধটি যত তাড়াতাড়ি অশ্মিকাকে প্রয়োগ করা সম্ভব, তত সেরে ওঠার সম্ভাবনা বেশি। পরিবার ও সমব্যথীরা হন্যে হয়ে টাকা জোগাড়ের জন্য ঘুরছেন। কিন্তু টাকার অঙ্ক এতটাই বড় যে চিকিৎসার জন্য তাঁরা রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছেন। সবার কাছেই সাহায্যের আর্জি।