অরূপ ঘোষ, ঝাড়গ্রাম: ফের বাঘের আতঙ্ক ঝাড়গ্রামে (Jhargram)। জঙ্গলমহল (Jangalmahal) সংলগ্ন ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া রেঞ্জে দু’দিন ধরে এক বাঘিনীর (Tigress) ঘুরে বেড়ানোর খবর পাওয়া গিয়েছে।
জেলার সীমানা লাগোয়া গিধনি, জামবনী ও বেলপাহাড়ী রেঞ্জে নজরদারি চালাচ্ছে বনদফতর। জেলার জঙ্গল ও পর্যটনস্থলে পর্যটকদের বিকেল ৫টার মধ্যে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর জেরে ছ’বছর আগের লালগড়ের জঙ্গলের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের স্মৃতি এবং আতঙ্ক, দুটোই ফিরে এসেছে।
ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, পার্শ্ববর্তী রাজ্যের বনবিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলা হচ্ছে। জেলার সীমানা লাগোয়া বনভূমিতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পর্যটকদের সুরক্ষার স্বার্থে বেশ কয়েকটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। কেউ নিয়ম না মানলে বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: সমস্ত প্রকল্পে টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা রাজ্যের
ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের হঠাৎ করে বিজ্ঞপ্তি জারি নিয়ে সোমবার থেকেই জল্পনা বাড়ছিল। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিকেল ৫টার পর জঙ্গল লাগোয়া পর্যটনকেন্দ্রে থাকা যাবে না। বিনা অনুমতিতে তাঁবু খাটানো চলবে না। জঙ্গলে আবর্জনা ফেললে ১১৫০ টাকা জরিমানা করা হবে। পাশের রাজ্যে বাঘিনীর ঘুরে বেড়ানোর খবরেই এই নির্দেশিকা জারি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের গুড়াবান্দা জঙ্গলে বাঘিনীর সন্ধান মিলেছে যা ঝাড়গ্রাম জেলার মাত্র ৫ কিমি দূরত্বে।
ওড়িশার সিমলিপাল জঙ্গল থেকে ওই বাঘিনী কয়েকদিন আগে বেরিয়ে ঝাড়খণ্ডের দিকে রওনা দেয়। ওই বাঘিনীর গলায় জিপিএস ট্র্যাকার লাগানো ছিল। চাকুলিয়া, বহরাগোড়া, ধলভূমগড় বনাঞ্চলে বাঘিনী বিচরণ করছে। ওড়িশা বনদফতরের একটি দল বাঘিনীর গতিবিধির উপর নজর রাখছে।
২০১৮ সালের মার্চ মাসে লালগড়ের বাঘঘোরার জঙ্গলে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। স্থানীয় গ্রামবাসীরা সেই ঘটনা এখনও ভুলে যাননি।
জঙ্গল লাগোয়া গ্রাম থেকে গোরু, ছাগল উধাও হতে শুরু করেছিল। প্রথমে গ্রামবাসীরা ভেবেছিলেন, তা হায়না বা নেকড়ের কাজ। বনদফতর জঙ্গলে ক্যামেরা বসালে বাঘের ছবি পাওয়া যায়। এতে এলাকায় প্রচণ্ড আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বনবিভাগ বাঘটি ধরার সবরকম চেষ্টা চালায়। কিন্তু সেটিকে জীবন্ত অবস্থায় ধরা যায়নি। বাঘঘোরার জঙ্গলে বাঘটির দেহ পাওয়া
গিয়েছিল। দেহেও একাধিক ক্ষত ছিল। ওই বাঘের মৃত্যুরহস্যের এখনও কিনারা হয়নি আজও।
দেখন অন্য খবর: