গোঘাট: জল আতঙ্কে গ্রামের পর গ্রাম। ৭-১০ দিন জলের তলায় গ্রামের পর গ্রাম। গ্রামের নলকূপ গুলি বন্যার জলে ডুবে যাওয়ায় পানীয় জলের (Drinking Water) অভাবও দেখা দিয়েছে। একতলা বাড়িতে জল ঢোকায় বাড়ির ছাদে ত্রিপল টাঙিয়ে মানুষের বসবাস। অথচ এলাকায় ছোটদের প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলেছে। এমনই অবস্থা গোঘাট ১ নম্বর ব্লকের বালি গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামবল্লভপুর, দামোদরপুর, মির্জাপুর,মালমহল, চাষীপাড়া, প্যাঁচড়া প্রভৃতি গ্রামে। এইরকমই একই অবস্থা সাওরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলে,কুশমা ও নকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের দেওয়ানচক,কোটা ও কুলিয়া গ্রামে।
বাঁকুড়ার দিক থেকে বিভিন্ন খাল বিল ও দামোদর নদ দিয়ে গোঘাটের ৩ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। গ্রামে বন্যার জল ঢুকে রয়েছে। তার ওপর বাঁকুড়ায় বৃষ্টিপাতের ফলে খাল বিল দিয়ে হু করে জল ঢুকছে এই সমস্ত গ্রামে ফলে গ্রামে জলস্তর বাড়ছে এমনটাই বলছেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় মানুষজনের দাবি দ্বারকেশ্বর নদীতে জলের চাপ থাকায় এই বন্যার জল ১৫ থেকে ২০ দিনের আগে কমবে না। গ্রামে জল স্তর ক্রমশই বাড়ছে। প্রশাসনের তরফ থেকে এখনও কোন মানুষের সঙ্গেই যোগাযোগ করা হয়নি বলে অভিযোগ। দেওয়া হয়নি নৌকা। গ্রামের নলকূপ গুলি ডুবে যাওয়ায় পানীয় জলের জন্য হাহাকার উঠেছে। বন্যার জলকেই ফুটিয়ে খেতে বাধ্য হচ্ছে বানভাসি মানুষজন।
আরও পড়ুন: বিডিওর দাদাগিরি, হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসককে মার
এই সমস্ত গ্রামের মানুষজন প্রধানত কৃষিজিবী মাঠ ঘাট সবই জলের তলায় ধান জমি থেকে সবজি ক্ষেত সবই জলে ডুবে রয়েছে। বাড়ির ছাদে কেউ কেউ ত্রিপল টাঙিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ ছাদে বা কেউ সিঁড়িতে প্রয়োজন মতো ভাত ফুটিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ বাড়িছাড়া হয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। অন্যদিকে আরামবাগ মহকুমা প্রশাসন তিন দিনের বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করলেও তিন দিন পেরিয়ে গিয়েছে ফলে বাধ্য হয়েই এই সমস্ত বানভাসি এলাকায় বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। জল পেরিয়ে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাড়ি থেকে স্কুলে যেতে হচ্ছে। বালি গ্রাম পঞ্চায়েতে সরকারিভাবে কোন ত্রাণ শিবির নেই। বন্যা দুর্গত মানুষদের দাবি, ভোটের সময় রাজনৈতিক দলের নেতারা পাশে থাকার আশ্বাস দিলেও এখন তাদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। গ্রামের পিচ রাস্তা ডুবে গেলেও প্রধান রাস্তা দিয়ে হু হু করে ছুটে যাচ্ছে নীল বাতি জ্বালানো গাড়ির লাইন। বন্যা দুর্গতদের অভিযোগ কোন সরকারি আধিকারিকই তাদের কথা শুনছেন না বা তাদের সঙ্গে কেউই কোন কিছুই জানতে চাইছেন না। জলের আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়ছে না বানভাসিদের। একদিকে জল যন্ত্রণায় প্রাণ ওষ্ঠাগত অন্যদিকে পানীয় জলের হাহাকার আর বন্যায় বিশধর সাপের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। আর দীর্ঘদিন ধরে জল জমে থাকলে জল নেমে গেলেই এলাকায় মহামারী আতঙ্ক রয়েছে।
অন্য খবর দেখুন