গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর আমরা পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই। এটি সৌর বছরের উপর ভিত্তি করে তৈরি একটি পঞ্জিকা, যা দীর্ঘ বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বর্তমানে ব্যবহৃত কাঠামোটি পেয়েছে। যদিও বেশিরভাগ দেশ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মেনে চলে, কিছু দেশ এখনও এই পঞ্জিকা গ্রহণ করেনি। আমাদের পরিচিত ইংরেজি সালই আসলে এই গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকা।
বিশ্বের বেশ কিছু দেশ তাদের নিজস্ব ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চলার রীতি বজায় রেখেছে। উত্তর কোরিয়া, সৌদি আরব, নেপাল, ইরান, ইথিওপিয়া, এবং আফগানিস্তান তাদের নিজস্ব পঞ্জিকা অনুসরণ করে। ইসরায়েল গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার করলেও ইংরেজি নববর্ষ পালন করে না। এছাড়া আরব দেশগুলিতে ১ জানুয়ারি নববর্ষ শুরু হয় না। ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং তিউনিসিয়ায় নববর্ষ শুরু হয় আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে। চীন এবং ইতালিতে এই তারিখ আরও ভিন্ন, যথাক্রমে মার্চ এবং নভেম্বরে।
আরও পড়ুন : কেন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি? ইতিহাস জানলে চোখ কপালে উঠবে
উত্তর কোরিয়ার পঞ্জিকা একেবারে আলাদা। তাদের ক্যালেন্ডারের সূচনা ১৯১২ সালে, যা উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল-সুং-এর জন্মের বছর। তাদের হিসেবে, আমাদের ২০১৮ সাল হলো তাদের ১০৭ সাল। ফলে ২০১৯ সালটি তাদের জন্য ১০৮ সাল হিসেবে পালিত হচ্ছে। এটি তাদের ঐতিহ্য এবং জাতিগত গর্বের পরিচায়ক।
চীনেও রয়েছে নিজস্ব ক্যালেন্ডার, যা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে। যদিও গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার তাদের অফিসিয়াল কার্যক্রমে ব্যবহৃত হয়, নিজস্ব পঞ্জিকাটি বিশেষ ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চীনের এই পঞ্জিকা চন্দ্রবর্ষের উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং এর জনপ্রিয়তা আজও অটুট।
ইহুদি ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলিও তাদের নিজস্ব ক্যালেন্ডার মেনে চলে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। এবারই প্রথম সৌদি আরবে কিছু অঞ্চলে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন করা হয়েছে, যা ঐতিহ্যগতভাবে এই দেশে দেখা যায় না। এ ঘটনাটি প্রমাণ করে যে, সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে ক্যালেন্ডারের গুরুত্ব এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধন নতুন রূপ পাচ্ছে।
দেখুন আরও খবর :