বাঁকুড়া: আজ রাজ্যজুড়ে চলছে জগদ্ধাত্রী মায়ের আরাধনা। ঐতিহ্য মেনে আজ সারদা মায়ের জন্মস্থান বাঁকুড়ার জয়রামবাটিতেও চলছে দেবী আরাধনা। কথিত আছে শ্যামাসুন্দরী দেবী, সারদা মায়ের মা স্বপ্নাদেশ পেয়ে শুরু করেন দেবী আরাধনা , আর তারপর থেকেই তাঁরই তত্ত্বাবধানে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী দেবী আরাধনা।
পরবর্তীতে সারদা মায়ের জন্মস্থানে প্রতিষ্ঠা করা হয় মাতৃ মন্দির। সেখানেই মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দায়িত্ব নেওয়া হয় মাতৃ আরাধনার। জগদ্ধাত্রী দেবীর আরাধনা দেখতে জয়রামবাটিতে এদিন দূর-দূরান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা ভিড় জমান।
আরও পড়ুন: বেলুড় মঠে জগদ্ধাত্রী পুজো দেখতে প্রচুর ভক্তের সমাগম
কথিত আছে, শ্যামাসুন্দরী দেবী ছিলেন অত্যন্ত ধর্মপ্রাণা মহিলা। তাঁর পরিবারে প্রবল অর্থ কষ্ট থাকা সত্ত্বেও তিনি প্রতিদিন দুপুরের খাবার থেকে এক মুঠো করে চাল তুলে রাখতেন গ্রামের কালী পুজোর জন্য। গ্রামের অন্যান্যরা যখন কালী পুজোর সময় কালী মন্দিরে চাল দিয়ে আসতেন তখন শ্যামাসুন্দরী দেবীও তাঁর প্রতিদিনের জমানো চাল দিয়ে আসতেন মন্দিরে। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে, ১৮৭৭ সালে শ্যামাসুন্দরী দেবী যখন সারা বছরের জমানো চাল মন্দিরে দিতে যান, তখন পুজো উদ্যোক্তারা তা নিতে অস্বীকার করেন। ঘটনার জেরে প্রবল মনকষ্ট পান তিনি। সেদিন রাতেই শ্যামাসুন্দরী দেবী স্বপ্ন দেখেন লাল পাড় সাদা শাড়ি পড়ে এক মহিলা তাঁকে বলছেন পুজো উদ্যোক্তারা যেই চাল নিতে অগ্রাহ্য করেছেন সেই চাল দিয়েই তাঁর পুজো দিতে। কিন্তু সেই দেবীকে চিনতে না পারায় তিনি সারদা মা’কে বলেন তাঁর স্বপ্নের কথা। সারদা মা জানান, স্বপ্নে মা জগদ্ধাত্রী দেবী তাঁকে পুজোর স্বপ্নাদেশ দেন।
তারপর থেকেই শ্যামাসুন্দরী দেবী ক্ষুদ্র আয়োজনে শুরু করেন জগদ্ধাত্রী দেবীর আরাধনা। পরবর্তীতে মা সারদা এই পুজো চালিয়ে যান।সারদা মায়ের অনুপস্থিতির পর সারদা মায়ের পবিত্র জন্মস্থানে মাতৃমন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেখানেই প্রতিবছর মাতৃমন্দির কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে আয়োজন করা হয় জগদ্ধাত্রী দেবীর পুজো।
দেখুন অন্য খবর: