নয়াদিল্লি: রাগে দুঃখে অপমানে অলিম্পিক্স এবং ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে জেতা পদক গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতের কুস্তিগিররা। মঙ্গলবার সকালে টুইট করে একথা জানিয়েছেন সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik) তিনি এও জানান, পদক গঙ্গায় ভাসানোর পর ইন্ডিয়া গেটের সামনে আমরণ অনশনে বসবেন তাঁরা। জানেন কি, প্রতিবাদে পদক বিসর্জন দেওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। অলিম্পিক্সে জেতা পদক নদীতে ভাসিয়ে দেন কেসিয়াস ক্লে (Cassius Clay)। পরে যাঁকে গোটা দুনিয়া চেনে মহম্মদ আলি (Muhammad Ali) নামে। অ্যাফ্রো-আমেরিকান কিংবদন্তি বক্সার বর্ণবৈষম্যের (Racism) প্রতিবাদে এই কাজ করেছিলেন।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে রোম অলিম্পিক্সে অংশ নেন আলি এবং ৮১ কেজি বিভাগে সোনা জেতেন। বয়সে অনেক বড় এবং নামকরা প্রতিপক্ষদের হেলায় হারিয়ে পদক জেতেন তিনি। আলি ভেবেছিলেন তাঁর পদক জয় আমেরিকায় বর্ণবৈষ্যমের কালো মেঘ কাটিয়ে দেবে। কিন্তু অচিরেই ভুল ভাঙে। কৃষ্ণাঙ্গ এবং অ্যাফ্রো-আমেরিকান হওয়ায় তাঁকে পরিষেবা দিতে অস্বীকার করে এক রেস্তরাঁ। এই ঘটনায় এতটাই ক্ষুব্ধ হন আলি, যে তাঁর পদক নদীতে ভাসিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: IPL 2023 | কলকাতা টিভি’র বিচারে আইপিএলের সেরা একাদশে কোন কোন ক্রিকেটার? দেখে নিন
যদিও এই ঘটনার সপক্ষে কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। তবে আলির কোচ বুন্ডিনি ব্রাউন এবং নামী লেখক-পরিচালক হাওয়ার্ড বিংহ্যাম অবশ্য এই তথ্যের হয়েই সায় দিয়েছিলেন। সর্বকালের সেরা মুষ্টিযোদ্ধার জীবনীমূলক বইতেও এই ঘটনার উল্লেখ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২৮ মে ছিল এক অদ্ভুত দিন, একদিকে সাধুসন্তদের নিয়ে রাজদণ্ড হাতে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। অন্যদিকে রাজধানীর রাস্তায় টেনে-হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হচ্ছে সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik) বিনেশ ফোগটের (Vinesh Phogat) মতো অ্যাথলিটদের। বিশ্বের দরবারে ভারতের সম্মান বাড়ানো কুস্তিগিরদের সঙ্গে অমানুষিক আচরণ করল দিল্লি অমিত শাহের (Amit Shah) পুলিশ। প্রকৃত প্রস্তাবেই দেশের জন্য ২৮ মে ছিল ‘কালা দিবস’। সেদিনের ঘটনা নিয়ে এবার মুখ খুললেন সাক্ষী, টুইটারে সেদিনের সমস্ত ঘটনা ব্যাখ্যা করলেন। তুলে ধরলেন কিছু সঙ্গত প্রশ্নও।
এই সব পদক আমরা গঙ্গায় ভাসিয়ে দিতে চলেছি, কারণ তিনি মা গঙ্গা। যতটা পবিত্র আমরা গঙ্গাকে মনে করি ততটা পবিত্রতার সঙ্গেই পরিশ্রম করে এই পদক পেয়েছিলাম। এই পদক সাড়া দেশের কাছেই পবিত্র এবং পবিত্র পদককে রাখার সঠিক জায়গা পবিত্র মা গঙ্গাই হতে পারে। আমাদের মুখোশ বানিয়ে ফায়দা তোলার পর আমাদের নির্যাতনকারীর পাশে দাঁড়িয়ে পড়া সিস্টেম পদক রাখার জায়গা হতে পারে না।